অব্যক্ত অনুভব

চমন আফরোজ চৌধুরী

নিস্তব্ধ রাত, দূরে শিয়ালের ডাক শুনা যাচ্ছে। আস্তে আস্তে স্লিপিং বেড থেকে বের হয়ে ট্যান্টটার ভিতর থেকে বের হয় ডোরা। হাতে করে টর্চ লাইট নিয়ে আসতে ভুল করেনি। ওর ট্যান্ট আর ভিতর গভীর ঘুমে জুলিয়া। ওদের ট্যান্টপাশে দু টো ট্যান্ট। একটা অপূর্ব আর জাহেদ ওর হবু বর। অন্যটাতে ওর বাবা আর জহির uncel জাহেদ আর বাবা। প্রতি বছর উনারা ফিশিং এ আছেন সাথে মাঝে মাঝে ডোরা আসে। আর মাত্র দু সপ্তাহ পর ওর বিয়ে। মা আর আন্টি মানে জাহেদের মা চাননি ডোরা যাক এ সময়, বাবা আর আঙ্কল পাত্তা দেননি সেসব। ডোরা একটু ভেবে নিয়ে পা বাড়ায় সামনের দিকে, গাছগাছালির ভিতর দিয়ে সরু হাঁটার রাস্তা সোজা চলে গেছে লেকের পারে। লেকে কয়েক তা ঘাট আছে আর তাতে বোট আছে বাধা। ডোরা তারা তাড়ি পা চালায় .কিছু দূর যাবার পর ডোরা অনুভব করে কেউ তাকে অনুসরণ করছে, কি সেটা বুজতে পারে না, ভয়ের একটা ঠান্ডা স্রোত ওর শরীলে বয়ে যায়। পর মুহূর্তে ভয় কাটিয়ে ভাবে শিয়াল বা বন বিড়াল হবে হয়তো। কিন্তু আবার সে হাঁটার গতি বাড়িয়ে দেয় এবং বুজতে পারে তাকে যে অনুসরণ করছে তার গতি ও বাড়ছে। এবার ডোরা কিছুটা আতংকিত হয় এবং তাড়াহুড়া করে হাটতে গিয়ে রাস্তার পাশে কাটা গর্তের ভিতর পরে যাচ্ছিলো টিক তখন পিছন থেকে একটা বলিষ্ট হাত তাকে নিজের দিয়ে টেনে নেয়। ভয়ে ডোরা দুচোখ বন্ধ করে। ডোরা অনুভব করে কারো গরম শরীল কারো দু হাতের ভিতর সে আছে। কারোর হার্টের স্পন্দন সে অনুভব করে, আস্তে আস্তে চোখ খুলে ডোরা। দেখে অপূর্বর দু হাতের ভিতর সে পরে গেলে কি হতো? আর এত রাতে কই যাও অপূর্বর কথায় ওর হুশ ফিরে। নিজেকে অপূর্বর বন্ধন থেকে মুক্ত করার বৃথা চেষ্টা করে ডোরা, অপূর্ব তাকে শক্ত করে ধরে আছে, মনে মনে ডোরা এই বাঁধন থেকে মুক্ত হতে চায় না, তবু মুখে বলে আমায় না ছাড়লে কেমন করে বলি। ডোরার কথায় অপূর্ব তার হাত শিতিলকরে বাঁধন মুক্ত করে, নিজেকে ঠিক করে নিয়ে ডোরা বলে বোট নিয়ে লেকের মধ্যে গিয়ে পূর্ণিমা দেখবো তাই পাড়ের দিকে যাচ্ছিলাম। ডোরার কথায় হো হো করে জোরে হেসে উঠে অপূর্ব বলে তাই বুজি টর্চ লাইট নিয়ে এসেছো! তাড়াতাড়ি ওর মুখে হাত দেয় ডোরা বলে আস্তে। ডোরা এই বুজি তুমার সাহস? এত ভীতু কেন তুমি ডোরাকে বলে অপূর্ব। তুমি নিজে কি নিজে তো একটা কাপুরুষ, কথাটা শুনামাত্র এক ঝটকায় ডোরাকে বুকের ভিতর নিয়ে পারলে পিষে ফেলে অপূর্ব, ডোরার কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে তুমি জানো আমি তা নই, আস্তে আস্তে ওর মুখ টা ডোরার মুখের কাছে আসে। ডোরা অপূর্বর উপ্তপ্ত শ্বাস অনুভব করছিলো হঠাৎ অপূর্ব বলে চলো বলে ডোরার হাত ধরে ওকে টানতে টানতে নিয়ে যায় লেকের পাড়ের দিকে যেখানে বোট বাধা আছে। নিজে বোট এ উঠে ডোরাকে তুলে সে বোটের রশি খুলে নেয় পা প্যাডেল দিয়ে বোট চালিয়ে লেকের মাঝামাঝি নিয়ে যায়। দুজনের মুখে কোনো কথা নেই, পূর্ণিমার কারণে লেকের পানি চিকচিক করছিলো এবার ডোরা বলে, অপূর্ব তোমার কি এতটুকু খারাপ লাগছে না আমি যে জাহেদের হয়ে যাচ্ছি? ওর চোখ থেকে চোখ সরিয়ে অপূর্ব বলে আর কথা বোলো না শুধু মনে রেখো জাহেদ আমার ভাই, আমার সব কিছু, ওর কথা শেষ হবার সাথে সাথে ওকে হতভম্ব করে দিয়ে ডোরা পানিতে ঝাপিয়ে পরে, কাল বিলম্ব না করে সে পানিতে ঝাফ দেয়। একটু পর দুজনে পানিতে ভেসে উঠে এবং ডোরাকে বোট এ তুলতে সাহাষ্য করে, বোটে উঠে প্রথমে সে ডোরাকে একটা জোরে চড় মারে তার পর পাগলের মতো ডোরাকে জড়িয়ে ধরে। কান্নায় ভেঙে পরে ডোরা, ডোরাকে কাঁদতে দেয় অপূর্ব। লেকের পানিতে বোট তা ভাসতে থাকে ও দিকে পাড় থেকে সব দেখে জাহেদ হাতে তার ডোরার ডাইরী আর মুখে মৃদু হাসি তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে জুলিয়া ডোরার সুখ দুঃখের সাথী ওর প্রিয় বান্ধবি।

শেয়ার করুন