স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে দেশে রেখে ভারতে পাড়ি জমালেন স্বামী

ছয়ফুল আলম সাইফুল:: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনে ভ্রমণ কর গ্রহনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় ও শুধুমাত্র শিশু সন্তানের কর না দেওয়ায় স্ত্রী-সন্তানকে রেখে ভারতে গেলেন স্বামী। গত শুক্রবার ১৮ মে বিকালে চাতলাপুর চেকপোষ্টে এ ঘটনাটি ঘটে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার ভারতে গমনকারী যাত্রীরা আকস্মিকভাবে চরম ভোগান্তির শিকার হন। শনিবার চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন ও ইমিগ্রেশন কেন্দ্র এলাকা ঘুরে এ চিত্র পাওয়া যায়। শনিবার ১৯ মে দুপুরে দুর্ভোগের শিকার ভারতীয় ভিসা নিয়ে ভ্রমণকারী একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা লিপি পাল জানান, তিনিসহ স্বামী শিক্ষক পিন্টু পাল ও ৪ বছর বয়সী শিশু সন্তান গোবিন্দ পালের ভারতীয় ভিসা গ্রহণ করেন। তারা এক অসুস্থ্য আত্মীয়কে দেখতে শুক্রবার বিকালে চাতলাপুর চেকপোষ্ট দিয়ে ভারতের উত্তর ত্রিপুরার কৈলাসহরে যাচ্ছিলেন। কমলগঞ্জের শমশেরনগর শাখা সোনালী ব্যাংক থেকে স্বামী-স্ত্রীর ভ্রমণ কর পরিশোধ করে রসিদও গ্রহন করেন। তবে শিশুটি ৪ বছরের থাকায় তাদের ধারনা ছিল এ শিশুর কর দিতে হবে না। তাই তারা তার কর পরিশোধ করেননি। শুক্রবার বিকালে চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনে তাদের ভিসা চেকিং ও ইমিগ্রেশন কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভারতে প্রবেশের আগে চেক পয়েন্টে বিজিবির সদস্যরা পাসপোর্ট দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিপিবদ্ধ করেন। এসময় শিশু সন্তানের ভ্রমণ করের জন্য তাকে যেতে আপত্তি জানায় বিজিবি সদস্যরা। লিপি পাল আরও জানান, প্রয়োজনে দেশে ফিরার সময় ভ্রমণ কর পরিশোধ করবেন। এর পরও শিশু গোবিন্দ পালকে যেতে দেয়নি বিজিবি সদস্যরা। অবশেষে স্বামী শিক্ষক পিন্টু পাল স্ত্রী ও সন্তান রেখে ভারতে গেলেন। শিক্ষিকা লিপি পাল আরও জানান, পরে বাধ্য হয়ে তিনি চেকপোষ্ট থেকে কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরে বাসায় ফিরে এসেছেন। রোববার (২০/০৫/২০১৮) শিশু গোবিন্দের ভ্রমণ কর দিয়ে তিনি ভারতে যাবেন। চাতলাপুর ইমিগ্রেশন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই জামাল হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ণরুপে নির্ভর করে শুল্ক বিভাগের উপর। বৈধ ভিসা আছে কিনা তা তদারকি করে তথ্য সংগ্রহ করে ইমিগ্রেশনের আইনানুগ কাজ করেন মাত্র। তিনি আরও বলেন, মানবিক কারণে বিজিবি সদস্যরা শিশু গোবিন্দ পালকে ভ্রমনের সুযোগ দিতে পারত। চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার এ দুর্ভোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনে ভ্রমণ কর গ্রহনের বুথ না থাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। তিনিও মনে করেন, বাবা ও মা-র ভ্রমন কর পরিশোধ ছিল। পরে শিশু গোবিন্দ পালের ভ্রমণ কর দিয়ে রসিদ জমা দিতে পারতেন। এখানে মানবিক কারণে শুক্রবার বাবার সাথে মাকে নিয়ে শিশুটি ভ্রমণ করতে পারত। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার ব্যাংকের সহায়তায় ভ্রমণ কর গ্রহন করার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে শুল্ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করা হয়েছে।

শেয়ার করুন