নবীগঞ্জ প্রতিনিধি॥ হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় একটি বাঁধ যেমন ছিলো, তেমনি রইলো, কোন উন্নয়ন হলোনা, উন্নয়নের নামে আত্মসাত জনগন মানবেনা। এই আবেগপুর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল। স্থানীয় ইউপি সদ্য বাঁধ নির্মানের পিআইসি সভাপতি হওয়ায় তার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার যোগসাজসে বাঁধ নির্মানের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি প্রশাসনের উর্ধ্বতনের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে ও তাদের ম্যানেজ করে লুটপাট করা হয়েছে বাঁধের টাকা। দাঁয়সারা কাজ ও বাঁধ মেরামতে দুর্নীতির কারণে একদিকে কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকার লোকজনদের গাফিলতি না ফিফটি-ফিফটি দুর্নীতি রয়েছে তাহা নিয়ে ও রয়েছে সন্দেহ। সুত্রে প্রকাশ, ওই উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের পারকুল ও বনগাঁও গ্রামের উত্তর পাশে বয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী কুশিয়ারা নদী। ওই নদীর তীরবর্তী পাহাড়পুর নামক স্থানে কয়েক যুগ থেকে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী মাঠি নদীতে ধ্বসে শাখা নদীর নমুনা ধরে। ইতিপুর্বে কয়েক বার ওই বাঁধ ভেঁঙ্গে নবীগঞ্জ, বানিয়াচং, আজমিরিগঞ্জ উপজেলাসহ ও হবিগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের ফলানো ফসল তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একমাত্র ওই বাঁধ কাল হয়ে দাড়িয়েছে নবীগঞ্জ উপজেলা তথা হবিগঞ্জ বাসীর জন্য। কারণ বিগত দিনে বাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করে কৃষকদের ঘর-বাড়ি তলিয়ে গিয়ে অনেক ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু স্থায়ীভাবে বাঁধ গড়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। সম্প্রতি সময়ে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ওই বাঁধ মেরামত ও সংস্কারের জন্য ১০ লক্ষ ৭৮ হাজার ১ শত ৯৪ টাকা বরাদ্ধ হয়। কাজের দায়িত্ব পান স্থানীয় ইউপি সদস্য পারকুল গ্রামের মৃত সুলেমান উল্লার পুত্র হাজী মোঃ দুলাল মিয়া। কাজটি চলতি বছরের ২৫ই জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রয়ারির মধ্যে কাজ করার তাগিদ ছিল। অভিযোগ উঠেছিল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করা হয়নি। মেয়াদ পেরিয়ে যাবার পর কাজের হিসেব নিকেশ দাখিল করে চল-ছাতুরি করে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে এক ভয়াবহ দৃশ্য। কাজের পিআইসি সভাপতি ইউপি সদস্য দুৃলাল মিয়া চল-ছাতুরি করে বাঁধের সংলগ্ন স্থান থেকে কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে সামান্য মাঠি ভরাট করে পুরো টাকাই তার পকেটস্থ করেছেন। এ কারণে যেভাবে ছিল সেভাবেই রয়ে গেল বাঁধের চিত্র। গত এক সপ্তাহের বর্ষনের ফলে পলি মাটি সড়ে গিয়ে পুর্বের ন্যায় হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাজের আদেশে সাতটি শর্তাবলি ছিল, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল- কাজের সাইটে প্রকল্পের নাম, দৈর্ঘ্য, পরিমান, বরাদ্ধ, কমিটির সভাপতির নামসহ ৫ ফুট ও ৩ ফুট বিল বোর্ড স্থাপন করে রাখা। স্থানীয়দের অভিযোগ, দুর্নীতি প্রকাশ পাবে বলে এর জন্য তাহা রাখা হয়নি। সচেতন মহল মনে করেন সেই শর্তাবলির কোন একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। এর জন্য সরকারের টাকার কোন সফলতা হলো না। এ বছর বৈরি আবহাওয়া ব্যতিক্রম দেখা গেছে, তাই বন্যা হলে সর্ব প্রথম ওই স্থানই ভেঁঙ্গে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ যে মাটি দেয়া হয়েছে কয়েক দিনের বর্ষনের কারণে মাটি ছিটকে পড়ে পুর্বের ন্যায় হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য দুলাল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কাজ সঠিক হয়েছে এখানে কোন অনিয়ম হয়নি। যেহেতু তিনি ওই এলাকার এবং ইউপি সদস্য যত দিন বাধঁ ভাঙবে তত দিন সংস্কার করবে বলে জানান। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম বাবুল জানান, এটা ফসল রক্ষা বাধঁ। আগাম বন্যায় যাতে ফসলের কোন ক্ষতি না হয় সে জন্য এই বাধঁ নির্মান করা হয়েছে। তবে প্রজেক্টে কোন ধরণের দূনীর্তি হয়নি। তিনি আরো বলেন, এই নদীর রক্ষার জন্য নয়, শুধু ফসল রক্ষার জন্য নির্মান করা হয়েছ। এদিকে, সচেতন মহল মনে করেন বাঁধ নির্মানে যেভাবে দাঁয়সারা কাজ করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিবিড় পর্যবেক্ষন ও গুরুত্ব সহকারে যাছাই-বাছাই করলে বাঁধ সংস্কারের দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ পাবে।