সন্তান ও নিজের জীবনের নিরাপত্তা চান অসহায় স্বামী ॥ নবীগঞ্জে স্বামীকে প্রাণনাশের চেষ্টা করছে পরকিয়াসক্ত স্ত্রী

স্বামীকে প্রাণনাশের চেষ্টা করছে পরকিয়াসক্ত স্ত্রী। এ অবস্থায় সন্তান ও নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন অসহায় এক স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে নবীগঞ্জ  উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের সাতাইহাল গ্রামে। মামলা বিবরণ থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পরকিয়া ও অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিন হ্যাপির সাথে মনোমালিন্য চলে আসছে উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের ভরগাও গ্রামের আব্দুল কাইয়ুমের পুত্র গ্রীল মিস্ত্রি মোঃ খোকন মিয়ার। এরই জের ধরে গত ৭ মে রাতে স্বামী খোকন মিয়াকে নির্জন স্থানে ডেকে নেয় স্ত্রী হ্যাপি। এরপর সেখানে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা হ্যাপি ও তার লোকজন খোকন মিয়াকে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে হাত-পা বেধে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ সময় আশ-পাশের লোকজন বিষয়টি আচঁ করতে পেরে এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা খোকন মিয়ার সাথে থাকা নগদ টাকাসহ মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনার পর মোঃ খোকন মিয়া বাদী হয়ে একই উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের সাতাইহাল গ্রামের মনর উদ্দিনের পুত্র জামাল উদ্দিন, তার পুত্র ছানি মিয়া, সাহাব উদ্দিনের পুত্র সোহাগ উদ্দিন ও কন্যা লিপি বেগম, আরজু মিয়ার পুত্র সোহেল মিয়া, ফরাজ উদ্দিনের পুত্র শামীম আহমেদ এবং খোকন মিয়ার স্ত্রী (মামলার বাদী) সাবিনা ইয়াছমিন হ্যাপিকে আসামী করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, মোঃ খোকন মিয়া জন্ম সূত্রে বি-বাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানার বাসিন্দা। প্রায় ২৫ বছর পূর্বে তিনি নবীগঞ্জ উপজেলার ফুলতলী বাজারে এসে গ্রীল মিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। গত প্রায় ১০ বছর পূর্বে একই উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের মোঃ সাহাব উদ্দিনের কন্যা সাবিনা ইয়াছমিন হ্যাপিকে বিয়ে করেন। এরপর তাদের ঘরে আয়েশা আক্তার মায়িশা (৭) ও সাকিবুন নাহার ইফতি (৫) নামে দুই কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এদের মধ্যে বড় কন্যা মায়িশা শারীরিক প্রতিবন্ধি। বিয়ের পর থেকে অসচ্চল শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের যাবতীয় বরণ-পোষনের দায়-দায়িত্ব পালন করে আসছেন খোকন মিয়া। সূত্র জানায়, প্রায় ৪ বছর পূর্বে খোকন মিয়ার শ্বাশুড়ি রুখসানা বেগম গৃহকর্তীর কাজ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের কাতারে যান। এরপর সেখানে তিনি প্রবাসী এক বাংলাদেশি যুবকের সাথে গোপনে হ্যাপির বিয়ের পাঁয়তারা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে মোবাইল ফোনে ওই যুবকের সাথে হ্যাপির পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি আচঁ করতে পেরে খোকন মিয়া এসব বিষয়ে স্ত্রী হ্যাপিকে বাধা দিলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। খোকন মিয়াকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় সে। খোকন তখন এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে বিষয়টি স্থানীয় মুরুব্বিরা আপোষে মিমাংসা করে দেন। কিন্তু পরবর্তীতে আবারও হ্যাপির পরকিয়া প্রেমের বিষয়টি চরম আকার ধারণ করে। হ্যাপি স্বামীর ঘর ছেড়ে সন্তানদের নিয়ে চলে যায় পিত্রালয়ে। এ অবস্থায় খোকন মিয়া আবারও স্থানীয় সালিশানদের দ্বারস্থ হলে তাদের সিদ্ধান্ত অমান্য করে হ্যাপি। উপায়ন্তর না দেখে স্ত্রী ও সন্তানদের ফিরে পেতে পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করেন খোকন। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। এ বিষয়ে খোকন মিয়া জানান, তার স্ত্রী হ্যাপি দুশ্চরিত্রা। সে দীর্ঘদিন ধরে পরকিয়ায় আসক্ত। এতে বাধা দেয়ার কারণে তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে প্রাণনাশের চেষ্টা করেছে স্ত্রী হ্যাপি ও তার লোকজন। কিন্তু স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় তিনি অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। খোকন আরও জানান, নিজ এলাকা ও আত্মীয়-স্বজন ছেড়ে হ্যাপিকে ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু বিয়ের পর থেকে তার জীবন বিষিয়ে তুলেছে হ্যাপি। দীর্ঘদিন হ্যাপির পরিবারের বরণ-পোষনের দায়িত্ব পালন করে আজ তিনি নিঃশ্ব। শুধু তাই নয়, ধার-কর্জ হিসেবে নেয়া ৩ লক্ষ টাকাও আত্মসাৎ করেছে হ্যাপির পরিবার।  বর্তমানে তিনি উপজেলার ভরগাও এলাকায় গ্রীল মিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এ এলাকায় তার কোন আত্মীয়-স্বজন না থাকায় তিনি এখন অসহায়। চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন তিনি। যেকোন সময় তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলতে পারে হ্যাপি ও তার লোকজন। তার সন্তানদের জীবনও এখন অনিশ্চিত। হ্যাপি এতটাই বেপরোয়া যে, সে কোন সালিশী সিদ্ধান্তেরও তোয়াক্কা করেনা। এ অবস্থায় এলাকার সচেতন মহলসহ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সন্তান ও নিজের জীবনের নিরাপত্তার জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন খোকন মিয়া

সুত্রঃ habiganj-samachar.co

 

শেয়ার করুন