চার দেশকে নিয়ে মিয়ানমার সমস্যার সমাধান করতে চাই: প্রধানমন্ত্রী

 

সাইফুল ইসলাম.

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশসহ যে পাঁচটি রাষ্ট্রের (চীন, ভারত, থাইল্যান্ড, লাওস) সীমান্ত রয়েছে, সেইসব দেশের সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী (এএইচ মাহমুদ আলী) আলোচনা করে যাচ্ছেন। তাদের নিয়েই আমরা রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে চাই।’ বুধবার (২ মে) গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ায় তার সফরের বিষয়ে জানাতে এর আয়োজন করা হয়।
রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারে ঘরবাড়ি তৈরি করে দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে ভারত, চীন, জাপান, রাশিয়া তুরস্ক। এ তথ্য জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ দিচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এই মানুষগুলোকে আমাদের আশ্রয় দেওয়ার ভূমিকার সুবাদে সবাই তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তারা যেন নিরাপদে ফিরতে পারে সেজন্য সবাই মিয়ানমারের ওপর চাপ দিচ্ছে।’

শেখ হাসিনার ভাষ্য, ‘রোহিঙ্গা সংকটে ভারত, রাশিয়া ও চীনের নিজস্ব সিদ্ধান্ত আছে। নিরাপত্তা পরিষদেরও একটি ভূমিকা রয়েছে। এর বাইরেও তারা সহায়তা দিচ্ছে। নিরাপত্তা পরিষদের যেসব সদস্য বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন তাদের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলেছি। রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে তারা প্রত্যেকে সহানুভূতিশীল। তাদেরও চাওয়া, রোহিঙ্গারা যেন রাখাইনে নিরাপদে ফিরে যেতে পারে। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য বা অস্থায়ী সদস্যের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখাছি। এই সংকট থেকে উত্তরণে তাদের সম্পৃক্ততা ও সমর্থন চাই আমরা।’

এদিকে গত ২৮ থেকে ৩০ এপ্রিল ঢাকায় সফর করেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশ কী আশা করে সেই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে একটি বিবরণী দেওয়া হয়েছে। এতে সামগ্রিক অবস্থা সংক্ষেপে বর্ণনা করে বাংলাদেশের কয়েকটি প্রত্যাশার কথা তুলে ধরা হয়।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিতকরণে সুষ্পষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে, নিরাপত্তা পরিষদের কাছে শুরুতে এমন প্রত্যাশা করি। আমরা বলেছি, নিরাপত্তা পরিষদ যেন কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট অবিলম্বে ও শর্তহীনভাবে বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ নেয়। এছাড়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রেজ্যুলেশন আনা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের ওপর জোর দিয়েছি। মিয়ানমারের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও তাদের সঙ্গে করা চুক্তিতে মানবাধিকার বিষয়গুলোকে আমরা সংযুক্ত করতে সমর্থ হয়েছি।’

এদিকে মিয়ানমার সফর শেষে মঙ্গলবার (১ মে) নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের স্থায়ী প্রতিনিধি কারেন পিয়ার্স বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় অবশ্যই একটি সুষ্ঠু তদন্ত হতে হবে। এটি তৈরি করা হবে আমাদের প্রথম পদক্ষেপ। তবে আমাদের কোনও তদন্ত ব্যবস্থা নেই। এটি আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল কোর্ট অথবা মিয়ানমার সরকার করতে পারে।’

প্রকাশিত ২মে ২০১৮,সময় ৮.২৫

শেয়ার করুন