৩ মে বিশ্ব মুক্ত-গণমাধ্যম দিবস

আব্দুল বাছিত বাচ্চু::

বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের কন্ঠ চেপে ধরার প্রেক্ষাপটে ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এই দিবস ঘোষণা করে।এরপর থেকে গণমাধ্যম কর্মীরা দিবসটি পালন করছে। আমাদের দেশেও প্রতিবছর নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে এই দিবস পালিত হয়।
বাংলাদেশে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গণমাধ্যমের ভূমিকা স্বীকার্য। ১৯৯০ সালের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ফিরে যাওয়াতো গণমাধ্যমেরই অবদান। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের দেশের গণমাধ্যম নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হচ্ছে।প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছেন গণমাধ্যম কর্মীরা।
স্বাধীন বাংলাদেশে গণমাধ্যমের উপর প্রথম আঘাত আসে ১৯৭৫ সালে। তখন দৈনিক সাপ্তাহিক সব মিলে ৪ টি পত্রিকা রেখে সবকটি গণমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্বৈরাচার এরশাদ সরকারও এভাবে কলমের খোচায় অনেক পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করেছে।
এখনো আমাদের দেশের গণমাধ্যম নানা প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা করছে।এই ক’বছরে দেশে বেশকটি সংবাদপত্রের প্রকাশনা বন্ধ হয়েছে। সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বেশকটি টিভি চ্যানেলের। এরমধ্য কয়েকটি মালিকরাই বন্ধ করে দেন। এতে অসংখ্য গণমাধ্যমকর্মী বেকার হয়ে পড়েছেন। তাদের অনেকের সংসারজীবন বিষিয়ে ঊঠছে।
সরকার সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ১৮ অনুমোদন করেছেন। এই আইনের ৫৭ ধারা মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য হুমকি বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। বাংলাদেশে গণমাধ্যম জগতে এই প্রতিকূল পরিবেশের জন্য এককভাবে শুধু সরকারকে দায়ী করলে ভুল হবে। এখানে একশ্রনীর মালিকপক্ষ গণমাধ্যম জগতকে বিষয়ে তুলছেন।নিজেদের ব্যবসায়ীক নিরাপত্তার হাতিয়ার হিসেবে গণমাধ্যমকে ব্যবসার করতেই দেশের নামি কোম্পানিগুলো গণমাধ্যম জগতে আসছে। এখানে দেশের কল্যাণের চেয়ে তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থটাই বেশি।ফলে এসব গণমাধ্যমে কর্মরত কর্মীরা মালিকদের খেয়ালখুশিমতো চলতে হয়।আবার যখন-তখন এই শ্রেনীর মালিকরা কর্মী ছাটাইসহ নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। এমনকি যেকোনো সময় প্রকাশনা/ সম্প্রচার বন্ধ করতে কুন্ঠাবোধ করেন না।কিন্তু এসব গণমাধ্যমের বেকার কর্মীরা তাদের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে পারে না। এর জন্য শাসকগোষ্ঠী / মালিকরা যতটা দায়ী তারচেয়ে বেশী দায়ী বিভাজন।
বিভাজিত সাংবাদিক ইউনিয়ন আর সাংবাদিকদের দলবাজি বন্ধ না হলে মুক্ত গণমাধ্যমের প্রত্যাশা অবান্তর ও সুদূর পরাহত।

শেয়ার করুন