কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ ভোর রাতের মাত্র ৩০ মিনিট স্থায়ী কালবৈশাখী ঝড়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাদবপুর ইউনিয়নের ন্যাশনাল টি কোম্পানীর মালিকানাধীন মদনমোহনপুর চা বাগান লন্ডভ- হয়ে পড়ে। ঝড়ে চা শ্রমিকদের বসতি ঘর বিধ্বস্ত হওয়াসহ সেগুন বাগানের শতাধিক গাছ উপড়ে পড়ে কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়।
মঙ্গলবার ৮ মে তিন দিন ধরে বিদ্যুৎবিহিন থাকায় চা উৎপাদন বন্ধ। ১০ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন ঘুরে ঝড়ের তান্ডবের চিত্র পাওয়া যায়।
মদনমোহনপুর চা বাগানের ৭৪টি শ্রমিক ঘরেরমাটির দেয়াল ভেঙ্গে পড়ে। এসব ঘরের উপরের চাল উড়ে গেছে। এ চা বাগানের কাটাবিল শ্রমিক বস্তির নারী শ্রমিক রাম দুলালী লোহার, অবলা লোহারের ঘরের চালা সম্পূর্ণরুপে উড়ে গেছে। রাম দুলালী লোহার ও অবলা লোহার জানান, ঘটনার দুই দিন পরও কোন জনপ্রতিনিধি তাদরে খোঁজ নেননি। ঘটনার পর থেকে তারা খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টিতে ভিজে বসবাস করছেন। এভাবে এ বাগানে চা শ্রমকি বস্তির ৭৪টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। বুধবার সকালে চা বাগান কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত চা শ্রমিক ঘর সমূহে নতুন করে ঢেউ টিন বিতরণ করেন।
এ চা বাগানের চল্লিশটি সেকশন (প্লান্টেশন এলাকা)-এর ছায়াদানকারী বৃক্ষ, চা গাছসহ একটি সেগুন বাগানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেগুন বাগানে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ গাছ মাটিশুদ্ধ গুড়া থেকে উপড়ে পড়েছে। আবার অনেক গাছ মাঝখানে ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে পড়েছে। ঝড়ের পর এক ধরনের সুযোগ সন্ধানীরা ভেঙ্গে পড়া ছায়দানকারী বৃক্ষ লুটপাঠ করে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় অনেক স্থানে বৈদ্যুতিক খুটি ভেঙ্গে ও তার ছিড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটলে গত তিন দিন ধরে এ চা বাগান বিদ্যুৎ বিহিন রয়েছে। ফলে চা বাগানের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ফলে উত্তোলিত চা পাতা বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন চা বাগান ব্যবস্থাপক।
মদনমোহনপুর চা বাগান ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন মঙ্গলবার ভোর রাতের কালবৈশাখী ঝড়ে এ চা বাগানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শুধুমাত্র সেগুন বাগানেরই কোটি টাকার ক্ষতি হবে। ক্ষয়ক্ষতির তথ্য ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল টি কোম্পানীর হেড অফিস ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গত তিন দিন ধওে বিদ্যুৎ না থাকায় উৎপাদন ব্যহত ও উত্তোরিত চা পাতা বিনষ্টের আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, যত দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হবে ক্ষতির পরিমাণ ততইে কমে যাবে। তিনি আরও বলেন এ ভ্যালির(অঞ্চলের) এনটিসির মাধবপুর,পাত্রখোলা, কুরমা ও চাম্পরায় চা বাগানেও ঝড়ে ক্ষতি হয়েছে।