কুলাউড়ায় সোর্সের কাজ ছেড়ে দেয়ায় মাদক দিয়ে গ্রেফতার করেছে বিজিবি !

এম. এ. কাইয়ুম

বিজিবি’র সোর্সের কাজ ছেড়ে দেয়ার কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের ভারতীয় সীমন্তবর্তী ট্রাট্টিউলী গ্রামের মো.আব্দুছ ছালামকে মাদক দিয়ে গ্রেফতার করেছে বিজিবি !
তারাবির নামাজ শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে বিজিবি’র সদস্যরা তাকে আটক করে মদসহ গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। বিজিবি সদস্যরা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ঘটনাটি সাজিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।
গত ২৮ মে সোমবার রাতে তারাবির নামাজ শেষে বাড়ী যাওয়ার পথে বিজিবি মুরইছড়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে আটক করে ।
আব্দুছ ছালামের স্ত্রী নুরজাহান বেগম ও পুত্র মো. আজাদ মিয়া বলেন, আব্দুছ ছালাম এক সময় বিজিবি’র সোর্সের কাজ করতেন। ৬-৭ বছর আগে এ পেশা ছেড়ে দেন তিনি।

বর্তমানে মৌলভীবাজার আদালতের এক আইনজীবির মুহুরীর কাজ করছেন। সোর্সের পেশা ছেড়ে দেয়াই কাল হলো তার। গত ২৮ মে সোমবার রাতে তারাবির নামাজ শেষে বাড়ী যাওয়ার পথে বিজিবি মুরইছড়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ওই রাতেই ১২ বোতল ভারতীয় মদসহ তাকে আটক দেখিয়ে কুলাউড়া থানায় হস্তান্তর করে।

এঘটনায় প্রতিকার চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ ৪৬ বিজির শ্রীমঙ্গল সেক্টর কামন্ডার বরাবরে নিয়ে গেলে শ্রীমঙ্গল বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা তা প্রত্যাখান করেন বলেও জানান তারা।

এদিকে আটকের পর বিজিবি মুরইছড়া ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার জালাল সরদার বাদি হয়ে কুলাউড়া থানায় একটি মামলা (নং-৪৪/১৮) দায়ের করেন। পরদিন গত মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আব্দুস ছালামের ছেলে মো. আজাদ জানায়, ‘আমার বাবা দেশের স্বার্থে সোর্স হয়ে বিজিবিকে সহযোগিতা করতেন। কয়েক বছর আগে তা ছেড়ে দিয়ে মৌলভীবাজার কোর্ট মুহুরীর কাজ করছেন। কিন্তু বিজিবি সেটা মেনে নিতে পারেনি। পরিকল্পনা করে আমার বাবাকে মদ দিয়ে ফাঁসিয়েছে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছালামের স্ত্রী সুরজাহান বেগম বলেন ‘আমার স্বামী কোনদিনই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলো না। বিজিবি সদস্যরা আমার স্বামীকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়েছে’।

ইউপি সদস্য মকছন্দ আলী জানান- ‘ছালাম স্থানীয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। বিজিবি প্লান (পরিকল্পনা) করে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়েছে’। এক প্রশ্নের উত্তরে এ ইউপি সদস্য বলেন-‘সালাম ছেলে হিসেবে ভালো, মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল না’।
এ প্রসঙ্গে বিজিবি মুরইছড়া ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার মো. জালাল সরদারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।’
৪৬ বিজিবি শ্রীমঙ্গল কমান্ডার লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমনে বলেন- ‘ছালাম মৌলভীবাজার কোর্টে মুহুরীর কাজ করলেও আন্ডারগ্রাউন্ডে সে মাদকের সাথে জড়িত। এর আগে বিজিবির সোর্স হিসেবে কাজ করতো।’

সা/৪জুন ২০১৮

শেয়ার করুন