স্টাফ রিপোর্টার॥
মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ২০টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় ১২ জুন মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কামারচাক ইউনিয়নের ভোলানগর ,তারাপাশা সহ বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙ্গনে পানিবন্দি হয়ে পরেছেন প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। অব্যাহত বারিবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মনু নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে আরো ১৫/২০ টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকা করছেন দুর্গত এলাকার লোকজন। বন্যা কবলিত এলাকা সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মনু নদীর উজানে ভারতের ধর্মনগর, কৈলাশহর সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের রাজনগরে মনু নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের ভোলানগর স্থানে গত ১২ জুন মঙ্গবার দিবাগত ভোররাতে মনু নদী প্রতিরক্ষা বাঁেধ ভাংগনের সৃষ্টি হলে রাজনগর উপজেলার ভোলানগর, কোনাগাঁও, দস্তিদারেরচক, ইসলামপুর জালালপুর, তেঘরি, করাইয়া, মৌলভীরচক, আদমপুর, কামারচাক, খাসপ্রেমনগর, বিশালী, মিঠিপুর সহ প্রায় ২০টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়াও পানি বৃদ্ধির কারণে নতুন করে আরো ১৫/২০ টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকা করছেন দুর্গত এলাকার লোকজন। কামারচাক ইউনিয়নের যে সমস্থ গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হওয়ার অশকা করা হচ্ছে সেগুলো হলো- চাটিকোনাগাঁও, মুর্তিকোনা, মশাজান, প্রেমনগর, মেলাগড়, শান্তকুল, পঞ্চানন্দপুর, একাসন্তোষ, হাটিকরাইয়া, এবং টেংরা ইউনিয়নের হরিপাশা, আকুয়া, কোনাগাঁও, টগরপুর, ভাঙ্গারহাট ইত্যাদি। প্লাবিত এসব এলাকায় খাবার পানি, গোখাদ্য সহ নানান সমস্যা দেখা দিয়েছে। বাড়িঘর প্লাবিত হওয়ায় দুর্গত এলাকার লোকজন মনু প্রতিরক্ষা বাঁধের উচু জাগায় আবার অনেকে পার্শ্ববর্তী আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের প্রায় ১০টি স্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হলে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কে বারবার তা মেরামতের আবেদন জানালে পাউবো কর্তৃপক্ষ ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় কংক্রিটের ব্লগের পরিবর্তে বাঁশ ও মাঠি ভর্তি বালির বস্তা দিয়ে দায়সারা গোচের কাজ সম্পন্ন করলে ঐ একই স্থানে আবার ভাঙ্গন দেখা দেয়। এতে বিগত বছরের মত এবারও রাজনগরের কামারচাক ইউনিয়নের অর্ধলক্ষ মানুষকে দুর্গতি পোহাতে হচ্ছে। তাদের এই খামখেয়ালিপনার কারণে আজ প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবান্দ এবং এসব এলাকার গবাধিপশু ও আউস কৃষি ফসল চরম ক্ষতির সম্মুখিন। ভোলানগর গ্রামের মোঃ নিয়ামত উল্লাহ(৭৬) জানান, গত মঙ্গরবার দিবাগত ভোর রাতে ভোলানগর এলাকায় শাহ আলম তরফদারের বাড়ির উপর দিয়ে মনু প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙ্গনের সৃষ্ঠি হলে এলাকার লোকজন একত্রিত হয়ে বাঁশ ও মাটির বস্তা ফেলে ভাঁঙ্গন রোধের চেষ্টা করেও ভাঁঙ্গন ঠেকাতে পারেননি। ভোর রাতে সদ্য নির্মাণকৃত প্রায় ৫’শ ফুট দীর্ঘ বাঁধ ভেঙ্গে গেলে পানি প্রবল বেগে প্রবেশ করে কামারচাক ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামকে প্লাবিত করে। দুর্গত এলাকার সহ¯্রাধিক পরিবারের লোকজন বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি ও আশপাশের এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার পাউবো’র এস.ও মোঃ কিবরিয়া জানান, কামারচাক ইউনিয়নের ভোলানগর এলাকার মনুনদীর সংস্কারকৃত কাজ সম্পর্কে সিডিউল নাদেখে কিছু বলা যাবে না।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌসী আক্তার জানান, দুর্গত এলাকা পরিদর্শণ করেছি এবং দুর্গত মানুষের সাথে কথা বলেছি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে। দ্রুত তাদের যথাযত সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও দুর্গতদের স্বার্থে যা করার সব ব্যবস্থা করা হবে।