সাইফুল ইসলাম:
অব্যাহত বর্ষণ ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে কুলাউড়ায় বন্যার পানি ডুবে এক যুবক মারা গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন অনন্ত ৫জন।
নিহতরা হলেন, কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঠালকান্দি গ্রামের সত্তার মিয়া (৫৫) ও তার ছেলে করিম মিয়া (২৫) এবং একই উপজেলার শমসেরনগর ইউনিয়নের সিংরাউলী গ্রামের প্রতিবন্ধী কামাল মিয়া (৪০)।
এছাড়াও উপজেলার আলীনগর,শমশেরনগর এবং আদমপুর গ্রামের ৫ জন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত থেকে সত্তার মিয়া (৫৫) ও তার ছেলে করিম মিয়া (২৫) ও প্রতিবন্ধী কামাল মিয়া (৪০) নিখোঁজ ছিলো।
আজ শনিবার সকালের দিকে এলাকাবাসী সত্তার ও করিমকে ইসলামপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও মাদ্রাসার সামন থেকে এবং প্রতিবন্ধী কামালকে মুন্সিবাজার রোডের মরাজানের পাড় এলাকা থেকে মৃতবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
তাছাড়াও কুলাউড়া উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে ফয়জুল হক (২৪) এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১৬ জুন) বিকেলে কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের দক্ষিণ হিংগাজিয়া এলাকায় এঘটনা ঘটে। নিহত ফয়জুল হক একই এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে। কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে শুক্রবার রাতে রাজনগর উপজেলার মনু নদীর কদমহাটা (লংগুরপুল) এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। এতে জেলায় পানিবন্দি রয়েছে প্রায় শতাধিক গ্রামের দুই লক্ষ মানুষ।
অপরদিকে বন্যায় তলিয়ে যাওয়া এলাকায় আটকা পড়া মানুষ উদ্ধারে কুলাউড়া ও রাজনগরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন।
এব্যাপারে মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ বলেন,টিলাগাঁও ইউনিয়নে ঈদের নামাজ শেষে সেনাবাহিনীর সাথে সারাদিন কাজ করেছি। সঠিকভাবে ত্রাণ বিতরণ ও বন্যার পানিতে আটকে পড়া উদ্ধারে তারা কাজ করেছে। তাদের সাথে কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসন সহযোগিতা ছিলেন।’
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘শনিবার সন্ধ্যারাতে মনু নদীর মৌলভীবাজার শহরের চাঁদনীঘাটের কাছে বিপদসীমার ১৮০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।’
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, জেলার ৩টি উপজেলায় সেনাবাহিনী কাজ করছে। শনিবার দুপুরে দিকে মনু নদীর শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ রক্ষায় সেনাবাহিনী কাজ করেছে। এপর্যন্ত জেলায় ১৪৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও নগদ ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বন্যা আক্রান্ত এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী আরো বলেন, ভারতের উত্তর ত্রিপুরায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। যার ফলে পানি বাড়ছিল। ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কিছুটা কম আছে, আশা করি ২/১দিনের আরো কমে যাবে।’
মৌলভীবাজারে বন্যায় পৃথক স্থানে ৪ জনের মৃত্যু
শেয়ার করুন