বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভোট গ্রহন শুরু

  • সাইফুল ইসলাম
  • আজ রবিবার বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভোট গ্রহন শুরু হয়েছে। নির্বাচনে দেশের সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, চট্রগ্রাম ও রাঙ্গামাটি জেলার ২২৮টি চা বাগান ও ফাঁড়ি বাগানের মোট ৯৮ হাজার ৭৫২ জন চা শ্রমিক তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ শুরু হয়েছে।
  • ২৪ জুন রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে একযোগে ভোট গ্রহন শুরু হয়।
  • শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ মোবাশশেরুল ইসলাম  এতথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন,‘শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহন শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। এর আগের দিন (২৩জুন) নির্বাচনী মালামাল গ্রহন পূর্বক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কাজে নিয়োজিত বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ভোট কেন্দ্রে গমন করেন।’
  • বহুল প্রত্যাশিত বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নে এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় কমিটিতে তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বদ্বিতা করছেন। প্রার্থীরা ঘুম-হারাম করে ভোটারদের ঘরে ঘরে ভোট প্রার্থনা ও আর্শিবাদ চেয়েছেন। পোষ্টারে পোষ্টারে বাগানগুলো ভরে গেছে। প্রার্থীদের সমর্থনে কর্মীরা দল বেঁধে স্ব স্ব প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছেন।
  • বিশেষ করে কেন্দ্রীয় কমিটি পদে হবে হাডাহাড্ডি লড়াই। এ কমিটিতে রয়েছে তিনটি প্যানেল। একটি প্যানেলে সভাপতি পদে মাখন লাল কর্মকার ও সাধারণ সম্পাদক পদে রামভজন কৈরী ও অপর প্যানেলে সভাপতি পদে বিজয় বুনার্জি ও সাধারণ সম্পাদক পদে সীতারাম অমলিক, আরেকটি প্যানেল শিউধর্নী কুর্মী ও গীতা কানু  বাগানে প্রচারনা ব্যস্ত সময় পার করেছেন । নির্বাচনী প্রচারনায়  উৎসবের আমাজে ৭টি ভ্যালিতে (অঞ্চলে) দেশের ফাঁড়ি বাগানসহ ২২৮টি চা বাগান।
  • সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে মাখন লাল কর্মকার ও রাম ভজন কৈরীর নেতৃত্বে একটি পক্ষ ও চা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে সভাপতি বিজয় বুনার্জি ও সীতারাম অলমিক।
  • এছাড়া মহা সংগ্রাম কমিটি ব্যানারে শিউধনী কুর্মী ও গীতা কানুর নেতৃত্বে স্বস্ব সমর্থকরা চা বাগান ঘুরে নিজেদের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে সাধারন চা শ্রমিক ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছেন।
  • অপরদিকে বালিশিরা ভ্যালী সভাপতি হিসেবে প্রাণেশ গোয়ালা স¦তন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বদ্বিতা করছেন।
  • জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফুসকুড়িঁ চা বাগান, কালিঘাট চা বাগান , ভাড়াউড়া চা বাগান, উদনা চা বাগান, জাগছড়া চা বাগান ,কাকিয়া ছড়া চা বাগানসহ বেশ কয়েকটি চা বাগানের সাধারন শ্রমিকদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
  • ফিনলে টি কোম্পানির ভাড়াউড়া চা শ্রমিক চা শ্রমিক সুমা বাউরী ও লক্ষী নারায়ণ বলেন, অতীতে যেসব চা শ্রমিক নেতারা তাদের সুখে দু:খে পাশে ছিলেন তারা তাদেরকেই ভোট দেবেন।’
  • চা শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী জানান, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা পূর্ণ প্যানেলে জয়লাভে আশাবাদী।’
  • অপর দিকে, চা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ সভাপতি প্রার্থী বিজয় বুনার্জী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ভেতরে ভেতরে টাকা খেলা চলছে। তারা চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে সবসময়ই সোচ্চার ছিলেন। আশাবাদী নির্বাচনে চা শ্রমিকরা আমাদের প্যানেলকে নির্বাচিত করবেন।
  • মহা সংগ্রাম কমিটি ব্যানারে শিউধনী কুর্মী বলেন, ‘আশাবাদী বিপুল ভোটে জয়লাভ করবো।
  • এদিকে পুলিশ প্রশাসন নির্বাচন কমিশন পোলিং, প্রিজাইটিং অফিসার নিয়োগসহ ২২৮টি চা-বাগানে ভোট গ্রহন শান্তিপুর্ণ ভাবে শেষ করতে সকল সম্পন্ন করেছেন।
  • শ্রীমঙ্গল জঙ্গলবাড়ী চা বাগান কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো.জাহাঙ্গীর আলম  বলেন, ‘প্রতিটি ভোট সেন্টারে একটি করে বুথ রয়েছে। আমার সেন্টারে ১টি বুথে ৩৯৮জন ভোটার তাদের প্রদান করছেন।’
  • মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ্জালাল  বলেন, জেলার সবকটি ভোট কেন্দ্রে সব ধরনের নিরাপত্তা জোরদার করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
  • শ্রীমঙ্গল চা শিল্প  শ্রমকল্যাণ বিভাগের উপ-শ্রম পরিচালক মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সব ধরনের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। চা বাগানে একযোগে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহন শুরু হয়েছে।
  • প্রসঙ্গত: নিবাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে  সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, চট্রগ্রাম ও রাঙ্গামাটি জেলার জেলা প্রশাসকরা নির্বাচনের সমন্বয়ক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা রিটার্নিং অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ২০টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীবৃন্দ প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং পার্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছেন।
শেয়ার করুন