জুড়ীতে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর পেটে ছুরিকাঘাত করে থানায় হাজির হয়েছেন স্বামী

  • জুড়ী প্রতিনিধি:
  • মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর পেটে ছুরিকাঘাত করে থানায় হাজির হয়েছেন স্বামী। বুধবার (৪ জুলাই) জুড়ী থানা-পুলিশ সূত্রে এ খবর জানা যায়। ছুরিকাঘাতে আহত ওই নারীর নাম ছালমা বেগম (২৫)। তিনি বর্তমানে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছুরিকাঘাতকারী তাঁর স্বামী হলেন অটোরিকশাচালক আবদুল আহাদ (২৯)। তাঁদের পাঁচ ও তিন বছর বয়সের দুই ছেলে রয়েছে। ছালমার বাবার বাড়ি একই এলাকায়।
  • মঙ্গলবার (৩ জুলাই ) রাতে উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের পশ্চিম ভবানীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
  • পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছালমা বেগম ও আবদুল আহাদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। সেই কলহের জেরে মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে আহাদ ঘরে ঢুকে ধারালো ছুরি দিয়ে আকস্মিকভাবে ছালমার তলপেটে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। ছালমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে আহাদ ঘর থেকে বের হয়ে জুড়ী থানায় গিয়ে হাজির হন এবং পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন। এদিকে আহত অবস্থায় ছালমাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
  • জুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, মঙ্গলবার রাতে আহাদ থানায় এসে নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, তিনি স্ত্রীকে ছুরি মেরে এসেছেন। স্ত্রী বেঁচে আছেন কি না জানেন না। ছুরি কোথায় পেলেন জানতে চাইলে বাজারের একটি দোকান থেকে ১৫০ টাকা দিয়ে কিনেছেন বলে জানান।
  • পারিবারিক অশান্তির কারণে তিনি এ কাজ করেছেন বলে স্বীকার করেন। এ সময় আহাদকে খুবই স্বাভাবিক লেগেছে। মাদকাসক্ত বলেও মনে হয়নি। পরে তাঁকে হাজতে আটক রেখে তাঁরা ঘটনাস্থলে যান। এর আগেই ছালমাকে স্বজনেরা হাসপাতালে নেন। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা ছুরি জব্দ করা হয়েছে।
  • পারিবারিক কলহের জের ধরেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। স্বজনেরা ছালমার চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এখনো লিখিত অভিযোগ দেননি। তাঁরা সিলেট থেকে ফিরে অভিযোগ দেবেন বলেও জানান তিনি।
  • বুধবার (৪ জুলাই) মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আহত ছালমার ছোট ভাই আলম মিয়া জানান- ‘বইনের (ছালমা) অবস্থা ভালা না। পেটে জখম বেশি হইছে। কাইল (মঙ্গলবার) রাইতে বইনের অপারেশন হইছে। আমি ও আমার আরেক ছোট ভাই দুই ব্যাগ রক্ত দিছি। এখনো চেতনা ফিরছে না। ডাক্তারে কইছেন খালি আল্লাহরে ডাকতাম। কিতা হইব, জানি না।’ তিনি জানান, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তাঁর দুলাভাই আহাদ প্রায়ই তাঁর বোনের ওপর নির্যাতন করতেন। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিসও হয়েছিল। এরপরও দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ছালমা সব নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করেন।
শেয়ার করুন