চাঞ্চল্যকর ১০ মামলার রহস্য উদঘাটন : মৌলভীবাজারে পিবিআই পুলিশের সাফল্য

 

বিশেষ প্রতিনিধি:

সারদেশে ফৌজদারী অপরাধ বেড়ে যাওয়ার কারনে মামলার সংখ্যাও বেড়েছে। যে হারে মামলা বেড়েছে সেই হারে সঠিক তদন্ত ও নিস্পত্তি হচ্ছেনা। সময় মতো সঠিক ভাবে তদন্ত শেষ না হওয়ায় অপরাধ প্রতিদিন বাড়তে থাকে।
এ ক্ষেত্রে চাঞ্চল্যকর মামলা সহ সকল মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে সরকার ২০১১ সালে “পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন” (পিবিআই) গঠন করে। এটি বাংলাদেশ পুলিশের অধিনেই একটি আলাদা বাহিনী হিসেবে কাজ করছে। জেলা পর্যায়ে পিবিআই কাজ শুরু করলেও জেলায় কর্মরত পুলিশ সুপারের অধিনে নয়। তাদের আলাদা সংস্থার অধিনে থেকে কাজ করছে। সংস্থাটি থানায় মামলা করা নিয়মিত সকল মামলার তদন্ত, তল্লাশি, গ্রেপ্ততার ও তথ্য প্রমানাধি সংগ্রহ করছে। আর থানা গুলো সংশ্লিষ্ট এলাকায় আইন শৃংখলা রক্ষা, অপরাধ নিয়ন্ত্রন ও মামলা গ্রহন সহ অন্যান্য কাজ করে যাচ্ছে।
এ ছাড়াও আদালতে পাঠানো থানা পুলিশের অভিযোগ পত্র ও চুড়ান্ত রিপোর্টে বাদীর আপত্তি থাকলে সে মামলা গুলো আদালতের নির্দেশে তদন্ত করছে পিবিআই। এ সব ঘটনার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মামলার তথ্য উদ্ঘাটন করতে পেরেছে মৌলভীবাজারস্থ পিবিআই কার্যালয়।
মৌলভীবাজারে “পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন” (পিবিআই) ২০১৪ সালের ১৭ আগষ্ট থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। শুরু থেকে খুন, চাঞ্চল্যকর মামলা, ক্লু-বিহীন মামলার তদন্তকার্য নিস্পত্তি করে। এ কার্যালয়ে বর্তমানে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ৪ জন ইন্সপেক্টর, ৫ জন সাব-ইন্সপেক্টর, ৪ জন এএসআই ও ১১ জন কন্সটেবল নিয়ে কার্য পরিচালনা হচ্ছে।
জিআর মামলা :
মৌলভীবাজারে কর্যক্রম শুরুর পর থেকে ৩০/০৪/২০১৮ তারিখ পর্যন্ত ১৮২ টি জিআর মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায়। প্রাপ্ত মামলা সমূহের নিবিড় তদন্ত শেষে খুনের ৪৯ টি মামলা সহ মোট ১৩৯টি মামলার তদন্তকার্য নিস্পত্তি হয়। নিস্পত্তি কৃত মামলার মধ্যে ১২২ টি মামলার অভিযোগ পত্র (সিএস), ১৭ টি মামলার চুড়ান্ত রিপোর্ট বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হয়। বর্তমানে ৪৩টি মামলা তদন্তে অপেক্ষায় মূলতবী আছে।
সিআর মামলা ঃ ৩০ এপ্রিল ২০১৮ খ্রিঃ পর্র্যন্ত আদালত হতে ৩৬৫টি পিটিশন মামলা (সিআর) পিবিআইতে তদন্তের জন্য আসে। প্রাপ্ত মামলা সমূহের সঠিক ও নিবিড় তদন্ত শেষে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ১৫৬ টি মামলা সত্যতা প্রমাণিত, ১৩২ টি মামলা অপ্রমাণিত এবং ২৪ টি মামলা অন্যান্য ভাবে নিস্পত্তি সহ সর্ব মোট ৩১২ টি সিআর মামলার প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করে পিবিআই। বর্তমানে ৫৩টি মামলা তদন্তে অপেক্ষায় মূলতবী আছে।
ক্রাইমসিন :
পিবিআই জেলা ইউনিট মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় সংঘটিত গুরুতর অপরাধ (খুন, ডাকাতি, দস্যুতা, ধর্ষন, দ্রুত বিচার, চুরি) সংঘটিত হয়েছে সংবাদ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পিবিআই প্রশিক্ষিত ক্রাইমসিন টিম তাৎক্ষনিক ভাবে জেলা পুলিশের ডাকে সাড়া দিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে অপরাধের বস্তুগত আলামত সংগ্রহ পূর্বক স্থানীয় থানা পুলিশকে সহযোগিতা করেছে। তাছাড়া অপরাধ সংশ্লিষ্ট প্রাপ্ত আলামত সমূহের প্রযুক্তিগত ব্যবহারের মাধ্যমে জড়িত অপরাধীদের সনাক্ত করন সহ গ্রেফতার ও মামলা উদঘাটনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
অন্যান্য কার্যক্রম ঃ পিবিআই জেলা ইউনিট পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাষ্ট্রিয় অনুষ্ঠান আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস সহ সকল ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, দূর্গাপূজা, বৌদ্ধ পূর্র্নীমা, খ্রীসমাস-ডে (বড় দিন) ও বাঙ্গালী ঐতিহ্যের পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন অনুষ্ঠান সহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা বিধান করে আসছে।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)র তদন্তে উল্লেখযোগ্য আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর ১০টি মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন শেষে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয়। নিন্মে সংক্ষিপ্ত আকারে তোলে ধরা হলো : –

কুলাউড়ায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে জলাল হত্যার ঘটনা কিভাবে সাজায় : –
মৌলভীবাজারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)র তদন্তে ৮ বছর পর চাঞ্চল্যকর কুলাউড়ার জলাল হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে। সংঘবদ্ধ গাছ চোর চক্রকে আড়াল করতেই সাজানো হয় এই হত্যার নাটক। নিহত জলালের মৃত্যুর পর আপন দু’ভাই মকজ্জিল ও মকদ্দিছ প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য হত্যা মামলার পরিকল্পনা করে। তাদের ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে স্থানীয় নিরঅপরাধ কয়েকজনকে জেল খাটায়। প্রতিপক্ষকে গায়েল করতে ৪ বার কুলাউড়া থানা পুলিশের আদালতে পাঠানো তদন্ত রির্পোটে না রাজি দেন মামলার বাদী নিহত জলালের আপন বড় ভাই মকজ্জিল আলী।
সর্বশেষ সিআইডির চুড়ান্ত রিপোর্টের বিরুদ্ধেও বাদী নারাজী আবেদন করলে আদালত মামলাটির তদন্তভার পিবিআই মৌলভীবাজারের উপর ন্যস্ত করেন। পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম মামলাটির তদন্তভার গ্রহন করেন।
পিবিআই সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১০ মে রাত ১২টার দিকে রোশন ও আজাদের দুটি ঠেলাগাড়িসহ আজাদ, ছৈয়ব আলী, ভিকটিম জলাল, মকদ্দিছ, রোশন এবং মকজ্জিল চাতলাপুর বাগানের ১০ নম্বর সেকশনে যায়। সেখানে যাওয়ার পর হরিধন ও মাখন চৌকিদার এর সহায়তায় তারা একটি কড়ই গাছ কাটে। গাছটিকে কয়েক টুকরো করে। গাছের টুকরো গুলো আজাদ ও রোশনের ঠেলাগাড়িতে উঠায়। আজাদের ঠেলাতে ছৈয়ব আলী, নিহত জলাল, আজাদ ও আহাদ ধরে। রোশনের ঠেলাতে মকদ্দিছ, রোশন ও বাদী মোঃ মকজ্জিল আলী ধরে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঠেলা চালিয়ে চাতলাপুর রাবার বাগানের কাঁচা রাস্তায় মোকামের আম গাছের ঢালুতে আসলে আজাদের ঠেলার এক্সেল ভেঙ্গে কাটা গাছের অংশ জলালের উপর পড়ে। তখন সকলেই জলালের উপর হতে গাছের অংশ সরায়। এতে জলাল ঘটনাস্থলেই তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর আহত হয়। এই ঘটনার পর প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়ে মোঃ মকজ্জিল আলী ও মকদ্দিছ জলালকে সু-চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে আসার পরই জলাল মারা যায়। এই ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মকজ্জিল আলী ও তার ভাই মকদ্দিছ ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে জলালের লাশ তাদের বাড়ির পিছনে টিলার ঢালুতে রাখে। এছাড়া জলাল গুরুত্বর আহত হওয়ার পরেও চোরাইকৃত গাছের লোভ সামলাতে না পেরে ভিকটিমকে চিকিৎসালয়ে না নিয়ে আসামীরা পার্শবর্তী খালিকের বাড়িতে এবং অন্যগুলো হাজীপুর স-মিলে নিয়ে আসে।
পরদিন লাশের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনান্থল সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পংখী, জাবের, মীর, জলিল, রেমান, শাহিদ, মসুদ মিয়াসহ জনৈক প্রবাসীর স্ত্রী রোকেয়ার বাড়িতে জলালের যাতায়াত নিয়ে অন্তকোন্দলের বিষয়টি উল্লেখ করে বাদী মোঃ মকজ্জিল আলী নিহত জলাল হত্যায় সন্দেহভাজনদের আসামী করে মামলা করলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। তারা দীর্ঘদিন কারাভোগ করে উচ্চ আদালত হতে জামিন আনেন। এই সাজানো ঘটনার পর থেকে রোকেয়ার প্রবাসী স্বামী দেশে এসে রোকেয়ার সাথে কোন যোগাযোগ না করে অন্যত্র বিবাহ করে। মামলাটির থানা পুলিশের নিকট তদন্তের পর্যায়ে রোকেয়ার বাড়ি সংলগ্ন আকমল আলীকে বাদী মকজ্জিল আলী মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে তাকে প্রত্যক্ষ সাক্ষী সাজিয়ে আদালতে একটি এফিটডেভিট দায়ের করে। একইভাবে আকমল আলীর স্ত্রী শাহানাকেও প্রত্যক্ষ সাক্ষী বানানোর চেষ্টা করলে শাহানা রাজী না হলে এই নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহের এক পর্যায়ে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
কাকীর সহিত পরকীয়ার কারনেই অবনী বাকতিকে হত্যা করা হয় :
ঘটনার ৪ বছর পর আলোচিত চা শ্রমিক অবনী বাকতি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই পুলিশ। তদন্তে পরকীয়ার কারনে অবনী বাকতিকে হত্যা করা হয়েছে বেরিয়ে আসে।
পিবিআই সূত্রে জানাযায়, একাধীক পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার তদন্তের পরও মামলার রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় বিজ্ঞ আদালতের নিদের্শে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই পুলিশকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়।
২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পিবিআই তদন্তকাজ শুরু করে। আর হত্যাকান্ডের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শিবিরুল ইসলাম। মামলাটি তদন্ত কালীন সময়ে জানতে পারেন অবনী বাকতি (লব) তার প্রতিবেশী কমলগঞ্জ থানার ফুলবাড়ি চা বাগানের ৭ নং লাইনের বাসিন্দা মৃত অনন্ত বাকতির পুত্র রদিপ বাকতি (২৬), মৃত রতি তন্তবাইর পুত্র দেবাশীষ তন্তবাই (২৭), সীতারাম, পিতা-অজ্ঞাত এদের সাথে সে ঘনিষ্ট ভাবে চলাফেরা করত।
অবনী বাকতি তাদের সাথে চলা ফেরার কারনে সে তার প্রতিবেশী ও বন্ধু রদিপ বাকতি এর বাড়িতে যাওয়া আসা ছিল। অবনী বাকতি রদিপ বাকতির বাড়িতে আসা যাওয়ার কারনে তার কাকী এর সহিত প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।
২০১৪ সালে ৩ জানুয়ারি রদিপ বাকতি ও শীতারাম দুপুর ১২ টার দিকে ফুলবাড়ি চা বাগানে বাঁশ কাটতে গেলে দেখতে পায় অবনী বাকতি ও তার কাকী অনৈতিক কাজে লিপ্ত। তখন তারা দুজনে মিলে অবনী বাকতিকে এই অনৈতিক কাজে বাধা দিলে সে ওদেরকে গালিগালাজ করে। একই সাথে তাদের হুমুকিও দেয়। ওই দিন সন্ধ্যার দিকে রদিপ বাকতি, দেবাশীষ দেব ও শীতারাম অবনী বাকতির বাড়িতে যায় এবং এ বিষয়ে পুনরায় ভিকটিমকে সতর্ক করলে সে তাদের সাথে দূর্ব্যবহার করে। তার দূর্ব্যবহারের কারনে উপরোক্ত আসামীগন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন রাত অনুমানিক ৯টার দিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুয়ায়ী শীতারাম (২৮) তার সাথে বল্লম (পিকল) নিয়ে রদিপ বাকতি (২৭) ও দেবাশীষ (দেব) কে সাথে নিয়ে পূনরায় অবনী বাকতি বাড়িতে গিয়ে তার সাথে এ বিষয়ে কথা বলে। রাত ১০ টার দিকে তারা সুকৌশলে ফুলবাড়ি চা বাগানের ১০ নং সেকশনে মন কুচি এলাকায় রাস্তার পাশে নিয়ে আসে। মন কুচি এলাকায় আসার পর তারা বিষয় অবনী বাকতির সাথে পুনরায় তর্কে লিপ্ত হয়। তর্কের এক পর্যায়ে আসামীগন ভিকটিমকে মারধর করে। একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয়। ধস্তাধস্তিতে অবনী মাটিতে পড়ে গেলে দেবাশীষ দেব ও রদিপ বাকতি তার উপরে হাটু গেড়ে বসে এবং শীতারাম অবনী বাকতির মাথায় পিকল দিয়ে আঘাত করলে মাথার এক পাশ হতে অন্য পাশ দিয়ে ছিদ্র হয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারনেই ঘটনাস্থলেই অবনী বাকতি মারা যায়।
প্রাপ্ত তথ্যের যাচাই বাচাই শেষে গত ২৮ শে ফেব্রুয়ারি অবনী বাকতি হত্যায় মুল সন্দেহভাজন আসামী রদিপ বাকতি (২৭) কে গ্রেফতার করা হয়। সে অবনী বাকতি হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
পিবিআই সনাক্ত করেছে রাবার চোর সিন্ডিকেটকে :
শ্রীমঙ্গল উপজেলার হুগলিছড়া চা-বাগানের রাবার চুরের সিন্ডিকেটদের সনাক্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, শ্রীমঙ্গল উজেলার হুগলিছড়া চা-বাগানের সিনিয়র সুপারভাইজার শামীম রেজা ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর রাবার গাছ হতে টেপিং করিয়া রাবার কশ সংগ্রহ করে এসিড দিয়া জমাট বেঁধে বস্তায় করে প্রায় ৬শ কেজি জমাট বাধা রাবার চুরির একটি জিপ গাড়ীর (ঢাকা-গ-১৬২৬) দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী ধাওয়া করলে গাড়ী রেখে চালক পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় মোঃ শামীম রেজা শ্রীমঙ্গল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে পরদিন ২৯ নভেম্বর অভিযোগ দায়ের করেন।
উক্ত অভিযোগ শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মামলা নং-২১(১১)১৬, ধারা-৪৪৭/৩৭৯ এসআই মোঃ রফিকুল ইসলাম এর উপর তদন্তভার অর্পন করেন। উক্ত তদন্তকারী অফিসার প্রায় ৯ মাস ধরে মামলাটি তদন্তকালে জীপ গাড়ীর ড্রাইভার আসামী বাচ্ছু মিয়াকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করিলে উক্ত আসামী রাবার চুরির ঘটনা সংক্রান্তে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধীর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। মামালাটি তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা বিজ্ঞ আদালতে চার্জশিট দাখিল করিলে, দাখিলকৃত চার্জশিটে বেশ কিছু অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হওয়ায় মামলাটি পূনরায় তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দ্দেশ অনুযায়ী পিবিআই এর উর্ধŸতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক (মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম উক্ত মামলাটির তদন্তভার গ্রহন করেন। তদন্তকালে পিবিআইর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাহাদাত হোসেন সহ তদন্তকারী কর্মকর্তা একাধিকবার মামলার ঘটনাস্থাল পরিদর্শন করেন।
তদন্তে বেরিয়ে আসে একটি চোর চক্রের সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন থেকে বিশাল অংকের টাকা লেনদেন করে শ্রীমঙ্গল থানাধীন হুগলিছড়া রাবার বাগান থেকে রাবার চুরি করিয়া অবৈধ ভাবে লাভবান হচ্ছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে চলতি বছরের ২০১৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি হুগলিছড়া রাবার বাগান হতে রাবার চুরির সিন্ডিকেটের সাথে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত মর্মে আসামী (১) ছুরুক মিয়া (৫৫), পিতা মৃত-তুতি মিয়া, সাং-কামারগাঁও, (২) মিজানুর রহমান লিখন (৪০), পিতা মৃত-আঃ খালেক, সাং-টিলাগাঁও কে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করিলে উক্ত আসামীরা রাবার চুরির ঘটনায় নিজেদেরকে জড়িয়ে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।
শ্রীমঙ্গলে আলোচিত প্রতিবন্ধী আরিফ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী চাচা :
শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাজীপুর এলাকায় আলোচিত প্রতিবন্দী আরিফ হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বাদী পক্ষের আটক ০৩ জন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে।
পিবিআই জানায়, পূর্বের শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আপন ভাতিজা বাক ও শারিরিক প্রতিবন্ধি আরিফুল ইসলাম আরিফ হত্যা করা হয়েছে। পিবিআই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মামলার ২ নং সাক্ষী মোঃ ইয়াকুত মিয়া, মোঃ তোফায়েল আহমদ ও জুনায়েদকে গ্রেপ্ততার করেন। হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত একটি সিএনজি উদ্ধার করে পিবিআই।
২০১৭ সালের ২৪ জুন সন্ধ্যার কিছু পূর্বে হাজীপুর গ্রামে একটি যৌথ পুকুরে রান্নায় ব্যবহৃত হান্ডিবাসন ধোয়াকে কেন্দ্র করে একই বাড়ির ২ পক্ষের মধ্যে কথাকাটাটির জের ধরে সংঘর্ষ হয়। এ সময় উভয় পক্ষে ইট পাটকেল নিক্ষেপ হলে এতে ৬/৭ জন আহত হয়। সংঘর্ষ থেমে গেলে আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
এ ঘটনার প্রায় পৌনে এক ঘন্টাপর প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে একই বাড়ির প্র্রতবন্ধী আরিফকে তার চাচা মোঃ ইয়াকুত মিয়া ঘর থেকে উঠানে এনে লাটি দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা আরো কয়েকজন সহযোগীর মাধ্যমে একটি সিএনজি অটোরিক্সা দিয়ে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানোর নামে রাস্তায় তাকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে প্রথমে শ্রীমঙ্গল থানায় প্রতিবন্ধীর বাবা মোঃ আরবেশ আলী বাদী হয়ে ১৮ জনকে আসামী করে ২৬/০৬/১৭ তারিখে মামলা দায়ের করেন। শ্রীমঙ্গল থানার এস আই মোঃ রফিকুল ইসলাম এ মামলার তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে গত ২৪/০৯/১৭ তারিখে ১৮ জন আসামীর মধ্যে ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র পাঠান। ৩ জনের নাম বাদ দেয়ার কারনে আদালতে না রাজি দেন মামলার বাদী মাঃ আরবেশ আলী। পরে আদালত পিবিআইকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। পিবিআইর তদন্তেÍ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মামলার ২ নং সাক্ষী মোঃ ইয়াকুত মিয়াকে ১৩ জানুয়ারি ও মোঃ তোফায়েল আহমেদ নামের অপর এক আসামীকে ১৬ জানুয়ারি এবং জুনায়েদকে ৪ ফেব্রুয়ারী গ্রেপ্তার করেন। পিবিআইর জিজ্ঞাসাবাদে আটক তিন’জন প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য তারা পরিকল্পিত ভাবে প্রতিবন্ধী আরিফকে হত্যা করেছেন। আটককৃতরা হত্যার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ন তথ্য দিয়েছে। পরে এ তিন’জন আদালতে বিজ্ঞ বিচারকের কাছে প্রতিবন্ধী আরিফকে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দেয়।
কুলাউড়ায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শিশু ইভাকে হত্যা করে আপন চাচা :
কুলাউড়া উপজেলায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ৫ মাসের শিশু ইভাকে গলা কেটে হত্যার রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসস্টিগেশন (পিবিআই)। ইভা হত্যাকারী আপন আবুল মিয়া প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে হত্যাকান্ড ঘঠিয়েছে বলে আদালতে স্বীকার করেছেন।
পিবিআই জানায়, হত্যাকান্ডের মুল আসামী ইভার আপন চাচা আবুল মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে আবুল মিয়ার মা (ইভার দাদী)‘র নির্দেশে ইভাকে গলায় কোপ দিয়ে হত্যা করা হয়। ৫ মাসের শিশু ইভা হত্যার রহস্য ৫ বছরের মাথায় উদঘাটন করেছে পিবিআই।
কুলাউড়া উপজেলার ইসলামনগর গ্রামের শিশু ইভা হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটন করে পিবিআই জানায়, কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের ইসলামনগর গ্রামের মুক্তার মিয়ার ছেলে নিজাম মিয়া (৩৭) ও তার ভাইদের সাথে একই গ্রামের মৃত রহমত আলীর ছেলে মাসুক মিয়া (৪৫)ও তার ভাইদের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল।
২০১২ সালের ১৪ আগস্ট মাসুক মিয়া দলবল নিয়ে বিরোধীয় জমিতে গেলে নিজাম মিয়ার স্ত্রী রুবিনা বেগম তার কন্যা মীমকে কোলে নিয়ে বিরোধিয় জমিতে গিয়ে বাধাদানসহ হাল্লা চিৎকার করলে মাসুক মিয়া ও তার লোকজন রুবিনা বেগম কে মারপিট করে। এর কিছু সময় পর নিজামের মা বিরু বেগম ৫ মাসের শিশু ইভার লাশ হাতে নিয়ে বিরোধীয় জমির দিকে এসে বলেন মাসুক ও তার লোকজন শিশু ইভাকে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় নিজাম মিয়া বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় মামলা করেন।
কুলাউড়া থানার দুইজন এসআই মামলা তদন্ত করে উক্ত হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে না পেরে ১৭/১/১৩ তারিখে চূড়ান্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেন। বাদীর না-রাজির প্রেক্ষিতে আদালত কুলাউড়া থানা তদন্ত শেষে পুন:রায় চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয়। বাদি আবার না-রাজি দিলে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে অধিকতর তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখাকে নির্দেশ দেন। জেলা গেয়েন্দা শাখার এইসআই মোবারক হোসেন এক বছর তদন্ত করে উক্ত হত্যা কান্ডে কে বা কারা জড়িত তা বের করতে না পেরে ২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন।
বাদী আবার আদালতে না-রাজি আবেদন করে। আদালতের নির্দেশে ১/২/১৭ ইং পিবিআই মৌলভীবাজার কার্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম মামলার তদন্ত শুরু করেন। গত ১১ জুলাই সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার আলমপুর গ্রাম থেকে বাদীর আপন ভাই নিহত শিশু ইভার চাচা আবুল মিয়া ওরপে আব্দুল্লাহ (৩৩) কে গ্রেফতার করে মৌলভীবাজার কার্য়ালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করে এবং পরবর্তিতে ১২ জুলাই আদালতে সোপর্দ করলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এছাড়া অপর চাচা রাশেদ আলী @ রাশেদুলকে গত ১৯/১০/২০১৭ খ্রিঃ তদন্তকারী অফিসার গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করিলে ইভা হত্যা সংক্রান্তে উক্ত আসামী ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। হত্যায় ব্যবহৃত দা/বটি উদ্ধার করে পিবিআই এর তদন্তকারী অফিসার আসামী আবুল মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছে প্রতিপক্ষকে গায়েল করার জন্যই তার মা (শিশু ইভার দাদী) বিরু বেগম ঘুমন্ত শিশু ইভাকে উঠানে রেখে বটি দা দিয়ে কোপ দিতে বলে। তখন উঠানে তার ভাই নিজাম ও রাশেদ ছিল। চাচা আবুল শিশু ইভার গলায় কোপ দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। বিরু বেগম পানি ঢেলে ঘটনাস্থলের রক্ত পরিস্কার করেন। ইতিমধ্যে মামলার অন্যতম স্বাক্ষী আব্দুল আজিজ ও ইভার দাদী বিরু বেগম মৃত্যু বরণ করেছেন।

বড়লেখায় চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র আব্দুলাহ হাসান হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটন :
বড়লেখায় চাঞ্চল্যকর ৮ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্র আব্দুলাহ হাসান এর হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মামলার এজহার সূত্রেজানা গেছে, চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি রাতে আব্দুল্লাহ হাসান বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়। ১০ দিন পর ২৮ জানুয়ারি রাতে মোহাম্মদনগর এলাকার একটি নির্জন পাহাড়ী এলাকায় খন্ডিত পচা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে বড়লেখা মোহাম্মদনগর গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী আব্দুর রহিম বাড়িতে আসেন। ৩০ জানুয়ারি নিহতের বাবা ৬ জনকে আসামি করে বড়লেখা থানায় হত্যা মামলা করেন।
হত্যাকান্ডটি চাঞ্চল্যকর ও রহস্যজনক হওয়ায় পিবিআই হেডকোয়াটার্স এর ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার নির্দেশে ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে মামলাটি পিবিআই মৌলভীবাজারের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম তদন্তভার গ্রহন করে। পিবিআইর তদন্তে এজহারগর্ভে সদ্ধিগ¦ ৬জন আসামীর থেকে গুরুত্ব পূর্ন তথ্য না পাওয়ায় গাড়ী চালক এরশাদ মিয়াকে আটক করে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম স্কুল ছাত্র আব্দুল্লাহ হাসানের বাবার ব্যাক্তিগত গাড়ীচালক এরশাদ আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আব্দুল্লাহ হাসান সিলেটের মোগলাবাজার থানাধীন মনির আহমদ একাডেমিতে ৮ম শ্রেনীতে পড়াশুনা করত। হত্যাকারী মোঃ এরশাদ তাকে ঐ স্কুল থেকে আনা নেয়া করত। ২০১৭ সনের অক্টোবর মাসে বড়লেখা হতে ভিকটিম আব্দুল্লাহ হাসানকে মনির আহমদ একাডেমিতে নিয়ে যাওয়ার পথে গোলাপগঞ্জ থানাধীন চন্দরপুর পেট্রোল পাম্পের নিকট দোকান থেকে কেক ও ঠান্ডা কেনার জন্য গাড়ী থামায়। দোকান কেক আনার সময় কিশোর হাসানের শরীরে গাড়ি লাগিয়ে দেয় এরশাদ। এ সময় হাসান এরশাদকে চড় মারে ও গালিগালাজ করে। এতে এরশাদের মনে ক্ষোভ জন্মে। এ থেকেই সে ঘটনাটি ঘটিয়েছিল বলে স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে। এরশাদ ঠান্ডা মাথায় পূর্বপরিকল্পনা মতে ঘটনার প্রায় তিন মাস পর জরুরী কথা আছে বলে হাসানকে নির্জন পাহাড়ী টিলায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ হত্যাকান্ড ঘটালেও থেকেছিল সন্দেহের উর্ধ্বে।
চলতি বছরের ১৯ মে তাকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করলে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরশাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেলে ৩ দিনের মধ্যে লোমহর্ষক এ হত্যাকান্ডের স্বীকারোক্তি প্রদান করে।’ হত্যার কথা স্বীকার করে ২৩ মে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বড়লেখায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
হোসেনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়নি : নারিকেল গাছ থেকে পরে তার মৃত্যু হয় :
বড়লেখায় আলোচিত হোসেন আহমদ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই পুলিশ। পরিকল্পিতভাবে হোসেন আহমদকে অপহরণের পর খুন করে লাশ পুকুরে ফেলে গুম করার অভিযোগ সঠিক নহে পিবিআইর তদন্তে বেরিয়ে আসে।
নিহত হোসেন আহমদের বড় ভাই হাসান আহমদ মামলার বাদী বড়লেখা থানায় ৯ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। বড়লেখা থানার মামলা নং ১৭, তাং-১২/০৮/২০১৫ খ্রিঃ। মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে উল্লেখ করা হয়, বড়লেখা থানার ৫নং দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউপি’র ৪নং ওয়ার্ডের চন্ডিনগর (হরিনগর) এলাকায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে এজাহারনামীয় ৯ জন আসামি পরিকল্পিতভাবে হোসেন আহমদকে অপহরণের পর খুন করে লাশ পুকুরে ফেলে গুম করার চেষ্টা করেছেন।
প্রথমে মামলাটির সিআইডি, মৌলভীবাজর এর তদন্তকারী অফিসার এস আই মোঃ আরিফুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত শেষে মৃতের সুরতহাল ও ময়না তদন্ত রিপোর্ট এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় ও ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬১ ধারায় স্বাক্ষীদের জবানবন্দির ভিত্তিতে এজাহার নামীয় আসামি পুত্র জামাল আহমদ ও তার পিতা আব্দুল মতিনকে অভিযুক্ত করে পেনাল কোড ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অপর এজাহারনামীয় ৭ জন আসামিকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
পরে মামলার বাদী হাসান আহমদ ৭জনকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দাখিল করার আদালতে নারাজি দিলে আদালত পিবিআইকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশে অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই, গত ২৮/০৮/১৬ খ্রিঃ তারিখ মামলার তদন্তভার গ্রহন করেন। পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ মহিদুল ইসলাম তদন্তের দায়িত্ব পান।
পিবিআইর তদন্তে বেরিয়ে আসে ভিকটিম নারিকেল গাছ হতে পুকুরের ঘাটলার পাকা দেয়ালে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হলে বিবাদীরা তাকে উদ্ধার না করে পালিয়ে গেলে ভিকটিম পুকুরের পানি ডুবে মারা যায় অর্থাৎ তাচ্ছিল্যপূর্ণ কাজ ও দায়িত্বে অবহেলার ফলে হোসেনের মৃত্যু হয়।
পিবিআই, জামিনপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল মতিন (২১) কে তার আইনজীবির উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তা মঞ্জুর করেন। পরে জামিন প্রাপ্ত উক্ত আসামীকে পিবিআই কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ কালে সে নিজেকে জড়িয়ে অত্র মামলার ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। এরপর উক্ত আসামী বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে বলেন যে, ভিকটিম সহ তিনি এবং তার বন্ধু জামাল আহমদ (২৫) গত ০৭/০৭/১৫ খ্রিঃ তারিখ দিবাগত রাত অনুমান ১২.৩০ ঘটিকায় নারিকেল গাছ হতে নারিকেল পারতে গেলে ভিকটিম হুসেন আহমদ গাছ হতে পড়ে পাকা ঘাটলার দেয়ালে লেগে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। এতে তারা ধরা পড়ার ভয়ে তাকে উদ্ধার না করে পালিয়ে যায়। পরে সকালে জানতে পারে যে, ভিকটিম উক্ত পুকুরে মারা গিয়াছে। আসামীর স্বীকারোক্তি জবানবন্দি, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় ও স্বাক্ষ্য প্রমানে আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পেনাল কোডের ৩০৪ (ক) ধারায় প্রমানিত হয়েছে।
সদর উপজেলার বিন্নিগ্রামে আহাদ মিয়া হত্যা মামলর রহস্য উদঘাটন :
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বিন্নিগ্রামে জোর পূর্বক অপহরন করে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এজাহার সূত্রে জানাযায়, ভিকটিম আতর মিয়া ও তার স্ত্রী আম্বিয়া বেগম গত ১২/০১/২০১৭ খ্রিঃ তারিখে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভিকটিমের চিকিৎসার পর বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে ধোবার হাট (প্রকাশিত সমশেরগঞ্জ বাজার) পৌঁছে সত্যদেব চৌধুরী কাপড়ের দোকানে অবস্থান কালীন সময়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিন্নিগ্রাম সাকিনের আসামী আহাদ মিয়া গং(এজাহার নামীয় আসামীর সংখ্যা ৪৭ জন) ভিকটিম আতর মিয়াকে জোর পূর্বক অপহরন করে হত্যার উদ্দেশ্যে একটি মিশুকে তোলে বিন্নিগ্রাম সাকিনে আকবর মিয়ার বাড়ীতে নিয়ে যায়। আকবর মিয়ার হুকুমে আসামী আহাদ গং ধারালো অস্ত্র দ্বারা কুপিয়ে ভিকটিমকে মারাত্বক জখম করত ভিন্নিগ্রামের আবুজার আল গিফারী মাদ্রাসার সামনে ফেলে রেখে য়ায়। স্থানীয় লোকজন আহাদ মিয়াকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় আম্বিয়া বেগম বাদী হয়ে ৪৭ জনকে আসামী করে ১০/১১/২০১৭ তারিখে মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলাটি পিবিআই এর সিডিউলভূক্ত হওয়ায় উর্ধ্বতন কর্র্র্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে ১৬/০২/২০১৮ তারিখে অধিগ্রহন করা হয়। পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক, মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম মামলাটির তদন্তভার গ্রহন করেন।
তদন্তের শুরুতে পিবিআইর হাতে গ্রেফতার কৃত আসামী ৩ জন ও সাক্ষী ২জন সহ মোট ৫ জন ভিকটিমকে হত্যার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। পূর্ব শক্রুতার জের ধরে এজাহার নামীয় ৩৯ জন ও এজাহার বর্হিভূত ৩ জন সহ মোট ৪২ জন আসামী প্রথমত ভিকটিমকে অপহরণ করে পরবর্তীতে তাকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা জখম করে হত্যা করেন মর্মে পুরো ঘটনা বলে নিজেদেরকে জড়িয়ে ৩ জন আসামী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। ভিকটিমকে অপহরনের কাজে ব্যবহৃত মিশুকটি উদ্ধার করে জব্দ করা হয়। ঘটনার সাথে জড়িত ৪২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয়।
কুলাউড়ায় দ্রুত বিচার আইনের মামলার উল্লেখযোগ্য সাফল্যে :
কুলাউড়া উপজেলার তিলাশী জুড়া হত্যার উদ্যেশ্যে গিয়ে মটর সাইকেল ও ট্রাক্টর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এ বিষয়ে বাদী খায়রুল ইসলাম বিজ্ঞ আদালতে গত ২২/০৫/২০১৬ খ্রিঃ পিটিশন দায়ের করলে আদালত মামলা রুজু করার জন্য ওসি কুলাউড়া থানাকে নির্দেশ প্রদান করেন।
এজহারের খুবই সংক্ষিপ্ত বিবরণ জানাযায়, বাদী খায়রুল ইসলামকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আক্রমন করে আসামী দোলন (৪০), মিলন (৩২), সাগর (২৮), সৌরভ (২৪), জালাল (২৬)। তখন বাদী প্রাণ রক্ষার্থে পার্শবর্তী বসত ঘরে আশ্রয় নেয়। এক পর্যায়ে বিবাদী’গন ঘটনাস্থলে বাদীর ব্যবহৃত ১ টি মটর সাইকেল ও ট্রাক্টর সাক্ষীর উঠানে পাইয়া তাতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত বাদীর অভিযোগ এফ.আই.আর গন্যে মামলা রুজু করার জন্য ওসি কুলাউড়া থানাকে নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে সাক্ষ্য প্রমান না পাওয়ায় কুলাউড়া থানার তৎকালিন তদন্তকারী অফিসার চুড়ান্ত রিপোর্ট মিথ্যা নং-৫৯, তাং-১৬/০৮/২০১৫ ধারা-আইন শৃংখলা বিঘœকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার ) সংশোধনী/২০১৪ এর ৪(১)/৫ বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হয়।
দাখিলকৃত প্রতিবেদনের উপর বাদীর নারাজীর কারণে আদালত পিবিআইকে ১৫/১০/২০১৫ মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেন। পিবিআই তদন্তকারী অফিসার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আব্দুল্লাহ তদন্তে এজাহার নামীয় ঘটনা সংক্রান্তে কয়েক জন প্রত্যক্ষ সাক্ষী পাওয়া এবং ঘটনার সময় বাদীর ব্যবহৃত ১ টি মটর সাইকেল ও ১ টি ট্রাক্টর আসামীগন কর্তৃক দগ্ধ হওয়া আলামত উদ্ধার পূর্বক সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এজাহার নামীয় ৫ জন আসামীর বিরুদ্ধে কুলাউড়া থানার অভিযোগপত্র নং-০১, তারিখ-০২/০১/২০১৬ খ্রিঃ, ধারা-আইন শৃংখলা বিঘœকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) সংশোধনী/২০১৪ এর ৪(১)/৫ প্রকৃত সত্য ঘটনা উদ্ঘাটন করে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
শ্রীমঙ্গলে সিএনজি পাম্প মেকানিক ফারুকুল হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটন :
শ্রীমঙ্গলে ফারুকুল ইসলাম হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মাকে অন্যত্র রেখে স্ত্রীর সাথে থাকার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দুই বছরের একমাত্র মেয়ে ফাইজা তাবাছুম রাহা’র সামনে ফারুকুল ইসলামকে হত্যা করেন স্ত্রী শিরিন আক্তার, শিরিনের বড় ভাই ইউনুস হোসেন সুজন ও শিরিনের মা ও ফারুকুলের শাশুড়ি মালেকা বেগম মিলে। হত্যার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে দেখাতে মেঝেতে শুইয়ে লাশের উপর ঘরের আসবাব পত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। হত্যাকান্ড চলা কালে শ্বাশুড়ী মালেকা বেগম বাসার বাহিরে দাঁড়িয়ে কেউ আসে কি না তা পাহারা দেয়। বাসার মালামাল সরাতে গিয়ে দূর্ঘটনায় মারা গেছেন ফারুকুল বলে চিৎকার করেন স্ত্রী শিরিন।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, নিহত ফারুকুল ইসলামের মা জয়না বেগম গত ২৫/০৭/২০১৭ শ্রীমঙ্গল থানায় ছেলে হত্যার দায়ে স্ত্রী শিরিন আক্তার (২৫) সহ আরো ২/৩ জন অজ্ঞাত নামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মোঃ কামাল উদ্দিন মামলার একমাত্র আসামী ফরুকুলের স্ত্রী শিরিন আক্তার (২৫) কে অভিযুক্ত করে ৩১/১০/২০১৭ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার বাদী উক্ত রিপোর্টের উপর আদালতে না-রাজী দাখিল করিলে আদালত না-রাজী গ্রহন করে তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পিবিআই, মৌলভীবাজারকে নির্দেশ প্রদান করেন।
বিজ্ঞ আদালতের আদেশ ১ মার্চ ২০১৮ খ্রিঃ প্রাপ্ত হয়ে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ইন্সপেক্টর মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম, কে তদন্তকারী অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে উক্ত আসামীকে পুলিশ রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে ০১/০৬/২০১৮ খ্রিঃ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে ভিকটিম ফারুকুল ইসলামকে হত্যার বর্ননা দিয়ে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।
সুত্র জানাযায়, বিবাহের পর হইতে নিহত ফারুকুল ইসলাম, আসামী শিরিন আক্তার ও ফারুকুলের মা অত্র মামলার বাদীনি জয়না বেগমকে নিয়ে একত্রে হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জে ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। কিন্তু আসামী শিরিন আক্তার ভিকটিমের মা তাদের সাথে থাকুক তা সহ্য করতে না পারা সহ বিভিন্ন পারিবারিক কারনে ফারুকুলের সাথে আসামী শিরিন আক্তারের মতবিরোধ দেখা দেয়।
পরবর্তীতে ফারুকুল আসামী শিরিন আক্তার ও তার কন্যা সন্তাকে নিয়ে বিরামপুর সুরভীপাড়া রহিম লন্ডনীর বাড়ীতে ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস শুরু করে। ফারুকুল দীর্ঘ দিন তার মাকে ছেড়ে আলাদা ভাবে বসবাস করা মনে মনে মেনে নিতে পারেননি। তাই ফারুকুল ২০১৭ সালের জুলাই মাসে তার ভাড়া বাসা ছেড়ে দিয়ে পুনরায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে তার মাতা জয়না বেগমের সহিত নিজ বাড়ী নোয়াগাঁও সাকিনে বসবাসের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। উক্ত সিদ্ধান্ত স্ত্রী শিরিন আক্তার সহজ ভাবে মেনে নিতে পারেননি। ফলে এ বিষয় নিয়ে পূনরায় তাদের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি হয়।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুয়ায়ী গত ২৪/০৭/২০১৮ তারিখে সকাল অনুমান ১০ ঘটিকার সময় আসামী মোঃ ইউনুস হোসেন সুজন, মালেকা বেগম নিহত ফরুকুলের ভাড়াটিয়া বাসায় আসে।
আসামী মোঃ ইউনুছ হোসেন সুজন ভিকটিমের সামনে থেকে জোরে গলা চেপে ধরে দেওয়ালের পাশে থাকা সেলাই মেশিনের উপর আছাড় মারে ও ঝাপটে ধরে ফরুকুলের মুখ মন্ডলে ৩/৪ টি বক্সিং মারে। এতে ফরুকুল কিছু দূর সরে গিয়ে প্রতিহিত করার চেষ্টা করিলে ফরুকুলের স্ত্রী শিরিন আক্তারের হাতে থাকা স্ট্রীলের ট্রে দিয়ে তাকে ২/৩ টি বাড়ী মারে। এতে মুখমন্ডল ও মাথা রক্তাক্ত হলে মোঃ ইউনুস হোসেন সুজন প্রথমে সেলাই মেশিনটি উপরে তুলে ফরুকুলের মুখ মন্ডলের উপর ছুড়ে মারেও রান্নাঘরের খালি গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে আঘাত করে।
ক্রমাগত আঘাতের কারনে ফরুকুলের মাথা ও মুখমন্ডল থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের ফলে অল্প সময়ের মধ্যে নিঁস্তেজ হয়ে যায়। মৃত্যু নিঁিশ্চত করে শিরিন আক্তারের সহযোগিতায় ফরুকুলকে মেঝেতে শুইয়ে তার উপর বিছানার আসবাব পত্র সোফার কুশন সহ অন্যান্য আসবাব পত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। পুরো ঘটনার সময় আসামী শিরিনের মা মালেকা বেগম বাসার বাহিরে দাড়িয়ে কেউ আসে কি না তা পাহারা দেয়। মৃত্যু নিশ্চিত হলে শাশুড়ি মালেকা বেগম ফরুকুলের মেয়েকে কোলে নিয়ে ও মোঃ ইউনুস হোসেন সুজন কে বাসা থেকে নিরাপদে চলে যাওয়ার জন্য স্ত্রী শিরিন আক্তার গেইট পর্যন্ত এগিয়ে দেয়। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই এ তদন্তাধীন আছে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন জানান, উল্লেখিত চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্তে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন শেষে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেছেন। আরও বেশ কয়েকটি আলোচিত মামলার তদন্ত কাজ চলছে, সে গুলোর কিছুদিনের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ হবে।

শেয়ার করুন