অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটে অচল মৌলভীবাজার জেলা

  • রহিমা আক্তার ডলি :
    অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটে অচল মৌলভীবাজার জেলা। মৌলভীবাজার বাস টার্মিনাল ও বাস কাউন্টার থেকে হানিফ,শ্যামলী,এনা ও দূরপাল্লার সকল প্রকার যানবাহন ছেড়ে যায়নি। পাশাপাশি উপজেলা শহরেও কোনো প্রকার যানবাহন চলাচল করেনি। এতে পরিবহন ধর্মঘটে কারণে দুর্ভোগে পড়েন পর্যটক ও সাধারণ মানুষ । অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও তারা যানবাহন সংকটের কারণে বাড়ি ফিরতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন মানুষ।
    শনিবার সকাল থেকে মৌলভীবাজার অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়। এসময় মৌলভীবাজার জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ ওয়াদুদ মিয়া জানান, তারা কোনো পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেননি। তবে নিরাপত্তার অভাবে মালিক সমিতির নির্দেশে যানবাহন বন্ধ রাখেন শ্রমিকরা। আমি নিজের গাড়ী নিয়ে হাফিজা খাতুন বিদ্যালয়ে সামনে গেলে শিক্ষার্থীরা আটকিয়ে দেয়। আমরা কিভাবে গাড়ী চালাবো। শিক্ষার্থীরা বাচ্চা ছেলেরা বুঝে না, হঠাৎ করে যদি গাড়ী ভেঙে দেয় তাহলে কি করার আছে। সরকার যদিও নিরাপত্তা দেয় তাহলে যানবাহন চালাতে পারি।’
    অন্যান্য যানবাহন চলতে বাধা দেয়া হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,আমরা কাউকে বাধা দিচ্ছি না। কেউ যদি তার গাড়ী চালাতে চাই, সে চালাতে পারে আমাদের কোনো আপত্তি নাই।’
  • কিন্তু সকাল ৯টার পর পরিবহন শ্রমিকরা অবস্থান নেন শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে। মৌলভীবাজার শহরের প্রবেশমুখ কোদালীরপুর এলাকায়, বাস টার্মিনাল, কুসুমবাগ পয়েন্টসহ কয়েকটি এলাকায় তারা অবস্থান নেন। এসময় তারা শহরমুখী যানবাহনগুলো অবরোধস্থলেই আটকে দেয়। ফলে যাত্রীরা হালকা যানবাহন নিয়ে শহরের এলেও পায়ে হেঁটে তাদের গন্তব্যে যেতে হয়।
    অন্যদিকে শনিবার সকাল থেকে ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের কোদালীপুল এলাকায় বাসের শ্রমিকরা সিএনজি অটোরিক্সাগুলোকে আটকিয়ে যাত্রী উঠাতে বাঁধা দিচ্ছেন।
  • অবস্থান নেওয়া পরিবহন শ্রমিকরা জানান, নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে তারা যানবাহন নিয়ে চলাচলকারী চালকদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। তবে- চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে না।
  • অপরদিকে শ্রীমঙ্গল ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো.শাহজাহান মিয়ার নেতৃত্বে শনিবার সকাল থেকে শ্রীমঙ্গল শহরের ভানুগাছ সড়ক, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার সড়কের বিচ্ছিন্নভাবে শহরমুখী যানবাহনগুলো অবরোধস্থলে আটকে দেয়া হয়। যারফলে পর্যটন নগরীতে সাধারণ মানুষের দূর্ভোগে পড়তে হয়।
  • বাস চলাচল বন্ধের কারণ জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৌলভীবাজার বাস মালিক সমিতির নেতা জানিয়েছেন, রাস্তায় বের হলেই শিক্ষার্থীরা বাস ভাঙচুর করবে। এতে মালিকরা লাখ লাখ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। তাই নিরাপত্তার অভাবে সকল প্রকার যানচলাচল বন্ধ রাখা হয়। তিনি আরো জানান, কেন্দ্র থেকে পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তাদের এ বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
    এদিকে শ্রমিকরা দাবি করছেন, বাস চালকদের মৃত্যদন্ডের বিধান রেখে সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের উদ্যোগের প্রতিবাদে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তাদের দাবি, রাস্তায় চলাচলের সময় দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। চালকরা এজন্য দায়ী নয়। সড়কে নিরাপত্তা না থাকার অজুহাতে জেলায় বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদ।
  • মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ্জালাল বলেন, ছাত্ররা ও পরিবহন শ্রমিকরা যার যার অবস্থানে আন্দোলন করেছে। তাদেরকে আমরা বুঝানোর চেষ্টা করছি। কোনো ধরণের নাশকতা ঘটাতে না পারে সেদিকে পুলিশ টিম কাজ করছে। চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীরা যেন রাস্তা ছেড়ে দেয়।’
শেয়ার করুন