কুয়েত প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফোরাম সিলেট বিভাগ কুয়েত’র উদ্যোগে রিয়াল এডমিরাল (অব:) মাহবুব আলী খানের ৩৪ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করা হয়েছে কুয়েত সিটিস্থ রাজধানী হোটেলের বলরুমে।
জাতীয়তাবাদী সিলেট বিভাগ কুয়েতের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফারুক আহমেদ এর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান রুমনের পরিচালনায় মঞ্চে উপস্হিত থেকে বক্তৃতা প্রদান করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাঈন উদ্দিন, বিশিস্ট ব্যাবসায়ী ও জালালাবাদ সমাজ কল্যান সমিতি কুয়েত’র সভাপতি হাজী জোবায়ের আহমেদ, কুয়েত রাজ্য বিএনপি’র সহ সভাপতি সোয়েব আহমেদ, জাতীয়তাবাদী ফোরাম সিলেট বিভাগের উপদেষ্টা আবুল হাসেম এনাম, উপদেষ্টা আবুল কালাম আজাদ, উপদেষ্টা শেখ নিজামুর রহমান টিপু, জাসাস কুয়েত রাজ্য শাখার সদস্য সচিব শফিক আহমেদ ও জাতীয়তাবাদী ফোরাম এর সাধারন সম্পাদক শিহাব বখ্ত ।
মরহুম মাহবুব আলী খানের উপর আলোচনা করেন – যুগ্ম সম্পাদক ফরহাদ আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক সুমন আনসারী, সহ-সভাপতি লিটন আহমেদ, সহ-সভাপতি শহিদ খাঁন এবং মহানগর বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।
বক্তারা আলোচনায় বলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগেই মাহবুব আলী খান পশ্চিম পাকিস্তানে চাকরিরত ছিলেন। তার স্ত্রী ও দু’কন্যাসহ মাহবুব আলী খান পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থান করছিলেন। তখন যুদ্ধের সময় মাহবুব আলী খানের দেশপ্রেম উপলব্ধি করে পাকিস্তান বাহিনী পরিবারসহ তাকে গৃহবন্দি করে।
দীর্ঘ ২ বছর বন্দিজীবন শেষে তিনি ১৯৭৩ সালে স্ত্রী ও দু’কন্যা বিন্দু ও বিনুসহ আফগানিস্তান ও ভারত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন।
১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে সিপাহী-জনতার বিপ্লবের পর জিয়াউর রহমানের সরকারের সময় নৌবাহিনী প্রধানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মাহবুব আলী খান তৎকালীন সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ও ছিলেন। তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের গড়া ‘জাগদল’ এর সদস্য ছিলেন। তিনি সরকারি চাকরিরত অবস্থায় জাগদল এ দায়িত্বশীল পদে আসীন হন। ১৯৮২ সালে দেশে সামরিক আইন জারিকালে অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খান উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত হন এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হন। ১৯৮২ সালের ১০ জুলাই থেকে ১৯৮৪ সালের ১ জুন পর্যন্ত তিনি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
রিয়াল অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের বাবা প্রথম মুসলিম ব্যারিস্টার আহমেদ আলী খান। যিনি ১৯০১ সালে ব্যারিস্টার হন। তিনি নিখিল ভারত আইন পরিষদের সদস্য (এম এল এ) ছিলেন।
১৯৮৪ সালের ৬ আগস্ট সকালে ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান ভূপাতিত হলে মাহবুব আলী খান সেই স্থান পরিদর্শনে যান। সে সময় তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হলে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি সেখানে মৃত্যবরন করেন। মাত্র ৪৯ বছর বয়সে এ দেশপ্রেমিক মহান নায়কের জীবনাবসান হয়। মাহবুব আলী খানের লাশ দেখে মনে হয়েছে এ মহান ব্যক্তির মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না।
পরে তার মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে একটি কমিটিও গঠিত হয়েছিল। কিন্তু সে তদন্ত কমিটি আজও কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি, যেখানে দেশের সেবাই ছিলো উনার ব্রত।
মিলাদ ও দোয়া মাহফিল সাব্বির আহমেদ এর কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু হয় এবং মৌলানা ফেরদাউস আহমেদ এর দোয়া ও মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে দোয়া -মাহফিলে শেষ হয়।
www.jalalabadbarta.com