ছোট বেলায় স্কুলে কখনো লেট করে যেতাম না। লেখাপড়া শেষ করে পরবর্তিতে যখন চাকুরীবাকুরী শুরু করলাম, তখনো অফিসে যেতে কোনদিন এক মিনিট লেট করতাম না। ছোট বেলা থেকেই অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল।
এখন ক্যানাডায় থাকি। এখানেও কখনো অফিসে লেট করে যাই না। কোন দিন যদি রাস্তায় কোন সমস্যা হয়; আন্দাজ করতে পারি যে, কয়েক মিনিট লেট হবে, তাহলে সাথে সাথে ফোন করে বলি, আই এম রানিং লেট ফর ফিউ মিনিটস। আগে ভাগে জানিয়ে দেই। কোন অসুবিধা হয়না। যে কারোর সমস্যা হতেই পারে। কিন্তুু টিমের অন্য সদশ্যদের সাথে যোগাযোগ থাকলে সেটা আর সমস্যা থাকেনা।
সময় মত অফিসে উপস্থিত হই বলে বাড়তি কিছু সুবিধা পাই। যেমন সবার ধারনা, আমি খুব পাংচুয়াল। কোন ভূল ক্রটি করলে সুপারভাইজর সহ অন্যান্যরা সহজে ক্ষমা করে দেয়। অনেক সময় অন্যান্যরা আমাকে মডেল হিসেবে উদাহরন দেয়। শুনতে ভাল লাগে। তাছাড়া নিজেও ব্যক্তিগতভাবে এ অভ্যাসের ফলে অনেক উপকার পেয়েছি। অনেক কাজ সহজে শেষ করতে পারি।
অবশ্য কেউ দাওয়াত দিলে সময় মত উপস্থিত হতে পারিনা। শুধুমাত্র দাওয়াত খাওয়ার সময় এটা ঘটে। পরিবার পরিজন নিয়ে যেতে হয়। পরিবারের অন্যসবার প্রস্তুুতি নিতে গিয়ে আর সময় ম্যানেজ করা সম্ভব হয়না। দেরীতে গিয়ে ঠান্ডা খাবার খেতে হয়। সাথে দুচারটা মশকরা সহ কথাও শুনতে হয়। এটা খারাপ দিক।
সময়মত উপস্থিত হওয়ার সাথে আসলে ব্যক্তিগত ও পেশাগত উন্নয়ন সরাসরি জড়িত।
যেমন, কোন জব ইন্টারভিউতে এক মিনিট দেরী করা মানে চাকুরী না হওয়ার সম্ভবনা বেশী। কারন ধরেই নেয়া হয়যে, এ লোককে চাকুরী দিলে ঠিক টাইমে অফিসে আসবেনা। অর্পিত দায়িত্ব ঠিক সময়ে শেষ করবেনা। সুতরাং এ লোক বাদ।
যিনি প্রায়শই মিটিং এ দেরী করে আসে, তিনি যে দায়িত্ব নেয়, তা ঠিক সময়ে ডেলিভারী দিতে পারেনা। তবে ব্যতিক্রমও আছে। কিন্তুু খুব কম।
সব কিছুতে দেরী করা ব্যক্তিদের দেখা যায় ব্যক্তিগত জীবনও আউলাঝাউলা। এরা দেরীতে ঘুম থেকে ওঠে। অনেকেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। সংসারও অগোছালো। পারসোনাল হাইজিনেও সমস্যা। অফিসের ডেস্ক এলোমেলো। ফাইলপাতি ঠিক নাই। ডিপ্রেসড্। কাপড়চোপরও ঠিক নেই। আর্থিক ব্যবস্থাপনাও এলোমেলো। অভাব সব সময় লেগেই থাকে।
শুধুমাত্র সময় ব্যবস্থাপনার অভাবে সব কিছু এলোমলো হয়ে পড়ে। ভাল জীবন যাপন করতে হলে ভাল সময় ব্যবস্থাপনা জরুরী। প্রকৃত সফল ব্যক্তিরা সময়ের ব্যাপারে খুবই সচেতন।