শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি॥ মৌলভীবাজারের সাবেক জেলা হিসাব তত্ত্বাবধায়ক (অডিট সুপারিটেনডেন্ট) আলহাজ্ব মো: আবদুর রউফ (৮০) আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার (১৮ আগস্ট) দুপুর ১.৩০ মিনিটের সময় শ্রীমঙ্গল কলেজ রোড বিরাইমপুর এর নিজ বাসভবন মমতা নিলয়ে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী দুই পুত্র, নাতি নাতনিসহ অসংখ্যা আত্মীয় স্বজন ও গুনাগ্রেহী রেখে যান। মরহুমের প্রথম জানাযা ওই দিন রাত বাদ এশা শ্রীমঙ্গল জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় এবং ২য় জানাযা উনার নিজ গ্রাম কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কানিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্টিত হয়। ২য় জানাজা শেষে পারিবারীক গোরুস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মরহুমের বড় ছেলে মোঃ গহুরুজ জামান ইকবাল স্বপরিবারে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এবং ছোট ছেলে মো: ওয়াহিদুজ জামান (জামান) শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক হবিগজ্ঞ শাখার ব্যবস্থাপক।
জানাযায়, মরহুম আলহাজ্ব মোঃ আবদুর রউফ জেলা হিসাব তত্ত্বাবধায়ক (অডিট সুপারিন্টেডন্ট) হিসাবে হবিগঞ্জ, ব্রাক্ষনবাড়ীয়া ও মৌলভীবাজারে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করে অবসর গ্রহণ করেন। উনার মৃত্যুতে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন শোক প্রকাশ করে মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছেন।
মরহুম আলহাজ্ব মোঃ আবদুর রউফের সংক্ষিপ্ত জীবনী থেকে জানাযায়, তিনি ২৮ শে জুন ১৯৩৭ ইংরেজী, ১৮ রবিউস ছানী ১৩৫৬
হিজরী রোজ সোমবার মৌলভীবাজার জেলার কুলাউরা উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কানিহাটি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। উনার পিতা মরহুম আবদুস সমদ আললাদাদ আশেয়াবাদ ও কালিকাবারী চা বাগানের ম্যানেজার ও সুপাররিনটেনডেন্ট দায়িত্ব পালন করেন এবং কানিহাটি বহুমুখী উচচ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। মরহুম জনাব আবদুর রউফ ১৯৫৯ ইং নয়াবাজার হাই স্কুল হতে মেট্রিক ও ১৯৬১ সালে সিলেট এম সি কলেজ হতে আই এ পাশ করেন। ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বি এ পাশ করেন। বি এ পাশ করার পর কিছুদিন তিনি মৌলভীবাজার জেলার শমশেরনগরের এ টি এম হাই স্কুলে কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। ১৯৬৪ সালে ভুমি মন্ত্রনালয়ের অধীন হিসাব নিয়ন্ত্রক রাজস্ব বিভাগে হিসাব পরীক্ষক (অডিটর) হিসাবে সরকারী কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মজীবনে তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও সততার সাথে ঢাকা, চট্টগাম , নোয়াখালী, ক´বাজার ও সুনামগঞ্জ দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে পদোন্নতির পেয়ে জেলা হিসাব তত্ববধায়ক (অডিট সুপারিটেনডেন্ট) হিসাবে হবিগঞ্জ, ব্রাক্ষনবাড়ীয়া ও মৌলভীবাজারে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৯ সালের আষার মাসে কুলাউড়া উপজেলার রাতগাও নিবাসী সরকারী মেডিকেল অফিসার মরহুম ডা: আবদুল কাদিরের কনিষ্ট মেয়ে মোছাম্মাদ রাহাত আরা বেগমের সাথে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন। দীঘ ৩৪ বছর সরকারী দায়িদ্ব সফলভাবে পালন করার পর ১৯৯৭ সালে অবসরগ্রহন করেন।
ওই বছরই তিনি পবিত্র হজ্বব্রত্য পালন করেন। তিনি অসবর গ্রহন পর শ্রীমঙ্গলের সুধীজনের অনুরোধে শ্রীমঙ্গলের সবনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দি বাডস রেসিরেনটসিয়্যাল মডেল স্কুল ও কলেজের অথনৈতিক উপদেষ্ঠা হিসাবে এক যুগ দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি পারাবারিকভাবে প্রতিষ্ঠিত কানিহাটি বহুমুখী উচচবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরো শ্রীমঙ্গল শাখার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উপদেষ্ঠা, বিরাইমপুর রহমানিয়া জামে মসজিদের কার্যকরী সদস্য ও সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের আজীবন সদস্য ছিলেন। এবং পাশাপাশি শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগার অবৈতনিক নিরীক্ষক হিসাবে দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেন।