আলহাজ্ব মোঃ মখলিছুর রহমান ডিগ্রী কলেজ এমপিও ভুক্তির ব্যবস্থা রয়েছে

মনজু বি: চৌ:॥এই কলেজটি সদর উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দুরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত। ২০১০ সালের ১ জুলাই মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১০নং নাজিরাবাদ ইউপির ইউসুফনগর (রাতগাঁও) গ্রামে এই ‘আলহাজ্ব মোঃ মখলিছুর রহমান কলেজ’টি প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজের শুভ উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। নিজের পিতার নামে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন দুই ভাই বিশিষ্ট শিল্পপতি এম এ রহিম সি.আই.পি. ও মুজিবুর রহমান মুজিব।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ‘আলহাজ্ব মোঃ মখলিছুর রহমান ডিগ্রি কলেজ’ সুশিক্ষার আলো ছড়াতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক ব্রিটিশ কাউন্সিলর ও একাধিকবারের ‘আলহাজ্ব মোঃ মখলিছুর রহমান ডিগ্রি কলেজ’এর প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষানুরাগী বিশিষ্ট শিল্পপতি, সাবেক ব্রিটিশ কাউন্সিলার,যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ সরকারের পাঁচ বারের সি.আই.পি এম এ রহিম কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় কলেজটি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতনসহ যাবতীয় খরচ,নিজস্ব পরিবহনের (বাসের) মাধ্যমে বাড়ি থেকে কলেজে যাতায়াতের ব্যয়ভার একাই বহন করছেন কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা কলেজের পাশাপাশি সমাজ কল্যাণের কাজে নিবেদিত হওয়ায় এবং তিনি এখন দেশে বসবাস করায় কলেজটির বিশাল ব্যয়ভার তাঁরপক্ষে একা বহন করা অনেকটাই কষ্টকর। প্রায় ২ একর জায়গার ওপর নির্মিত এই কলেজে রয়েছে তিনটি সুসজ্জিত ভবন। শিক্ষার্থীরা জ্ঞান চর্চা করার জন্য আছে একটি পাঠাগার। ডিজিটাল শিক্ষায় যুগোপযোগী করার জন্য একটি কম্পিউটার ল্যাব। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদেরকে কলেজে আনা-নেওয়ার জন্য সার্বক্ষণিক ২টি বাসও রয়েছে। কলেজের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদেরকে ইউনিফর্ম পর্যন্ত সরবরাহ করা হচ্ছে। যা শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বেও এমন কলেজ বিরল।
কলেজটিতে অধ্যয়ণরত প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী বিনা বেতনে ডিগ্রী পর্যন্ত পড়ানো এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিই দেশের মধ্যে অন্যতম দৃষ্টান্ত। কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ভালো ফলাফলের মাধ্যমে তার ঐতিহ্যবজায় রেখে চলছে।
প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ৪ তলা,৩ তলা ও ২ তলা বিশিষ্ট ভবন রয়েছে। তাছাড়া একটি সু-প্রশস্ত কম্পিউটার ল্যাব ও খেলার মাঠ রয়েছে। যার ফলে ১ম ব্যাচে ২০১২ সালে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় মোট ৭৩ জন ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৫টি জিপিএ ৫ সহ শতভাগ পাস করেছে। ২য় ব্যাচে ২০১৩ সালে ১০০ জন ছাত্রছাত্রী মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১টি গোল্ডেন জিপিএ-৫ ও ২টি জিপিএ-৫ সহ ৯৮ জন পাস করেছে। অর্থাৎ পাসের হার ৯৮%। ৩য় ব্যাচে ২০১৪ সালে ১৮১ জন ছাত্রছাত্রী মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪ টি জিপিএ-৫ সহ ১৭৫ জন পাস করেছে। পাসের হার ৯৭%। ২০১৫ সালে ১২৮ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে ১১২ জন ছাত্রছাত্রী উর্ত্তীণ হয়। পাসের হার ৯১%। ২০১৬ সালে ১৫৪ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে ৯৫ জন ছাত্রছাত্রী উর্ত্তীণ হয়। পাসের হার ৬২%,২০১৭সালে ১৩৫ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে ৯৫ জন ছাত্রছাত্রী উর্ত্তীণ হয়। পাসের হার ৭২%। ২০১৮ সালে ১৭২ জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয় ১৬৫ জন। পাসের হার ৯৬%। কলেজ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দিতে এই কলেজ কখনো পিছপা হয়নি। জন্মলগ্ন থেকেই শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে আসছে। দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে মেধাবী সমাজ গঠনে। দিনে দিনে বাড়ছে সাফল্য ও কাঙ্খিত অর্জন।
কলেজটির সার্বিক ব্যবস্থাপনা করেন তার আপন ছোটভাই মুজিবুর রহমান মুজিব। কলেজটিতে অধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন বরেণ্য শিক্ষাবিদ প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক।
দুই ভাই মিলে দিনরাত ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কলেজটিকে বর্তমানে এক মনোরম ও আনন্দদায়ক পরিবেশে শিক্ষার পাঠদানের সুব্যবস্থায় উপনীত করেছেন। প্রতিমাসে কলেজের জন্য ব্যয় করেন। যার ফলে প্রতি বছরই আসছে সন্তোষজনক ফলাফল। আলহাজ্ব মোঃ মখলিছুর রহমান ডিগ্রি কলেজ’ শিক্ষার্থীর জীবনকে সুন্দর আনন্দময় ও সম্ভাবনাময় করার লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিদ্ধ এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল ও উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
কলেজের সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন মুজিবুর রহমান মুজিব।
এম এ রহিম বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের তুলনায় সুবিধাজনক হলেও অনেকটা সীমাবদ্ধতায় আমাদের কলেজের বর্তমান একাডেমিক কার্যক্রম চলছে। এই সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমি যেসকল মেধাবী শিক্ষার্থী পেয়েছি যারা আমাদেরকে বিশ্বাস করে ‘আলহাজ্ব মোঃ মখলিছুর রহমান ডিগ্রি কলেজ’ -এ ভর্তি হয়ে আমাদের পরিকল্পিত পাঠদান ও পাঠ্যগ্রহণ পদ্ধতি অনুসরণ করেছে তারা শতভাগ সফলতার সাথে রেজাল্ট ভালো করে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
এই কলেজ যদি সরকারের সুনজরে নেয়া হয় এবং এমপিও ভুক্ত করা হয় তাহলে পরিকল্পিত নির্ভরযোগ্য পাঠদান ও পাঠ গ্রহণ পদ্ধতি উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল এবং উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ইউসুফনগর গ্রামকে আমরা শতভাগ শিক্ষিত একটি মডেল গ্রাম হিসেবে তৈরী করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের জন্য এটা আমাদের প্রাথমিক পদক্ষেপ। আমরা প্রমাণ করেছি যে, প্রবাসীরা চাইলে দেশের জন্য অনেক বড় অবদান রাখতে পারে। এভাবে দেশ ও জাতির কল্যাণে এগিয়ে আসার জন্য সকল বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানান।
জাতীয়করণ ও এমপিও ভুক্তির ব্যবস্থাও রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক, শুধীমহল ও সর্বস্থরের জনসাধারণের পক্ষ থেকে এখন দাবী উঠেছে কলেজটি সরকারিকরণের।

শেয়ার করুন