পর্যটন শিল্প বিকাশের কার্যকরী পরিকল্পনা নেই : ভাঙা রাস্তায় দুর্ভোগ বিদেশি পর্যটকদের

স্টাফ রিপোর্টার॥ নৈসর্গিক সুন্দরের অপরূপ লিলা ভুমি চায়ের রাজধানী খ্যাত পর্যটন নগরী মৌলভীবাজারকে ২০০৮ সালে পর্যটন জেলা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু অদ্যবধি পর্যটন শিল্প বিকাশের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। যার ফলে সরকার প্রতি বছর বড় অংক রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতাকে দায়ি করছেন পর্যটক বিশ্লেষকরা।

এ জেলায় মাধবকুন্ড জলপ্রভাত, লাউয়াছড়া, মাধবপুর লেইক, হামহাম জলপ্রভাত, চা বাগান ও একাত্তর বধ্য ভুমি সহ হাতেগুনা কয়েকটি পর্যটন স্পট ব্যতীত নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র দেশি-বিদেশী পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলার মতো কোনো উদ্যেগ গ্রহণ করা হয়নি। অথচ জেলায় চা-বাগান, হাওর বাওড়, পাহাড় ও সমতলের বৈচিত্র্যপূর্ণ জনপদ মৌলভীবাজারকে ঘিরে পর্যটনের অমিত সম্ভাবনা বিরাজ করছে। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা বিরাজ করছে। অথচ এই হাওরকে পর্যটন শিল্পের আওতায় নিয়ে আশার জন্য জেলা প্রশাসন কিংবা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ হাতে নেয়নি।

মৌলভীবাজার জেলার এই প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যকে বিবেচনা করে ২০০৮ সালের ১ জুলাই ‘এসো বাংলাদেশ গড়ি’ রোড শো উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান শফিক আলম মেহেদী মৌলভীবাজারকে পর্যটন জেলা হিসেবে ঘোষণা করেন। অথচ পর্যটক আকর্ষণ, পর্যটকদের পথনির্দেশনা, নিরাপত্তা, থাকা ও বিনোদনের জন্য পরিকল্পিত কোনো ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি।

জেলার বিভিন্ন উপাজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভাঙ্গা রাস্তায় অবর্ণনীয় দূর্ভোগের স্বীকার হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এমনকি বিদেশ থেকেও বেড়াতে আশা পর্যটকরা। ভাঙ্গা রাস্তার কারণে তাদের ঘুনতে হচ্ছে অধিক ভাড়াও। পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে অতিরিক্ত সময়। ১ ঘন্টার রাস্তায় সময় লাগছে দেড় থেকে দুই ঘন্টা। যার কারণে দর্শনার্থীরা সহজে জেলার পর্যটন স্পট গুলো ঘুরে দেখতে পারছেন না। অনেকেই একটি পর্যটন কেন্দ্রে গেলে অন্যটিতে যাওয়ার ইচ্ছা করছেন না। স্থানীয়দের অভিযোগ, একাধিকবার দাবি তুললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রাস্তা মেরামতের জন্য কোনো গুরুত্বই দিচ্ছে না।

বিষয়টি নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেড়াতে আশা একাধিক পর্যটকদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, মৌলভীবাজারের রাস্তা গুলো অনেকটাই যোগাযোগের অনুপোযোগী। সহজে প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া সম্ভব নয়। এজন্য অনেক পর্যটকরা বিগত বছরের মতো এখানে আসতে আগ্রহী নয়। তাদের দাবি, যোগাযোগ ব্যবস্থা আরোও উন্নত হলে পর্যটকদের উপস্থিতি দিগুণ হারে বাড়বে।

মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগ জানায়, তাদের অধিনন্থ ৪টি রাস্তা মেরামতের জন্য একনেক অনুমোদন দিয়েছে। এখন টেন্ডার আহ্বান করে কাজ শুরুর পালা। অন্যান্য রাস্তাগুলো মেরামতের জন্য চেষ্টা চলছে।

এবিষয়ে টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট কোর্সের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী কাজী মেজবাহুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তা জোরদার, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ও আবাসন ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করলে মৌলভীবাজার পর্যটন শিল্পকে আরোও একধাপ এগিয়ে নেয়া সম্ভব।

শেয়ার করুন