আব্দুর রব॥ বড়লেখার বর্নি এম. মুন্তাজিম আলী কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও কলেজ ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক প্রান্ত চন্দ্র দাসকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর পরিত্যক্ত ঘরের জানালার গ্রিলের সাথে বেঁধে রাখা হয়। ঘাতকরা আত্মহত্যার নাটক সাজালেও যে অবস্থায় তার লাশ পাওয়া গেছে তাতে কোন সুস্থ মানুষতো দুরের কথা পাগলও এটাকে আত্মহত্যা বলে মেনে নেবে না। প্রান্ত হত্যার প্রকৃত রহস্য উন্মোচন ও দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবীতে বর্নি ইউপি ও এম. মুন্তাজিম আলী কলেজ ছাত্রলীগ ও নিহত প্রান্ত দাসের সহপাঠীরা শনিবার দুপুরে কলেজ সম্মুখে দাসেরবাজার-ফকিরবাজার এলজিইডি সড়কে দুই ঘন্টা ব্যাপি মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেছে।
এর আগে ২ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় সুজানগরের আজিমগঞ্জ বাজারে স্থানীয় ছাত্রলীগের উদ্যোগে কলেজছাত্র প্রান্ত দাস হত্যার বিচারের দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বর্নি ইউপি চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা এনাম উদ্দিন, উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নারীশিক্ষা একাডেমি ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ একেএম হেলাল উদ্দিন, বর্নি ইউপি আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নিজাম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের হোসেন, আ’লীগ নেতা আব্দুল মালিক, ইউপি যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক শামীম আহমদ, ইউপি ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবুল কাশেম, ছাত্রলীগ নেতা ¯েœহাশীষ দাস, মিজানুর রহমান, কলেজ শিক্ষার্থী নাহিদ আহমদ, আব্দুস সামাদ, জাবের আহমদ, সাবিনা আক্তার, সাদিকা বেগম। বক্তারা বলেন, প্রান্তকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। লাশ উদ্ধারে আসা পুলিশ কর্মকর্তারাও ঘটনাটি খুন হিসেবে মন্তব্য করেন। তারা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও প্রকৃত খুিনদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলার বাঘমারা গ্রামের সনত চন্দ্র দাসের ছেলে প্রান্ত দাস (১৯) প্রায় ৬ বছর ধরে বর্নি ইউপির নয়াগ্রাম (মিহারী) গ্রামে পিসির বাড়িতে পিসাতো ভাই সুমন দাসের পরিবারের সাথে বসবাস করতো। সে বর্নি এম. মুন্তাজিম আলী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং ওই কলেজের ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক। পিসাতো ভাই সুমন দাস জানান, সোমবার (২৯ অক্টোবর) রাত থেকে প্রান্ত দাসের বড়ভাই শুভ দাসকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজেও তার সন্ধান মিলেনি। বুধবার (৩১ অক্টোবর) পরিত্যক্ত রান্নাঘরের জানালার গ্রিলের সাথে মুখ বাঁধা দন্ডায়মান অবস্থায় প্রান্ত দাসের লাশ পাওয়া যায়।
নিহত প্রান্ত দাসের বড়ভাই শুভ দাস অভিযোগ করেন তার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। প্রথমে বিষয়টি বুঝতে না পারলেও এখন সবকিছু পরিস্কার হয়েছে। তার নিখোঁজের আগেই ‘আমার ও মায়ের ফোনে সুমনের ছোটভাই সুজন দাস বিদেশ থেকে ফোনে হুমকি দিয়ে বলেছে, প্রান্তকে তাদের বাড়ি থেকে না সরালে তার লাশ বস্তাবন্দি করে সোনাই নদীতে ফেলে দেয়া হবে।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মু. আবু ইউসুফ জানান, লাশ উদ্ধারের পর সুমন দাস ও তার স্ত্রী নিভা দাসকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এব্যাপারে আপাতত থানায় ইউডি মামলা হয়েছে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বড়লেখায় কলেজছাত্রকে পরিকল্পিতভাবে খুনের দাবী পরিবার ও সহপাঠীদের হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন
শেয়ার করুন