শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) :
চায়ের রাজধানী হিসেবে খ্যাত পর্যটন এলাকা মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনটি মূলত আদিবাসী ও চা-বাগান পরিবেষ্টিত থাকায় এ আসনটি আওয়ামীলীগের ঘাটি হিসেবে পরিচিত। তাই এ আসন থেকে নৌকার মাঝি হতে অন্তত ৬ জনের নাম পাওয়া গেছে যারা ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়নপত্র ক্রয় করে জমা দিয়েছেন । অপরদিকে এখন পর্যন্ত ধানের শীষের পক্ষে মনোনয়নপত্র ১জন ক্রয় করার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনটি। চায়ের দোখান থেকে শুরু করে সর্বত্রই এখন আলোচনার বিষয় বস্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে। দুই উপজেলা নিয়ে ৮৫১ দশমিক ৮৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই আসনটি স্বাধীনতার পর থেকে বিতর্কিত দুই নির্বাচন ছাড়া সব নির্বাচনেই নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। তবে সর্বশেষ ২০১৪ সালের অনুষ্ঠিত নির্বাচনে এ আসনে বিনা ভোটে নির্বাচিত হন সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড.মো.আব্দুস শহীদ।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের সূত্রে জানা গেছে, দলীয় নেতা কর্মীদের বড় একটি বহর নিয়ে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র ক্রয় করে জমা দিয়েছেন, মৌলভীবাজার -৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনের টানা ৫ বারের সংসদ সদস্য ও সরকারী প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. মো.আব্দুস শহীদ। এছাড়াও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল আহাদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মনসুরুল হক ও জেলা পাবলিক প্রসিউকিউটর এডভোকেট এ এস এম আজাদুর রহমান ধানমন্ডির আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র ক্রয় করে জমা দিয়েছেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আছকির মিয়া মঙ্গলবার রাতে নয়া দিগন্তকে বলেন, আমার জানা বর্তমান এমপি ছাড়া শ্রীমঙ্গল থেকে সৈয়দ মনসুরুল হক ও কমলগঞ্জ থেকে অধ্যাপক রফিকুর রহমান মনোনয়নপ্রত্র ক্রয় করেছেন। তবে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জেনেছি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র ৬ জনে কিনেছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি হচ্ছে ধানমন্ডিতে এতো মানুষের ভিড় ছিল তাই সবার সাথে সাক্ষাত পাওয়াটা অনেক কঠিন ব্যাপার ছিল। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কে দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন সেটা নেত্রী ছাড়া আর কেউ বলতে পারবে না। আমাদের বিশ্বাস নেত্রী বর্তমান এমপি উপাধ্যক্ষ ড. মো.আব্দুস শহীদকেই চুড়ান্ত করবেন।
অন্যদিকে ৩ লক্ষ ৯৯ হাজার ১০০ জন ভোটারের এ আসনে নয়া পল্টনের বিএনপি কার্যালয় থেকে গত সোমবার দুপুরে বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব) বিএনপির মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন বলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. নুরুল আলম সিদ্দিকি মঙ্গলবার রাতে নয়া দিগন্তকে নিশ্চিত করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু বিএনপি একটি বড় দল তাই স্থানীয় বিএনপির মধ্যে কিছুটা মতভেদ আছে ঠিক, কিন্তু দলীয় সার্থে আমরা সবাই এক। তাই এখন পর্যন্ত এ আসন থেকে একমাত্র হাজী মুজিব ছাড়া আর কেউ দলীয় মনোনয়নপত্র ক্ষয় করার খবর আমার কাছে নেই। তিনি বলেন, সুষ্ট নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে আমাদের দলীয় প্রার্থীকে আমরা বিজয়ী করাতে পারব এ আসন থেকে।
কমলগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. দুরুদ আহমদ জানান, আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব) ২০০১ সালে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। এ নির্বাচনে তিনি প্রায় ১৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। এরপর ২০০৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেন। সর্বশেষ ২০০৮ সালের অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহন করে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন।
ছবির ক্যাপশন : ১. উপাধ্যক্ষ ড. মো.আব্দুস শহীদ, ২. আলহাজ মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব), ৩. অধ্যাপক রফিকুর রহমান, ৪. রনধীর কুমার দেব, ৫. সৈয়দ মনসুরুল হক, ৬. অধ্যক্ষ আব্দুল আহাদ চৌধুরী, ৭. এডভোকেট এ এস এম আজাদুর রহমান