নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও পুলিশ কর্মকর্তারা এক জোট হয়েছে। তারা ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে বৈঠকও করেছে। রিজভী বলছেন, বৈঠকের আলোচনায় মনে হয় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন থেকে কীভাবে দমন করা যায়, তারই ‘মহাপরিকল্পনা’ হয়েছে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ইসি ও পুলিশ কর্মকর্তাদের আলোচনায় এটি অত্যন্ত সুস্পষ্ট যে, দলীয় চেতনায় সাজানো পুলিশ কর্মকর্তাদের কোনো নড়চড় করবে না নির্বাচন কমিশন। সরকারের অনুকূলেই সমতল ভূমি নির্মাণ করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে ইসি। সে ক্ষেত্রে পুলিশ অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যেন না হয়। কারণ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ঐক্যফ্রন্টের বিজয় ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, সিইসি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সভায় বলেছেন, কোনো কর্মকর্তাকে বদলি করা হবে না। বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে বিতর্কিতদের সরানোর আহ্বানের বিপরীতে সিইসির এ ধরনের বক্তব্য দলবাজ কর্মকর্তাদের আরও বেপরোয়া করে তুলবে।
গায়েবি মামলার বিষয়ে রিজভী বলেন, এর আগে পুলিশ কমিশনার বলেছিলেন যে, তফসিল ঘোষণার পর গায়েবি মামলা দেওয়া হবে না। অথচ বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এখন অব্যাহতভাবে গায়েবি মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এই বৈঠকে একজন নির্বাচন কমিশনার সারা দেশে পুলিশের দায়ের করা গায়েবি মামলা করার বিষয়ে প্রবল আপত্তি তুললেও সেটিকে গ্রাহ্য করা হয়নি।
বিএনপি নেতা রিজভী আরও বলেন, আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু না হলেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় এলাকায় মাইকিং করে মাঠে ময়দানে সভা-সমাবেশ করে নৌকার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। গতকাল নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান বিশাল প্রচার সভা করেছেন, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নাজমুল হাসান পাপনের পক্ষে মাইকিং করে সমাবেশ অব্যাহত রাখা হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের এলাকায় যেতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ ‘সন্ত্রাসীরা’। তিনি বলেন, বিএনপি ঘরোয়া বৈঠক করতে চাইলে সেখানে চলছে সশস্ত্র হামলা। বিএনপির লোক ঘরের ভেতর সভা করতে পারছে না। আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনের চোখের সামনে বড় বড় সমাবেশ করছে, নৌকার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে, নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করে সারা দেশ আওয়ামী লীগের ফেস্টুন, ব্যানার ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে।
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইভিএম চাচ্ছেন। এই কারণে সিইসিও ইভিএম চাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী না চাইলে তিনি চাইতেন না। ইসি চাচ্ছে, কারণ তারা বর্তমান সরকারের আজ্ঞাবহ।
বিএনপি নেতা আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, এমরান সালেহ, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।