খ ম জুলফিকারঃ
মৌলভীবাজারে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বরাবরে দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরামের মৌলভীবাজার জেলা শাখার মৌলভীবাজার জেলা নির্বাচন অফিসার মঞ্জুরুল আলমের মাধ্যমে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। আগামী সংসদ নির্বাচনে দুর্নীতিবাজদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ ও ঋণ খেলাপী, বিল খেলাপীদের ঋণ সিডিউলের মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণ বাতিলসহ ৬ দফা সম্বলিত দাবীতে ২৫ নভেম্বর রোববার দুপুর ২ ঘটিকার সময় দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম মৌলভীবাজার জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ স্মারকলিপি প্রদান করেন। উক্ত স্মারকলিপি প্রদানে উপস্তিত ছিলেন, দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি মাহমুদুর রহমান, সহ-সভাপতি সাংবাদিক শ ই সরকার জবলু, সাংবাদিক দুরুদ আহমেদ, সহ সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মশাহিদ আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক চিনু রঞ্জন তালুকদার, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সাংবাদিক আব্দুল বাছিত খান, মোয়াজ্জিম চৌধুরী। স্মারকলিপিতে বলা হয়, ১৯৭২ সালে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) ঋণ খেলাপী ও বিল খেলাপীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের উপর যে নিষেজ্ঞা ছিল তা এখন পুরোপুরি বাস্তবায়ন দেশবাসী দেখতে চায়। এ ব্যাপারে ১৯৭২ সনের আরপিও ধারার অনেক কিছু সংশোধন করা হলেও সংশ্লিষ্ট ধারা কেউ বাতিল করতে পারেনি। কিন্তু ঋণ খেলাপী ও বিল খেলাপী নানা কারসাজি করে আইনটি পুরোপুরি অকেজো করতে পদে পদে বাধা সৃষ্টি করে চলেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তপশীল ঘোষণার পর এই মহলটি ফের তৎপর হয়ে উঠেছে। আইন অনুযায়ী কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইলে তাকে ব্যাংক ঋণ নিয়মিত করণ করতে হবে। যার শর্ত হলো মোট ঋণের অন্তত ১০% শোধ করা। ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বলা হয়েছিল মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার অত্যন্ত ৭ দিন আগে ঋণ পূর্ণ তপশীল করতে হবে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সেটি সংশোধন করে ঋণ খেলাপীদের কিছুটা ছাড় দিয়েছেন। প্রার্থীর ব্যক্তিগত ঋণ বিলের ক্ষেত্রে ৭ দিনের সময়সীমা ঠিক রাখলেও প্রতিষ্ঠানের জন্য মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার আগের দিন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, রাঘব বোয়ালদের ঋণ খেলাপীদের প্রায় সবাই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়েছেন। আইনগত এই ছাড় সত্বেও খেলাপী ঋণ গ্রহীতারা ঋণ পরিশোধ না করে ঋণ আদালতে মামলা ঠুকে নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে যান। অন্য সময় এ ঋণ নিয়ে দীর্ঘ আইনী সুযোগ থাকলেও তপশীল ঘোষণার পর সেটি থাকে না। বাংলাদেশের যে কোন নাগরিকদের অধিকার আছে নির্বাচনে অংশ নেয়া। কিন্তু সেটি কোন ভাবেই ১৯৭২ সালের আরপিও ধারাকে অগ্রাহ্য করে নয়। নির্বাচন কমিশন সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখবে বলে দেশের সচেতন জনগণ আশা প্রকাশ করেন। বিল খেলাপীদের ক্ষেত্রেও এই কথাগুলো প্রযোজ্য। ১। দুর্নীতি, রাহাজানি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজী খুনের মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের (প্রশ্নবিদ্ধ পদ্ধতিতে প্রত্যাহারকৃত, খারিজকৃত নিস্পত্তি মামলা সময় অন্তর্ভুক্ত) আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেশবাসী অযোগ্য ঘোষণা দেখতে চায়। ২। দুর্নীতিবাজদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ ও ঋণ সিডিউলের মাধ্যমে ঋণ খেলাপীদের সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ রদ রহিত করিতে হইবে। ৩। নির্বাচনে প্রার্থী ও প্রার্থীদের পরিবার-পরিজনের বিষয় সম্পত্তির হিসাব অবশ্যই দাখিল করত: প্রার্থী ও প্রার্থীর পরিবারের সদস্যদের আয়ের সাথে সংগতিহীন বিষয় সম্পত্তির অধিকারী হইলে তিনি অযোগ্য ঘোষিত হইবেন। ৪। গত ১০ বৎসর বা তদউর্ধ কাল যাবৎ দলীয় কাজে সংপৃক্ত আছেন বা দলের বিভিন্ন কাজে নেতৃত্ব দিতেছেন কেবল তাহারাই দলীয় প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হইবেন। ৫। সংসদ নির্বাচনে ৩ মাস পূর্বে নির্বাচনী এলাকায় দলীয় কাউন্সিল বা কনভেনশন করত: মনোনীত ব্যক্তি ছাড়া কেন্দ্র থেকে কাহাকেও দলীয় প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন প্রদান অবৈধ ঘোষণা করতে হবে। ৬। জাতীয় সংসদে ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করত: অধিকন্ত হলফনামায় প্রার্থীদের বিষয় সম্পত্তির হিসাব গণমাধ্যমে প্রদান ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বেলায় বাধ্যবাধকতা রহিত করতে হবে।