মৌলভীবাজারে সেচ দিয়ে কাজুরা বিল এর মাছ লুঠ

মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারে সদর উপজেলা প্রশাসনের যোগাযোগীমুলে সরকারের জলমহাল নীতিমালা অমান্য করে কাজুরা উন্নয়ন সংগঠনের নামে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও “কাজুরা বিল”এর মাছ লুঠ করেছে স্থানীয় একটি চক্র। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর পক্ষে আজ ২ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর দায়ীদের বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার দাবী জানিয়ে লিখিত ( ডকেটনং- ১১৬৬৫) আবেদন জানিয়েছেন ১২নং গিয়াসনগর ইউনিয়নের ভুক্তভোগী মোঃ নওরোজ মিয়া। সদয় অবগতি ও প্রয়োজণীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে- সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, মৌলভীবাজার মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও গিয়াসনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিস তহসিলদার। লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে- মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১২নং গিয়াসনগর ইউনিয়নের আনিকেলীবুদা গ্রাম নিবাসী মৃতঃ মেন্দি মিয়ার পুত্র আব্দুল মিয়া, আনিকেলীবড় গ্রাম নিবাসী মৃত- হারিছ মিয়ার পুত্র ছালিক মিয়া (বর্তমান ইউপি সদস্য ৩নং ওয়ার্ড), কাজুরা উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি আব্দুল মতিন খান, সাধারণ সম্পাদক সাবুদ্দিন মিয়া ও কোষাধ্যক্ষ নাজমা বেগমসহ অজ্ঞাতনামা লোকজন সরকারের জলমহাল নীতিমালার প্রযোজ্য শর্তাদি অমান্য করে গত ২৫/১১/২০১৮ইং পাম্প মেশিন এর মাধ্যমে সেচ দিয়ে “কাজুরা বিল” এর মাছ লুঠ করার কার্যক্রম শুরু করেন। ঘটনাটি জানতে পেরে স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে আপত্তি/প্রতিবাদ জানালে তারা বিনা বাক্যব্যয়ে সেচ দিয়ে মাছ ধরা কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। এ অবস্থায় গত ২৬/১১/২০১৮ইং মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামানকে বিষয়টি মৌখিকভাবে অবগত করেন এবং একইদিন মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঐদিন পুলিশ ফোর্সসহ মৌলভীবাজার মডেল থানার এস.আই নুরুল ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয় লোকজনকে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তাদেরকে সরকারী জলমহালে সেচদিয়ে মাছ লুঠ না করার জন্য অনুরুদ করেন। কিন্তু, মাছ লুঠকারীরা নিষেদ অমান্য করে উপজেলা প্রশাসনের যোগসাজশে একাধারে গত ২৫/১১/২০১৮ইং থেকে শুরু করে গত ১ নভেম্বর পর্যন্ত পাম্প মেশিন এর মাধ্যমে সেচদিয়ে জলমহাল শুকিয়ে মাছ লুঠ করেন। বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করলে ১২নং গিয়াসনগর ইউনিয়ন ভৃমি সহকারী কর্মকর্তা রাধা বিনদ পাল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে জলমহালে সেচদিয়ে মাছ লুঠ না করার জন্য অনুরুদ করেন। অপরদিকে, “কাজুরা বিল” এর মাছ লুঠকারীদের সাথে গোপনে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন ইউনিয়ন ভৃমি সহকারী কর্মকর্তা রাধা বিনোদ পাল । ফলে, মাছ লুন্টনকারীরা তাদের যোগাযোগীমুলে সেচদিয়ে জলমহাল শুকিয়ে মাছ লুঠ করেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামানকে একাধিকবার জনানোর পরও তিনি অদ্যাবধি কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উল্লেখ্য- বোরো মৌসুমে কাজুরা বিলের আওতাধীন আশ-পাশের জমিতে নওরোজ মিয়া, ছাদেক মিয়া, আসাদ মিয়া, কনর মিয়া, জয়তুন মিয়া, সুহেল মিয়া, সুনাই মিয়া, মকু মিয়া, ফিরুজ মিয়া, আনোয়ার মিয়াসহ প্রায় ১৪০- ১৫০ পরিবারের বোরো ধান উৎপাদন করে জীবন-জীবিকা চলে। এবং সেখানে প্রায় ১০ হাজার মন ধান উৎপাদন হয়। সেচ দিয়ে কাজুরা বিলটি শুকানো ফলে বোরো ধানের চারা রোপন করতে পারবেনা স্থানীয় লোকজন।

 

শেয়ার করুন