শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ দশ বছরে কোটিপতি!

 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :: সিলেট-৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি সরকারের শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এবারও তিনি একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাঁর মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন।

মনোনয়নপত্রের সাথে জমা দেয়া হলফনামা অনুসারে, গেল দশ বছরে নুরুল ইসলাম নাহিদের অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে এক কোটি ৩৬ লাখ টাকারও বেশি।

এবারের হলফনামা অনুসারে, নুরুল ইসলাম নাহিদের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে এক কোটি ৫৮ লাখ ১৬ হাজার ৯ টাকার।

২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যে হলফনামা দিয়েছিলেন নাহিদ, সেখানে তাঁর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২১ লাখ ৫৭ হাজার ৯১১ টাকা উল্লেখ করা ছিল। এ হিসেবে দশ বছরের ব্যবধানে তাঁর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে এক কোটি ৩৬ লাখ ৫৮ হাজার ৯৮ টাকা।

২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিসংখ্যান অনুসারে, তখন নাহিদের অস্থাবর সম্পদ ছিল ৯৮ লাখ ৩০ হাজার ৫৫০ টাকার। এ হিসেবে গেল পাঁচ বছরে তাঁর অস্থাবর সম্পদ ৫৯ লাখ ৮৫ হাজার ৪৫৯ টাকা।

নুরুল ইসলাম নাহিদের স্থাবর সম্পদের পরিমাণও বেড়েছে। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় নির্বাচনে নাহিদ তাঁর স্থাবর সম্পদের তালিকায় যৌথ মালিকানায় থাকা ৫ একর জমি ও ২ একরের বাড়ি দেখিয়েছিলেন। তখন তাঁর নামে পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের অকৃষি জমি ছিল। এরপর ২০১৪ সালে দশম জাতীয় নির্বাচনে নাহিদ স্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখান ৬৯ লাখ ১৮ হাজার টাকা। এবার একাদশ জাতীয় নির্বাচনে নাহিদ স্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন ৭২ লাখ ৭৮ হাজার ৪৩৮ টাকা। এ হিসেবে গত পাঁচ বছরে তাঁর স্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৪৩৮ টাকা।

হলফনামা অনুসারে, নুরুল ইসলাম নাহিদের পেশা ‘রাজনৈতিক কর্মী’। তাঁর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বাড়লেও আয় কমেছে। গত জাতীয় নির্বাচনে নাহিদ তাঁর বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ১৭ লাখ ৭২ হাজার ৩০০ টাকা। এবার তিনি আয় দেখিয়েছেন ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২০৫ টাকা। পাঁচ বছরের ব্যবধানে তাঁর আয় কমেছে এক লাখ ৪২ হাজার ৯৫ টাকা।

নাহিদ ২০১৪ সালে আয়ের খাত দেখিয়েছিলেন পেশা থেকে ১৭ লাখ ২২ হাজার ৩০০ টাকা এবং কৃষি থেকে ৫০ হাজার টাকা। এবার তিনি কৃষি খাত থেকে ৫০ হাজার টাকা, পেশা থেকে ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানতের সুদ বাবদ ৩ লাখ ২০ হাজার ২০৫ টাকা আয় দেখিয়েছেন।

গেল নির্বাচনে নাহিদ তাঁর যুক্তরাজ্য প্রবাসী ভাই ডা. নজরুল ইসলামের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। তবে এবার তিনি কোনো ঋণের তথ্য উল্লেখ করেননি।

হলফনামায় গেল নির্বাচনের মতো এবারও স্ত্রীর কোনো আয়ের কথা উল্লেখ করেননি নুরুল ইসলাম নাহিদ। তবে গেলবারের চেয়ে এবার তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে। ২০০৮ সালে তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ ছিল ৬ লাখ ৯ হাজার ৬৪৪ টাকার। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তাঁর স্ত্রীর ৫০ লাখ ১৭ হাজার ৮৪৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ ছিল। এবার তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ ৫৮ লাখ ১৭ হাজার ৩০ টাকার। দশ বছরের ব্যবধানে নাহিদের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৫২ লাখ ৭ হাজার ৩৮৬ টাকা এবং পাঁচ বছরের ব্যবধানে তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৭ লাখ ৯৯ হাজার ১৮৭ টাকার।

বি.এ. পাস নুরুল ইসলাম নাহিদের বিরুদ্ধে গেল নির্বাচনের আগে কোনো মামলা ছিল না। এবারও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই বলে উল্লেখ করেছেন।

শেয়ার করুন