পাঁচ বছরে কোটিপতি সাংসদ মতিন!

শাকির আহমদ, কুলাউড়া :: পাঁচ বছর আগেছিলো মাত্র ৪০ হাজার টাকা। এখন টাকার পরিমান কোটি ছাড়িয়েছে। দুটি দামী গাড়ির মালিক হয়েছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা ঠিকঠাক থাকলেও বদল হয়েছে পেশায়। এ অবস্থা আব্দুল মতিনের। তিনি মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের বর্তমান সাংসদ। আওয়ামীলীগের মনোনয়ন না পেয়ে তিনি এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা ঘেঁটে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে একটি হলফনামা জমা দিয়েছিলেন আব্দুল মতিন। তাতে শিক্ষাগত যোগ্যতা লিখেছিলেন এইচএসসি। এবারের একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জমা দেওয়া হলফনামায়ও তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতা একই লিখেছেন।

আগেরবার পেশার ঘরে আব্দুল মতিন লিখেছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। ওই পেশা বাবদ পাওনা সম্মানী বাবদ তাঁর বছরে আয় হতো ২ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের কাছে নগদ মাত্র ৪০ হাজার টাকা ছিলো। ব্যাংকে কোন টাকা থাকার কথা উল্লেখ করেননি। এর বাইরে স্ত্রীর নামে ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ৫ ভরি স্বর্ণালংকার, ৪০ হাজার টাকার বৈদ্যুতিক সামগ্রী এবং ৪০ হাজার টাকার আসবাবসামগ্রী ছিলো। যৌথ মালিকানায় তাঁর ৫ একর স্থাবর সম্পদ ছিলো।

এবারের হলফনামায় সাংসদ পেশা হিসেবে ‘কৃষি’ উল্লেখ করেছেন। তবে আয়ের কোন খাত দেখাননি তিনি। সাংসদ অস্থাবর সম্পদ হিসেবে তাঁর নিজের কাছে নগদ ৬০ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯৩ টাকা রয়েছে কলে উল্লেখ করেছেন। ব্যাংকে জমা আছে ৪৫ লক্ষ ১৯ হাজার ৪০৩ টাকা। গাড়ি আছে দুটি। একটির দাম ৫৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা অপরটির দাম ১৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। বাড়িতে ৮০ হাজার টাকা মূল্যের বৈদ্যুতিক সামগ্রী এবং ৭০ হাজার টাকা মূল্যের আসবাবসামগ্রী আছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন এই সাংসদ। স্থাবর সম্পদের বিবরণীতে তিনি নিজের নামে ৩৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা মূল্যের ১২৪ শতক কৃষি জমি, ৩৩ লক্ষ টাকা মূল্যের ৩৩ শতক অকৃষিজমি উল্লেখ করেছেন তিনি। সাংসদের কোন ঋণ বা দায় নেই বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।

পাঁচ বছরের ব্যবধানে এত সম্পদ বৃদ্ধির ব্যাপারে বক্তব্য জানতে চাইলে সাংসদ আব্দুল মতিন গণমাধ্যমকে জানান, সাংসদ হিসেবে তিনি প্রতি মাসে প্রচুর টাকা সম্মানী পান। এ ছাড়া সরকারী বিভন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। এ কারনে নগদ ও ব্যাংকে টাকা বেড়েছে। আয়ের টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছেন। সরকারীভাবে তিনি কিছু জমিও পেয়েছেন। এর পেছনে অন্য কোন কারন নেই বলে তিনি দাবী করেন।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মৌলভীবাজার-২ আসনে মহাজোট থেকে কোন প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক দেয়া হলে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন। অন্যতায় তিনি নির্বাচন করবেন।

শেয়ার করুন