সুমি বেগম:
টাঙ্গাইলের মধুপুরে কলেজ ছাত্রী হত্যার অভিযোগে ছয় দিন পর খুনের মামলা নিয়েছে পুলিশ। হত্যার অভিযোগে স্বামী, দেবর ও শ্বশুর-শাশুড়িকে বুধবার সন্ধ্যায় আটক করেছে পুলিশ। এরা হলেন নিহত কামরুন্নাহার ইতির স্বামী আব্দুল জলিল, শ্বশুড় মেছের আলী, শাশুড়ি জহুরা বেগম এবং দেবর জুয়েল হোসেন। এর আগে নিহতের বাবা আব্দুল কদ্দুস বুধবার রাতে বাদী হয়ে মধুপুর থানায় এ চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় বলা হয়, ধনবাড়ী উপজেলার বাগুয়া গ্রামের আব্দুল কদ্দুসের মেয়ে এবং গোপালপুর সরকারি কলেজে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার্থী কামরুন্নাহার ইতির সাথে গত মে মাসে মধুপুর উপজেলার ভট্রবাড়ী গ্রামের মেছের আলীর পুত্র আব্দুল জলিলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর যৌতুকের জন্য অত্যাচার শুরু হয়। ইতির কলেজ পড়ুয়া দেবর জুয়েল হোসেন প্রায়ই যৌন হয়রানি শুরু করে। পারিবারিকভাবে একাধিকবার সেটি নিয়ে বৈঠক হয়। স্বামী ও শ্বশুড়-শাশুড়ি যৌতুকদাবি ও দেবরের যৌন নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে ইতি স্বামীর কর্মস্থল ঢাকায় গিয়ে থাকার প্রস্তাব দেন। গত ৩০ নভেম্বর ইতি ঢাকা যাওয়ার জন্য বাসের টিকেট বুকিং দেয়। কিন্তু রাত সাড়ে দশটার সময় ইতির শ্বশুড়বাড়ির লোকজন ফোনে জানান, ইতি গাছে দড়ি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ইতির বাবা-মা ও আত্মীয়স্বজনরা গিয়ে দেখেন যে ইতিকে জামগাছ তলায় ওড়না দিয়ে ঢেকে শুইয়ে রাখা হয়েছে। গলায় কোনো ফাঁসের দাগ নেই। তবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড়ের চিহ্ণ রয়েছে। খুনের সুস্পষ্ট আলামত থাকা সত্ত্বেও ময়না তদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মধুপুর থানা পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকার করে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে পুলিশ বুধবার রাতে খুনের মামলা নেয়।
পরে পুলিশ হত্যার অভিযোগে স্বামী, দেবর ও শ্বশুড়-শাশুড়িকে বুধবার সন্ধ্যায় আটক করে।
উল্লেখ্য, খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে গত সোমবার ইতির শিক্ষক ও সহপাঠিরা গোপালপুর কলেজ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেন।
মধুপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, হত্যা মামলায় আটক চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।