![](http://jalalabadbarta.com/files/uploads/2018/12/moulvibazar-pressconfarence-1024x576.jpg)
গায়েবী মামলা প্রত্যাহার, গ্রেফতার, তল্লাশী ও পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে মৌলভীবাজারে ধানের শীষ প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন।
সাইফুল ইসলাম:
মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে পুলিশের রজু করা গায়েবী মামলায় গ্রেফতার, গভীর রাতে নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশী ও পুলিশি হয়রানির বন্ধসহ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের দাবী জানিয়েছেন মৌলভীবাজার-৩ (মৌলভীবাজার সদর-রাজনগর) আসনের বিএনপি মনোনিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবী জানান। একই সঙ্গে তিনি পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরকে একটি দলের পক্ষ না হয়ে দল নিরপেক্ষ থেকে কাজ করা আহবান জানান।
প্রয়াত অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র এম নাসের রহমান তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা আমার নির্বাচনী এলাকা মৌলভীবাজার ও রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রতিনিয়ত বিএনপি ও জোটের নেতাকর্মীকে ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দেখাচ্ছে। যাহা অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপক্ষ নির্বাচনের অন্তরায়। গত ৯ ও ১০ ডিসেম্বর জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিএনপি ও জোটের ২৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে এবং নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত নেতাকর্মীদের বাড়িতে মধ্য রাতে পুলিশী তল্লাশি অব্যাহত রেখেছে।
আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি,নির্বাচনে আমার দলের নিবেদিত নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ,সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শামীম আহমদ,আশরাফ আহমেদ,পৌর কাউন্সিলর আয়াছ আহমদ,স্বাগত কিশোর দাশ চৌধুরী,বায়েছ আহমদ,জেলা ছাত্রদল,যুবদল,স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি সম্পাদক সহ কয়েক শত নেতাকর্মীদের উপর মিথ্যা ও বানোয়াট গাবেী মামলা রজু করে আমার নির্বাচনী কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।
তিনি বলেন,আমাদের কাছে তথ্য আছে যে, মৌলভীবাজার মডেল থানায় ৭/৮ টিসহ জেলার অন্যান্য থানায় বেশ কয়েকটি গায়েবী মামলা করে গোপন রাখা হয়েছে। এধরনের গায়েবী মামলা সরকারের চরম দূর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। সরকার যে জনবিচ্ছিন্ন এই গয়েবী মামলাগুলি প্রকৃষ্ট উদাহরন।এখন আমাদের কোনও নেতাকর্মী বাসা বাড়ীতে থাকতে পারছে না। প্রধান নির্বাচন কমিশন, জেলা রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও এ পর্যন্ত বিএনপি ও জোটের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, হয়রানি ও তল্লাশী বন্ধ হয়নি।
২০ডিসেম্বরের পরে নাকি বড় বড় নেতাদেরও ঘরছাড়া থাকা লাগবে। তাদের নাকি সমস্যা হতে পারে। এই ধরনের আতংকবস্থায় নির্বাচন পৃথিবীর কোনও দেশে আর হয়েছে কিনা জানা নেই।
সাবেক এমপি নাসের রহমান অভিযোগ করেন,‘ভোটের দিন যাতে সাধারণ ভোটারগণ সেন্টারে ব্যাপক উপস্থিতিতি না থাকে সেজন্য সরকার দলীয় আওয়ামীলীগের নেতকর্মীরা গ্রামে গ্রামে ভোটারদের কাছে গিয়ে নানান ভয়ভীতি গুজব ছড়াচ্ছে। তারা(আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী) মাতে অবা নির্বাচনের দিন ভোটসেন্টারও ভেজাল অইব। মাইর লাগব।গন্ডগোল অইব। আপনারা বুইজ্ঝা শুইনন্যা সেন্টারও যাইওইন। পরিস্থিতি বুইঝ্ঝা সকালে যাওয়ার দরকার নাই বিকালে যাইওই বলে ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের ভয়ভীতির প্রচারণা চালাচ্ছে। কারণ তারা এখন বুঝতে পারছে তাদের পায়ের নীচে মাটি নাই। শহরের ও গ্রামগঞ্জের মানুষ এই অত্যাচারী ও জুলুমবাজ সরকারের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে ধানের শীষের সীল মারার জন্য উন্মুখ হয়ে অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছে’।
নাসের রহমান বলেন,‘একটি দল রাস্ট্রের এই পুলিশ ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে বানোয়াট মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে গায়েবী মামলা দিয়ে আবারো ক্ষমতায় যেতে চায়। দেশের জনগনের উপর যে তাদের আস্থা নেই,গায়েবী মামলা দিয়ে এটারই তারা বহি:প্রকাশ করেছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘এখন পর্যন্ত আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমাদের কোনও ঝামেলা হয়নি। তবে গত ১১ তারিখে দুপুরের দিকে রাজনগরের খেয়াঘাট বাজারে পুলিশের এক এ এসআইয়ের বাঁধায় ধানের শীষের পোষ্টার লাগেতে দেয়া হয়নি।
আওয়ামীলীগের লোকজনের সাথে মারামারি হবে এই ভয় দেখিয়ে তাদের ১০ জনের কাছ থেকে নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে। বুধবার সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গলে বিএনপির প্রার্থীর নির্বাচনী সভায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা পন্ড করে দিয়েছে।
শহরতলীর বিরাইমপুরে একটি নির্বাচনী সভার চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে তারা রীতিমতো তান্ডব চালায়। পুলিশকে জানানোর পরও কোনও সহায়তায় আসেনি বরং তাদের উপস্থিতিতেই এহেন কর্মকান্ড উৎসাহ যোগাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নাসের।
তিনি আরো বলেন,নির্বাচন বয়কট কে করবে। মানুষের যে গনজোয়ার ধানেরশীষের জন্য হয়েছে এটার জন্য আওয়ামীলীগই এই নির্বাচন বয়কট করবে কি না সেই ভয়ে আছি। পুলিশের গ্রেফতার ও হয়রানী করে বিএনপিকে এবার ঠেকানো যাবে না। কারণ জনগণ তাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য আমাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ। যত বাধা বিপত্তিই আসুক না কেন নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত জনগনকে নিয়েই আমরা মাঠে থাকবো।