ইতালী প্রতিনিধি, জালালাবাদবার্তা.কমঃ
সিলেটের আদি যুগ ধরে চলে আসা বর্ণমালা নাগরী শুধুমাত্র সিলেটেই সীমাবদ্ধ নয় তাহা ভারতের আসাম ও করিমগঞ্জের এক ঐতিহ্যবাহী বর্ণমালা। যুগের বদলে নতুন প্রজন্ম থেকে তাহা হারিয়ে যেতে বসছে, এজন্য আমাদেরই অগ্রজরা (Cambridge London www.Sylheti.org.uk) এই ঐতিহ্যবাহী নাগরী বর্ণমালার সাথে নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিতে বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য সহ বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বৃহত্তর সিলেটবাসীদের মধ্যে প্রচার করে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৯ই ডিসেম্বর ইতালীর রাজধানী রোমে জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালীর আয়োজনে সভাপতি অলিউদ্দিন শামীমের সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি মাহবুবুল কাদির ওয়েছ এর তত্ত্বাবধানে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সিলেটী বর্ণমালা নাগরী ভাষার বই মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন বাংলাদেশ সমিতি-ইতালীর সাবেক সভাপতি নূরে আলম ছিদ্দিকী বাচ্চু, এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সমিতি-ইতালীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ নায়েব আলী, বিশেষ অতিথি মহিলা-সম্পাদিকা সুমি ইসলাম, বৃহত্তর সিলেট যুব সংঘ ইতালীর সভাপতি আরমান উদ্দিন স্বপন, রোম বিডি স্পোটিং ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ রুহুল আমিন, সাধারন সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম পলাশ, মহিলা সংস্থা ইতালীর সহ-সভাপতি জেসমিন সুলতানা মিরা, প্রচার সম্পাদক সাহিনা মান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ খৃষ্টান মহিলা সমিতি-ইতালীর সভাপতি রোপালী গোমেজ, জালালাবাদ এসোসিয়েন ইতালীর সদস্য মোন্না হোসাইন, মিনহাজ হোসাইন, রুবেল আহমেদ, শাহিন আহমেদ, গোপালগঞ্জ সমিতি-ইতালীর সাংস্কৃতিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান সহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ। এছাড়া ইতালী, ভারত, চীন, ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়ান কমিউনিটির ব্যাক্তিবর্গের উপস্থিতি সকলের নজর কাড়ে। রোমের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের আনন্দ মুখর উপস্থিতি ছিলো চোঁখে পড়ার মতো, এসময় রোমের একজন ইতালীয়ান শিক্ষিকা বলেন, “আমরা সবাই প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অন্তত পক্ষে একটি করে নাগরী বর্ণমালার বই সংগৃহিত করে রাখবো”
সিলেটী নাগরী লিপির উদ্ভাবন হয়েছিল খ্রিস্টীয় চতুর্দশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে। বাংলাভাষার আদি নিদর্শন চর্যাপদ সিলেটের আঞ্চলিক (নাগরী) ভাষায় লিখিত। ৬০০ বৎসরের পুরোনো এ নাগরী লিপি।বৃহত্তর সিলেটবাসীর কাছে জনপ্রিয় এ লিপির চর্চা দেশ বিভাগের পর প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বাংলা সংস্কৃতির পুরোনো এ ঐতিহ্য সাধারণের মাঝে তুলে ধরতে চলছে নিরন্তর গবেষণা। বর্তমানে সিলেটসহ সারা বিশ্বে প্রায় দেড় কোটি মানুষের মুখের ভাষা হচ্ছে (নাগরী)সিলেটী। বর্তমানে অনেকেই নাগরী লিপির প্রচারে কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী ও লেখক ডঃ রেনু লুৎফা, যা আমাদের অনুপ্রাণিত করে।
আশা করি আমরা সবাই যার যার অবস্থান থেকে সচেষ্ট হলে নাগরী লিপি ফিরে পাবে তার হারানো ঐতিহ্য, আমারও ফিরে পাব আমাদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এ সম্পদকে।