নোয়াখালীতে বিএনপি প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন গুলিবিদ্ধ

  • নোয়াখালী প্রতিনিধি 
  • নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলায় বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলার সোনাইমুড়ি বাজারে নোয়াখালী-১ (চাটখিল ও সোনাইমুড়ি আংশিক) আসনের বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই প্রার্থী গুলিবিদ্ধ হন। তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নোয়াখালীর পুলিশ সুপার ইলিয়াস শরীফ এ খবর নিশ্চিত করেন।
  • এ ঘটনায় আরও তিন জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তারা হলেন– মাহবুব উদ্দিন খোকনের ব্যক্তিগত সহকারী বেগমগঞ্জ উপজেলার মিরওয়ারিশপুরের তাজুল ইসলামের ছেলে ইকবাল হেসেন রুবেল (৩৫), সোনাইমুড়ি উপজেলার নদনা ইউনিয়নের আবুল কাশেমের ছেলে মো. সোহেল (৩০) এবং একই উপজেলার সোনাইমুড়ি পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ভানুয়াই গ্রামের আনোয়ার হেসেনের ছেলে আলাউদ্দিন রাজু (২৭)। তারাও নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
  • কর্তব্যরত চিকিৎসক ফজলে রাব্বানী বলেন, ‘এএম মাহবুব উদ্দিন খোকনের পিঠে ৬টি ছররা (ছিটা) গুলি লেগেছে, সোহেলের ঘাড়ে লেগেছে দুইটি এবং রুবেলের পায়ে লেগেছে একটি। আহতদের শরীরে ছররা (ছিটা) গুলি রয়েছে কিনা তা পরীক্ষার জন্য এক্স-রে করা হয়েছে।’
  • প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল সাড়ে ৪টায় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সোনাইমুড়ি বাজারে নির্বাচনি লিফলেট বিলির সময় ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকদের কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও একপর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। পরে খবর পেয়ে সোনাইমুড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে। এসময় ব্যারিস্টার খোকনসহ চার জন আহত হন।
  • ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন অভিযোগ করেন, ‘সোনাইমুড়ি থানার পুলিশের উপস্থিতিতে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকেরা আমাদের ওপর হামলা চালায় এবং আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।’
  • তিনি আরও দাবি করেন, ‘সোনাইমুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মজিদ আমাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।’
  • সোনাইমুড়ি পৌর বিএনপির সভাপতি ও সোনাইমুড়ি পৌরসভার মেয়র মোতাহের হোসেন মানিক দাবি করেন, ‘আজ বিকালে বিএনপি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সোনাইমুড়ি কলেজ থেকে জনসংযোগ করে সোনাইমুড়ি হাইস্কুলে গিয়ে শেষ করার কথা। কিন্তু স্কুলে বিজয় দিবসের কর্মসূচি থাকায় পাশ্ববর্তী সিটি সেন্টারের সামনে গিয়ে শেষ হয়। কর্মসূচী শেষে করে নেতাকর্মীরা চলে যাওয়ার সময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ইকবাল হোসেন রুবেল ও মো. সোহেলসহ ৩ জন গুলিবিদ্ধ ও প্রায় ৫০ জন আহত হন। এর মধ্যে ৪ জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন এবং বাকি আহতরা বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।’
  • সোনাইমুড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাকের বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় ও দোকানপাট ভাঙচুর করে। এসময় আওয়ামী লীগের ২০ জন নেতাকর্মী আহত হন।’
  • এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য ওসি আবদুল মজিদের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
  • তবে পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফ  কাছে দাবি করেন, ‘পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ফাঁকা গুলি ছোড়ে। কাউকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেনি।’
  • এদিকে, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান একই আসনের বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রার্থী ও দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক।
শেয়ার করুন