খ ম জুলফিকারঃ
মৌলভীবাজারের রাজনগরে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৮শ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মুন্সিবাজার ইউনিয়নের একটি ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার রাজনগর সরকারি কলেজের প্রভাষক সেলিম আহমদ বাদী হয়ে ৬টি গ্রামের মানুষদের আসামি করে এই মামলা করেন। এ মামলায় পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে পুলিশের ভয়ে ওই এলাকা পূরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পুলিশ ও স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের সুনাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে ওই এলাকার গজনাইকান্দি, সুনাটিকি, সুপ্রাকান্দি, মিয়ারকান্দি, বড়পাথর ও পথেরগাঁও গ্রামের লোকজন ভোট দেন। গত রোববার ভোটগ্রহণ শেষে স্থানীয় লোকজন হট্টগোল করে। এতে গণনার জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যালট বাক্স বিদ্যালয়ের দোতলায় নিয়ে নিচের কলাপসিবল গেট বন্ধ করে ভোট গণনা করা হয়। এ সময় হট্টগোলের বিষয়টি প্রিজাইডিং অফিসার রাজনগর থানার ওসি শ্যামল বণিককে জানান।
তিনি ও ওসি (তদন্ত) দুটি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং প্রিজাইডিং অফিসার ফলাফল ঘোষণার জন্য কাগজ হাতে নিয়ে নিচে আসেন। পুলিশের যাওয়ার পরক্ষণেই ওই এলাকার বিএনপি সমর্থকরা পাকা সড়কে নৌকা তুলে রেখে বেরিক্যাড সৃষ্টি করে। বিষয়টি পুলিশ আঁচ করতে পেরে মালামাল নিয়ে ফিরে আসার জন্য গাড়িতে উঠতে গেলেই বিএনপি সমর্থকরা হামলা চালায়। এতে রাজনগর থানার ওসি শ্যামল বণিক, ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারসহ মোট ১৪ জন আহত হন। গুরুতর আহত ওসি শ্যামল বণিকসহ ৩ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ৫২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এ সময় হামলা চালিয়ে পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সরকারি মোবাইল ফোনটিও খোঁয়া যায়। এ ঘটনায় প্রিজাইডিং অফিসার রাজনগর সরকারি কলেজের প্রভাষক সেলিম আহমদ বাদী হয়ে ওই কেন্দ্রের ৬টি গ্রামের ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে ৮০০ জনকে আসামি করে মামলা (নং-২৮) করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এদিকে পুলিশের ভয়ে ওই এলাকার ৬ গ্রামের মানুষ পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। রাতের বেলা কেউই বাড়িতে থাকছেন না। স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, এখন বোরো মৌসুমের সময়। এ এলাকার লোকজন বোরো খেতে কাজ করেন। কিন্তু পুলিশের ভয়ে কেউ বাড়িতে আসছেন না। দিনে মাঝে মধ্যে বাড়িতে এসে আবারো চলে যাচ্ছেন। রাজনগর থানার উপ-পরিদর্শক শংকর নন্দি মজুমদার বলেন, মামলা হলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। পুলিশ নিয়মিত টহল জোরদার ও অভিযান চালাচ্ছে।