মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের গাছ চুরি শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে ভানুগাছ-শমশেরনগর সড়কের উদ্যানের মাগুরছড়া নামক স্থানে একটি টিলা থেকে ১১টি সেগুন গাছ কেটে নিয়েছে গাছচোর চক্র। ইতোমধ্যে বিভাগ কেটে ফেলা দুটি গাছের খন্ডাংশ ও ৩০ বান্ডিল গল্লাবেত উদ্ধার করেছে। তবে এসবে বনবিভাগের লোকজনের আতাত রয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
সরেজমিনে দেখা যায়, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের মাগুরছড়া এলাকার মুজিব উঠনি নামক টিলার বাগান হতে গত এক সপ্তাহে কয়েক দফায় গাছচোররা মেহগনি, চিকরাশি সহ কয়েকটি প্রজাতির ১১টি গাছ কেটে পাচার করে। ২৭ জানুয়ারী রবিবার দিবাগত রাতে একই টিলা হতে আরো দুইটি গাছ কেটে ফেলে চোরচক্র। পাশাপাশি একই স্থানের ঝোঁপঝাড় থেকে প্রায় হাজারো গল্লাবেত কর্তন করে আঠা বেধে পাচারের উদ্দেশে রেখে যায় চোরচক্র।
খবর পেয়ে বিভাগের লোকজন ২৮জানুয়ারী সোমবার সকালে কেটে রাখা দুইটি গাছের খন্ডাংশ ও ৩০ বান্ডিল গল্লাবেত উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত গাছ ও বতে পিকআপ যোগে লাউয়াছড়া বনবিট অফিসে নিয়ে যায়।
লাউয়াছড়া বনবিট কর্মকর্তা উদ্ধারকৃত গল্লাবেত ও কেটে ফেলা গাছের মূল্য নির্ধারণ করতে না পারলেও ধারণা করা হচ্ছে ৩০ বান্ডিল গল্লাবেত ও ১১টি গাছের বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে তিন লক্ষাধিক টাকা হবে। কেটে ফেলা এসব গাছের গুড়ায় বনবিভাগ লাল কালিতে ক্রস চিহ্ন দিয়ে রাখে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানিয়েছেন, লাউয়াছড়া বনবিটের পাহারাদার ও বিট অফিসারের যোগসাজশে আবারও গাছ চুরি সংঘঠিত হচ্ছে। এরআগে বেশ কিছুদিন গাছ চুরি বন্ধ থাকলেও আবার গাছ চুরি শুরু করে সংঘবদ্ধ গাছ চোরচক্র।
লাউয়াছড়া বনবিট কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, চোরচক্র গল্লাবেত কেটে ফেলার সংবাদ পেয়ে সাথে সাথেই অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো নিলামে বিক্রি করা হবে। অপরদিকে চিকরাশির কয়েকটি গাছ কেটে ফেলার পর সোমবার দু’টি গাছের খন্ডাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জনবল স্বল্পতার কারণে সবসময় সবক’টি স্থানে পাহারা দেয়া সম্ভব হয়না। তবে আর কোথাও গাছ চুরি হচ্ছে না এবং সেগুনসহ মূল্যবান প্রজাতির গাছ গাছালি রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। উদ্ধারকৃত গল্লাবেত ও গাছের বাজার মূল্য এখনও নির্ধারণ করা হয়নি বলে তিনি জানান।’
মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন সংরক্ষক আবু মোছা সামছুল মোহিত চৌধুরী বলেন, দু’টি গাছ কর্তনের সংবাদ পেয়ে সেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত গাছের খন্ডাংশ ও গল্লাবেত নিলামে বিক্রি করা হবে এবং এ বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।’