নিউজ ডেক্স, জালালাবাদবার্তা.কমঃ
কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছিলো একদল উশৃঙ্খল প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকরা। এই ঘটনায় দূতাবাসের কাউন্সিলর আসাদুজ্জামানসহ ৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গত ১৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে খালেদিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, স্থানীয় ‘লেসকো কোম্পানির’ তিন শতাধিক আকামাহীন (পরিচয়পত্র) শ্রমিক তাদের বকেয়া বেতন, থাকা-খাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবিতে দূতাবাসে অভিযোগ জানাতে আসে। এ সময় দূতাবাস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা না পেয়ে তারা উত্তেজিত হয়ে ভাংচুর চালায়।
এসব শ্রমিকদের প্রায় প্রত্যেকেই ধারদেনা ও ভিটা-বাড়ি বন্ধক রেখে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকায় ভিসা কিনে কুয়েতে এসেছেন বাংলাদেশে অবস্থান রত শ্র্রম ব্যবসার সাথে সম্পর্কিত আওয়ামীলীগের একটি অঙ্গসংগঠনের একজন শীর্ষ নেতার মাধ্যমে। কিন্তু এখানে এসে কাজ না পেয়ে তারা বুঝতে পারেন যে তারা দালালের খপ্পরে পড়েছিলেন। ভুক্তভোগী শ্রমিকরা বাংলাদেশ দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালামের কাছে দালালদের নাম, পাসপোর্টের কপি ও সিভিল আইডি নম্বরসহ লিখিত অভিযোগ দেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তাদেরকে কাজে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। ঘটনার এক পর্যায়ে কুয়েতে সাংবাদিক পরিচয় দানকারী এনটিভি সাংবাদিক মঈন উদ্দিন সুমন, যমুনা টিভির এহসানুল হক খোকনসহ আরো কয়েকজনের উস্কানিতে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন শ্রমিকরা। এরপর উত্তেজিত শ্রমিকরা দূতাবাসে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। দূতাবাসের টিভি, কম্পিউটারসহ আসবাবপত্রের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।
এদিকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয় এই দুই সাংবাদিক কে। তাদের গত ২০ জানুয়ারী (রবিবার) কুয়েত প্রশাশনের বিশেষ বাহিনী গ্রেফতার করে। প্রায় এক সপ্তাহ তাদেরকে হাজতে রাখা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর মুছলেখা দিয়ে বের হয়ে আসে সাংবাদিক প্ররিচয় দানকারী গ্রেফতারকৃত দুইজন।
এদের দুজনসহ তাদের সহযোগী আরো কয়েকজনের বিরুদ্দে নানা অভিযোগ রয়েছে প্রবাসীদের। এদের নানা কর্মকাণ্ডে প্রবাসী অনেকেই দূতাবাসের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। দূতাবাসের সাবেক একজন কর্মকর্তার আস্কারায় এরা ধরাকে সরাজ্ঞান করে প্রবাসীদের সাথে প্রতারনা করে আসছিলো এমনটা জানিয়েছেন কুয়েত প্রবাসী অনেক বাংলাদেশী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী বলেছেন, দূতাবাসের কাউন্সিলর আনিসুজ্জামান একজন সৎ ও নিষ্টাবান কর্মকর্তা। এই কর্মকর্তার উপর হামলাকারী ও তার দোসরদের এটি একটি পরিকল্পনা হামলার সাথে তুলনা করেছেন। হামলাকারী শ্র্রমিকসহ তাদের উস্কানিদাতা ও কোম্পানিটির চিহ্নিত ভিসার দালালদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন প্রবাসীরা।