শাকির আহমদ :: তথ্য ও যোগাযোগ যুক্তি বা আইসিটি (ইংরেজি: Information and communications technology (ICT) এমন এক ধরনের একীভূত যোগাযোগব্যবস্থা এবং টেলিযোগাযোগ, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও তৎসম্পর্কিত এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার, মিডলওয়্যার তথ্য সংরক্ষণ, অডিও-ভিডিও সিস্টেম ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত এমন এক ধরনের ব্যবস্থা যার মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী খুব সহজে তথ্য গ্রহণ, সংরক্ষণ, সঞ্চালন ও বিশ্লেষণ করতে পারেন।
আমাদের দেশে এই বিষয়টি নিয়ে অনেক শিক্ষক ইংরেজীতে বিভিন্ন শিক্ষামূলক ভিডিও কিংবা বই লিখেছেন। তবে এই বিষয়ের শিক্ষার্থীরা খুব একটা উপকৃত হতে পারছিলেন না। এইসব শিক্ষার্থীদের চিন্তা করে এগিয়ে আসলেন একজন আনিসুল ইসলাম নামে একজন শিক্ষক। ২০১০ সালে তিনি ভিডিও তৈরী শুরু করলেও ২০১৫ সালের অক্টোবর মাস থেকে তিনি নিজের ইউটিউব চ্যানেল ’Anisul Islam’ এ ধারাবাহিকভাবে প্রথমে ব্যাচেলর অফ সাইন্সের বিষয় এবং পরবর্তীতে আইসিটি বিষয়ক বিভিন্ন শিক্ষামূলক ভিডিও আপলোড করতে থাকেন। আইসিটি বিষয়কে অত্যন্ত সহজ উপায়ে ও সাবলীল ভঙ্গিতে বাংলা ভাষায় উপস্থাপনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে তিনি সারাদেশের লাখো শিক্ষার্থীর মন জয় করে নেন।
গত ১১ ফেব্রুয়ারী রাতে এই চ্যানেলটির সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছে যা এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১ লাখ ৩ শত ৬৫। এপর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ২ শত ৬০টি ভিডিও আপলোড করা হয়েছে এই চ্যানেলে। সিলেটের ইউটিউব চ্যানেল গুলোর মধ্যে ছায়াপথ, দ্যা বয়েজ গ্যাঙ ও গ্রিন বাংলা চ্যানেলের পরপরই এই চ্যানেলটির অবস্থান। আনিসুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামে।
আনিসুল ইসলাম লন্ডন স্কুল অব কর্মাস এন্ড আইটি থেকে (২০০৯-১২) বিএসসি এবং সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটি থেকে সিএসসি (২০১৩-১৭) কোর্স শেষ করেন। বর্তমানে তিনি জাফলং ভ্যালি বোডিং স্কুলে শিক্ষক হিসেবে রয়েছেন। এছাড়াও সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, কানাইঘাটের ঝিঙাবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজ সহ অনেকগুলো স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষকতা করেছেন ।
কিশোরগঞ্জ থেকে তরিকুল ইসলাম নামে একজন বলেন, অনেকেই আছেন যারা সেলিব্রিটি বা টাকা উপার্জনের জন্য ইউটিউবে চ্যানেল খুলেছেন। কিন্তু এমনো হাজারো মানুষ আছেন যারা ব্যক্তি স্বার্থের উর্দ্ধে থেকে সমাজের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে আনিসুল ইসলাম একজন। পর্দার আড়ালে তিনি নিরলসভাবে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।।
আমেরিকার নিউইয়র্ক থেকে মামুন আহমেদ সালমান জানান, এই এক লক্ষ সাবস্ক্রাইবারের মধ্যে আমি একজন সাবস্ক্রাইবার হতে পেরে সত্যিই আমি ধন্য।
বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা বলেন, আইটি সেক্টরে উচ্চতর ভাষা (Higher language) নিয়ে বাংলাতে আনিসুল ইসলাম স্যার এর ভিডিও ব্যতিত অন্য কারো ভিডিও নেই যার পরিপ্রেক্ষিতে স্যার জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন বুয়েট সহ বাংলাদেশের টপ শিক্ষা প্রতিষ্টানের ছাত্রছাত্রী দের কাছে। স্যার এর এই ভিডিও গুলো দেখে বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কম্পিউটার সাইন্স এর শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছে এবং স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তারা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এমন হাজারো শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন শিক্ষক আনিসুল ইসলাম।
এবিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক আনিসুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের সুবিধার্তে আমি ভিডিওগুলো তৈরী করেছি। অনেক প্রতিকূল পরিবেশে ভিডিওগুলো তৈরী করেছি। আমার পরিশ্রমে বানানো এইসব ভিডিও দেখে অনেক শিক্ষার্থী উপকৃত হচ্ছে, ভাবতেই ভালো লাগে। তিনি আরো বলেন. আমি চেষ্টা করবো ছাত্রছাত্রীরা যে অধ্যায়ে পড়তে ভয় পায় তা সহজ ভাবে তাদের সামনে তুলে ধরার। আমি আমার এই চ্যানেলে পাঁচ হাজার ভিডিও আপলোড করব যাতে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হয়। আমি চাই আমাদের এই বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে যাক এবং আশা করি আমার এই ভিডিও থেকে বেশির ভাগ লাভবান হবে যারা কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে পড়াশোনা করছেন।
তিনি বলেন, শিক্ষানবিশ ইউটিউব চ্যানেলগুলো যদি এগিয়ে আসে তাহলে আমি মনে করি প্রাইভেট আর কোচিং অনেকটাই কমে যাবে।
.