শ্রীমঙ্গলে রাবার গাছ প্রক্রিয়াজাতকরণে আয় ৩ কোটি টাকা

জীবনচক্র হারানো রাবার গাছের কাঠকে প্রক্রিয়াজাতকরণ করে ব্যবহার উপযোগী টেকসই কাঠে রূপান্তর করছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল বন শিল্প উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফআইডিসি)। আর এ কাজ করে এখানকার রাবার কাঠ প্রেসার ট্রিটমেন্ট প্লান্টে এক বছরে আয় হয়েছে ৩ কোটি টাকার বেশি। এর থেকে খরচ বাদে মুনাফা হয়েছে ২৪ লাখ টাকা।

শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের নোয়াগাঁওয়ে স্থাপিত এই প্লান্টটি ২০১৭ সালের ৮ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। আর রাজস্ব খাতের আওতাভুক্ত হয় গত বছরের জুলাইয়ে। প্লান্টটিতে প্রতিদিন ১৬০ ঘনফুট হিসেবে বছরে ৪৮ হাজার ঘনফুট কাঠ প্রক্রিয়াজাত করতে সক্ষম।

এখানে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ বছরে রাবার গাছ প্রক্রিয়াজাত হয়েছে ৩৪ হাজার ঘনফুট। যা বিক্রি করে আয় হয়েছে ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পাধীন অবস্থায় প্রক্রিয়াজাত করা হয় ২ কোটি টাকা মূল্যের ২৩ হাজার ঘনফুট কাঠ। আর জুলাইয়ে রাজস্ব খাতের আওতায় আসার পর গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ কোটি ৩১ লাখ টাকার ১১ হাজার ঘনফুট কাঠ প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এ থেকে মোট মুনাফা হয় ২৪ লাখ টাকা।

রাবার বাগান থেকে ট্রিটমেন্ট প্লাট পর্যন্ত পৌঁছতে এক ঘনফুট কাঠের জন্য খরচ হয় ৩০০ টাকা। এর থেকে প্রতি ঘনফুটের জন্য ১৭৩ টাকা পায় রাবার বাগান কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া প্রক্রিয়াজাতে খরচ হয় আরো ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। ফলে চূড়ান্ত পর্যায়ে ঘনফুট প্রতি প্রক্রিয়াজাত রাবার কাঠের মূল্য দাঁড়ায় ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। যা ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

বিএফআইডিসির আওতাধীন শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁও, কুলাউড়ায় ভাটেরা ও হবিগঞ্জের বাহুবলের রুপাইছড়া, শাহজীবাজার ৪টি রাবার বাগান রয়েছে। এসব বাগানের প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার রাবার গাছের অর্থনৈতিক জীবনচক্র হারানো গাছ সাইকেলে ইতিমধ্যে মধ্যে শেষ হয়েছে। জ্বালানি হিসেবে গাছগুলো বিক্রি করলে এর মূল্য হতো প্রায় ৪ কোটি টাকা। তবে ট্রিটমেন্ট প্রক্রিয়ায় আনার কারণে গাছগুলোর বাজারমূল্য ৭৪ কোটিতে গিয়ে দাঁড়াবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এখানে অবকাঠামোর মধ্যে এক সেট বয়লার, ৮টি সিজনিং চেম্বার, ২ সেট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও চারটি কাঠচেরাই মেশিন রয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ এখনো সম্পন্ন হয়নি। ৬০ জনের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ২৮ জন।

ট্রিটমেন্ট প্লান্টের জেনারেল ম্যানেজার জামিল আক্তার বকুল বলেন, রাবার গাছ সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করা গেলে দারুণ টেকসই হয়। যা সেগুন কাঠের মতো আসবাব শিল্পে ব্যবহার করা যায়। তাদের প্রক্রিয়াজাত কাঠ বিএফআইডিসির বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান কিনে থাকে।

সক্ষমতার ঘাটতি সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রথমে পরীক্ষামূলক প্রকল্প হিসেবে এটি চালু করা হয়। মাঝখানে রাজস্ব খাতে যাওয়ার পর লোকবল নিয়োগসহ বিভিন্ন কারণে সময় নষ্ট হয়েছে। তবে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে আমরা পূর্ণ সক্ষমতায় আছি।

শেয়ার করুন