মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে মেডিকেল সনদ নিয়ে চলছে রমরমা বাণিজ্য। বড় অংকের টাকার বিনিময়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ছাড়াই চলছে সনদ বিক্রি। সনদ বিক্রির অলিখিত একটি ফি নির্ধারণ করে দিয়েছেন প্রধান সহকারী মুহাদ্দিস বক্স চৌধুরী। মুহাদ্দিস বক্স চৌধুরী’র দূরাত্বে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন পুরো জেলাবাসী। বিশেষ করে প্রবাসী অধ্যুষিত এজেলার বিদেশগামীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভের অন্তনেই।
সরকারি চাকুরি, জন্ম সদন, বিদেশগামী, এফিডেভিট ও সরকারি/বেসরকারি ট্রেনিংসহ নানা প্রয়োজনে সিভিল সার্জন অফিস থেকে মেডিকেল সনদ নিতে হয় প্রতিনিয়ত। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুহাদ্দিস বক্স চৌধুরী চালিয়ে যাচ্ছেন রমরমা বাণিজ্য।
জানা যায়, ২০০৫ সালে মৌলভীবাজার অফিসে যোগদান করেন মুহাদ্দিস। যোগদানের পর থেকে অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি। এর কারনে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নানা অপরাধে ২ বছর কারাভোগ করেনও তিনি। কারাগার থেকে বের হয়ে ফের চাকুরিতে যোগদানের কিছু দিনের মাথায় বেপরোয়া হয়ে উঠেন মুহাদ্দিস। এ জেলায় টানা ১৪ বছরের চাকুরির সময়কালে সহজ সরল মানুষের সরলতাকে কাজে লাগিয়ে হয়েছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মৌলভীবাজার টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে ড্রাইভিং ট্রেডে ভর্তি পরীক্ষায় ১২৩ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করেন এবং প্রত্যেককে আবেদন ফরমের সাথে সিভিল সার্জন অফিস কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়। সিভিল সার্জন অফিসে মেডিকেল সার্টিফিকেট নিতে পৌর শহরের কাজিরগাঁও এলাকার ওবায়দুল হক ইমন আসলে তার কাছ থেকে ৫’শ টাকা রেখে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ছাড়াই মেডিকেল সনদ দেন মুহাদ্দিস। একই কাজে হয়রানির স্বীকার হন পৌর শহরের শাহ মোস্তফা রোডের বাসিন্দা ফারুক। একটি সূত্র জানায়, আবেদনকারী অধিকাংশ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা আদায় করেন মুহাদ্দিস। প্রতিবেদক পরিচয় গোপন রেখে রোববার সকালে সরেজমিন সিভিল সার্জন অফিসে গিয়ে মেডিককেল সনদের জন্য মুহাদ্দিস বক্স চৌধুরীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, সোমবার সকালে কাগজপত্র নিয়ে আসেন কম টাকার মধ্যে করে দিব। কত টাকা আপনাকে দিতে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হাজার দেড়েকের মধ্যে হয়ে যাবে। নাম গোপন রাখার শর্তে সদ্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের এক শিক্ষক বলেন, চাকুরিতে যোগদানের সময় সিভিল সার্জন অফিস থেকে ৫’শ টাকা দিয়ে মেডিকেল সনদ এনেছি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান সহকারী মুহাদ্দিস বক্স চৌধুরী বলেন, ২০০৭ সালে অকারণে কারাগারে ছিলাম। মেডিকেল সনদে আপনি অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এখন সিলেটে আছি পরে আপনার সাথে কথা বলছি।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ শাহাজাহান কবীর চৌধুরী বলেন, এগুলো আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।