মৌলভীবাজার  কাল বৈশাখী ঝড়ে শতাধিক বাড়ি ঘর বিধ্বস্ত ! তিন ঘন্টা রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল 

 

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি.
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড়ে উপজেলার পতনউষার,সমশেরনগর, মুন্সিবাজার ও পৌরসভার এলাকায় শতাধিক ঘর বিধস্ত হয়েছে।
উপড়ে পড়েছে হাজারো গাছ পালা।  ১১ কেভির ১০০টি স্থানে গাছ ভেঙে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে।
কমলগঞ্জ-কুলাউড়া  সড়কে শমসেরনগর এয়ারপোর্ট রোডে ব্যাপক পালা গাছ পড়ায়  সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

 

এছাড়া লাউয়াছড়া পাহাড়ে রেল লাইনের ওপর গাছ পড়ায় রেল যোগাযোগ  বিকেল ৩ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত  বন্ধ থাকার পর পূনরায় রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।
এতে ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস ও সিলেটগামী আন্তনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া রেল ষ্টেশনে আটকা ছিল। বিদ্যুৎ লাইন লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার করণে বিদ্যুৎহীন পড়ে পুরো কমলগঞ্জ উপজেলা । এছাড়া বজ্রাঘাতে এক কৃষকের ৪০ হাজার টাকা দামের মহিষ মৃত্যু হয়েছে।
জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার  ঝড়ে পতনউষার  ইউনিয়নে পতনউষার,শ্রীরামপুর,চন্দ্রপুর, ধোপাটিলা, রসুল পুর,বৃন্দাবনপুর, দক্ষিনপল্কীসহ ১০টি গ্রামের বাড়িঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
রাস্তার গাছপালা উপড়ে পড়ে। পতনউষারের বিভিন্ন এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ এর ১১ কেভি লাইন ছিড়ে পড়েছে। এছাড়া পতনউষার গ্রামের আলাল মিয়া, দক্ষিনপল্কী গ্রামের বিধবা  মহিলা আগুরী বিবিসহ  প্রায় ২০টি বাড়ি ঘর সম্পূর্ণ বিধস্ত হয়।
অপরদিকে, একই সময় সমসেরনগর, মুন্সিবাজার ও কমলগঞ্জ পৌরসভায় ঝড়ে প্রায় শতাধিক ঘর সম্পূর্ণসহ শতাধিক বাড়িঘর বিধস্ত হয়।  

 

কমলগঞ্জ আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজে আধাপাকা একাডেমিক ভবনের টিন ছাউনিসহ পৌরসভার ৫, ১, ২ নং ওয়ার্ডের ঘরের টিন উড়িয়ে নিয়েছে। কয়েক শতাধিক গাছ পালা উপড়ে পড়েছে। গ্রামঞ্চলের  বিদ্যুত এর তার ছিড়ে পড়েছে। ৩টি ইউনিয়নে শতাধিক ঘর আংশিক বিধস্ত হয়েছে। এছাড়া প্রায়  শতাধিক স্থানে বিদ্যুৎ লাইনের তার ছিড়ে পড়েছে। ঝড়ে বেশি গাছপালা বিধস্ত হয়েছে সমসেরনগর এলাকায়। বিমান ঘাটি এলাকার কুলাউড়া সড়কের উপর অধর্শতাধিক গাছ পালা ভেঙ্গে পড়ে। রাঙ্গাটিল গ্রামের জুবের আহমদের একটি ভেঙ্গে পড়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নারায়ন মল্লিক সাগর জানান, আমার ইউনিয়নে ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত  হয়েছে।
 শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাষ্টার মো.সাখাওয়াত হোসেন জানান,কাল বৈশাখী ঝড়ে লাউয়াছড়া উদ্যানে রেললাইনে  গাছ পড়ে  আন্তঃনগর  পারাবত  ও জয়ন্তিকা এবং পাহাড়িকা ট্রেন আটকা ছিল। সন্ধ্যা ৬টার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কমলগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম মোবারক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে  জানান, ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। প্রায়  শতাধিক স্থানে বিদুৎতের  তার ছিঁড়ে গেছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে দুইদিন লেগে যাবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমর্কতা মো. আছাদুজ্জামান বলেন, তিনি সরেজমিনে  ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন। ঘরের তালিকা দেয়ার জন্য চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত সুমি আক্তার বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা আসলে পরে ব্যবস্থা করা হবে। তাদের খোজ কবর রাখছেন।
অপরদিকে জেলার কুলাউড়া,বড়লেখা ও জুড়ি, রাজনগর, শ্রীমঙ্গল এবং মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় কাল বৈশাখী ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
শেয়ার করুন