বড়লেখা প্রতিনিধি.
বড়লেখায় প্রতিবেশির বসত বাড়ির একাংশ ও চলাচলের রাস্তা জবর দখলে ব্যর্থ হয়ে প্রভাবশালীরা সাজানো মামলা দিয়ে ৫ দরিদ্র পরিবারের ১৩ সদস্যকে দীর্ঘদিন ধরে হয়রানী করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মামলা-হামলার ভয়ে দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ১ মাস ধরে তাদের বসতঘর তৈরীর নির্মাণ সামগ্রী খোলা আকাশের নিচে নষ্ট হচ্ছে।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবারগুলো সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিওসি কেছরিগুল স্কুলটিলা (ডিমাই) গ্রামের মৃত ইশাদ আলীর আশিয়োর্ধ বিধবা স্ত্রী মমতা খাতুন প্রায় ৩ বিঘা ভুমিতে ৪০-৫০ বছর ধরে ছেলে তাজউদ্দিন, বিধবা মেয়ে আফতারুন নেছা আতাইসহ নাতি নাতনি নিয়ে বসবাস করছেন। হতদরিদ্র বিধবা মমতা খাতুনসহ ৫ পরিবারের লোকজনের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তায় গত ৬ মার্চ হঠাৎ প্রভাবশালী প্রতিবেশি মিনাহাজুল ইসলাম মাতাব ও তার ভাই সুরমান আলী পাকা দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করেন। অপর অংশে কলাগাছ ও সুপারি গাছ রোপন করতে থাকলে বৃদ্ধা মমতা খাতুন, মেয়ে বিধবা আফতারুন নেছা আতাই, আলাউদ্দিনসহ আত্মীয়-স্বজনরা কাজে তাদেরকে বাঁধা দেন। এসময় প্রভাবশালী মিনহাজুল ইসলাম মাতাব ও তার ভাই সুরমান আলীর নেতৃত্বে দা-লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে তাদেরকে রক্তাক্ত জখম করেন। এ ঘটনায় আহত আফতারুন নেছা আতাই প্রভাবশালী মিনহাজুল ইসলাম মাতাব, সুরমান আলী গংদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
সরেজমিনে গেলে গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বি ফখরুল ইসলাম, মইজ উদ্দিন, আব্দুস শুকুর, আব্দুল গনি, বেলাল আহমদ প্রমূখ জানান, আফতারুন নেছা আতাইর মামলার কাউন্টার দিতেই প্রভাবশালী মিনহাজুল ইসলাম মাতাব কোন ঘটনা ছাড়াই গত ২৬ মার্চ কাল্পনিক মারামারির একটি ঘটনা সাজিয়ে গত ২৯ মার্চ হতদিরদ্র আলাউদ্দিন, আব্দুল আজিজ, আব্দুল মারুফ, আব্দুল কাদির, বাদল আহমদ, জুয়েল আহমদ, বিধবা আফতারুন নেছা আতাইসহ দরিদ্র ৫ পরিবারের ১৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলা করেন। মামলায় উল্লেখিত অনেক স্বাক্ষী ঘটনা শুনে রীতিমত হতবাক। এলাকার লোকজন জানান একজন অসহায় বিধবা মহিলার ভুমি জোরপুর্বক দখলের পায়তারা করল প্রভাবশালী মাতাব, সুরমান গংরা। এখন দেখি উল্টো অসহায় মহিলা আতাই ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা। এ মিথ্যা হয়রানিমুলক মামলার বিরুদ্ধে তারা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আতাই বেগমের মা মমতা খাতুন জানান, মেয়ে, নাতি-নাতনি ও স্বজনদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় ও আরো মামলা মোকদ্দমা করার হুমকি-ধমকিতে কেউ বাড়িতে থাকছে না। এতে নতুন বসতঘর তৈরীর মালামাল পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) সিরাজ উদ্দিন জানান, উভয় পক্ষ একে অপরের প্রতিবেশি। রাস্তা ও ভুমি নিয়ে বিরুধের জেরে দুইপক্ষই থানায় পাল্টা-পাল্টি মামলা করেছেন। মামলায় উল্লেখ করা সব অভিযোগ সত্য নয়। তিনি উভয় মামলার অপোস মীমাংসার চেষ্টা চালাচ্ছেন।