মনজুরুল করিম তালাশ ইন্ডিপেনডেন্ট টিভি.
দুপুর পৌনে ২টার দিকে বাসা থেকে বের হলাম। গন্তব্য, মাওয়া ঘাট। মূল সড়কের যানজট এড়াতে মোহাম্মদপুর দিয়ে বেরিবাঁধে উঠে পড়লাম। উদ্দেশ্য সরাসরি বাবুবাজার ব্রিজে পৌঁছানো। একেবারে কাছাকাছি জায়গায় পৌঁছে গেলাম। ব্রিজের দূরত্ব আর খুব বেশি হলে ১ কিলোমিটার হবে।
শোয়ারী ঘাট থেকে শুরু হলো ভয়ংকর যানজট। এরপর মিটফোর্ড পার হলেই ব্রিজে উঠতে পারি। কিন্তু গাড়ি এক ইণ্চিও নড়ে না। মাওয়াতে যাওয়ার আশা ততক্ষণে দুরাশায় পরিণত হয়েছে। কোন রকমে ফিরে আসতে পারলে বাঁচি।
ব্রিজে না উঠে আমরা ফেরার পথ ধরলাম। ইংলিশ রোড থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত- সবকিছু যেন থমকে আছে। কোনরকমে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢুকতে পেরে ভাবলাম- বেঁচে গেলাম।
কিন্তু না, টিএসসির মোড় থেকে শুরু হয়েছে শাহবাগমুখী যানজট। নীলখেতের রাস্তা যখন ধরলাম তখন আর ফেরার পথ নেই। বললাম- দড়ির খাঁচা ছিড়ে এসে লোহার খাঁচায় আটকে গেলাম।
পরের প্রতিটি মুহুর্তের গল্পই এক। বাসায় যখন পৌঁছালাম তখন রাত সোয়া ১১টা। এই ৯ ঘন্টায় শুধু ঢাকা শহরের এর রাস্তায় গিয়ে আরেক রাস্তা দিয়ে ফিরে এসেছি।
এই আধুনিক সময়ে ৯ ঘন্টায় আসলে কি কি করা সম্ভব ছিল?
* ঢাকা থেকে বাসে চট্টগ্রাম পৌঁছে ২/৩ ঘন্টা বিশ্রাম নেয়া সম্ভব ছিল।
* ঢাকা থেকে বগুড়ায় গিয়ে আবার ফিরে আসা সম্ভব।
* ঢাকা থেকে বিমানে গেলে ইউরোপের অনেক দেশেই পৌঁছানো সম্ভব।
* ঢাকা থেকে ৯ ঘন্টা সময় নিয়ে বের হলে বিমানে করে কাতারে পৌঁছানোর পরও ৪ ঘন্টা সময় হাতে থাকবে।
যাক, এসব হিসাব দিয়ে লাভ নাই। ভাবছি, আজ অনড় যানজটে পড়া এ্যাম্বুলেন্সগুলো কিভাবে হাসপাতালে পৌঁছেছে!!!
সাইরেনের করুণ চিৎকারের আড়ালে কারো জীবন যায়নি তো!!! •