ভূমধ্যসাগরে ফের নৌকাডুবি বাংলাদেশিও রয়েছেন

ডেস্ক নিউজ.

ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে শরণার্থীবাহী একটি নৌকাডুবির ঘটনায় অনেক মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই নৌকায় বাংলাদেশি শরণার্থীও ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে ডয়চে ভেলেসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। তারা জানিয়েছে, নৌকাটিতে বাংলাদেশি ও মরক্কোর নাগরিকসহ আরো কয়েকটি দেশের শরণার্থী ছিলেন। তাদের বেশিরভাগেরই সলিল সমাধি হয়েছে। তবে নৌকাটিতে ঠিক কতজন বাংলাদেশি বা কোন দেশের কতজন নাগরিক ছিলেন তাৎক্ষণিক সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।

ত্রিপলীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ সিকান্দার আলী জানিয়েছেন, লিবিয়া থেকে যাত্রা করে নৌকাটি তিউনিসিয়া উপকূলের যে প্রান্তে ডুবেছে তার কাছাকাছি শহরের নাম স্ফ্যাক্স। শনিবার দিনভর বাংলাদেশ মিশন হতাহত বাংলাদেশীদের তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তিউনিসিয়ায় সরকারী ছুটি থাকায় অফিসিয়্যালি কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরকে উদৃত করে জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে তিউনিসিয়া সমুদ্র উপকূল থেকে প্রায় ৪৫ নটিক্যাল মাইল দূরে ৬৫ জন শরণার্থীসহ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তিউনিসিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হতাহতদের উদ্ধারে অভিযান চলছে। তারা তিন জনের মৃতদেহ উদ্ধার করতে পেরেছেন। জীবিত উদ্ধার হওয়া এক শরণার্থীর উদ্ধৃতি দিয়ে ইউএনএইচসিআর জানায়, নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের লক্ষ্যে আফ্রিকার সমুদ্র উপকূলবর্তী দেশ লিবিয়ার যুয়ারা এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অভিবাসন প্রত্যাশীদের নিয়ে ওই নৌকা যাত্রা করে। শুক্রবার সকালে অভিবাসন প্রত্যাশীদের দলটি তিউনিসিয়া উপকূলের কাছাকাছি আসলে সমুদ্রের বড় ঢেউয়ের ধাক্কায় তাদের বহনকারী নৌকাটি উল্টে যায়।

এ সময় তিউনিসিয়া উপকূলে মাছ ধরার একটি নৌকার জেলেরা তাৎক্ষণিকভাবে ১৬ জনকে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়। বাকীরা নিখোঁজ। এর বেশীরভাগই মারা গেছেন। এদিকে বিবিসি বলছে, ডুবে যাওয়া নৌকার ৬৫ জনই মারা গেছেন। তিউনিসিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আফ্রিক জানিয়েছে, তারা যে ধারণা পেয়েছে তাতে মৃতের সংখ্যা ৭০ হবে। উল্লেখ্য, নৌকায় করে শরণার্থীরা ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করছিল বলে জানা গেছে। ভূমধ্যসাগরের ভয়ংকর এ পথটিতে প্রায় সময়ই শরণার্থীসহ নৌকাডুবির খবর পাওয়া যায়। তবে জাতিসংঘের তথ্য মতে, গত জানুয়ারি মাসের পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনা। জানুয়ারি মাসের ওই নৌকাডুবির ঘটনায় ১১৭ জন নিঁখোজ হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে লিবিয়া থেকে শরণার্থীরা নৌকাযোগে ইউরোপের দেশগুলোতে প্রবেশের চেষ্টা করে থাকে। ইউএনএইচসিআর-এর হিসেবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল অবধি লিবিয়া থেকে ইউরোপের যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে ১৬৪ জন নিহত হয়েছেন।

সম্পাদনায়-সাইফুল ইসলাম.

শেয়ার করুন