মৌলভীবাজার প্রতিনিধি.
মৌলভীবাজার তিন কলেজ শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে চার অভিযুক্ত গ্রেফতার করেছে মডেল থানা পুলিশ।
বুধবার রাত ১২টার দিকে সদর উপজেলার বর্ষিজোড়া এলাকা থেকে মডেল থানা পুলিশ এক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.রাশেদুল ইসলাম নিজেই এতথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো ওই এলাকার নাভেদ (১৮), সায়েম (২৪), মুন্না (২২) ও লোকমান (২৪)।
প্রসঙ্গত.অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার সোনাপুর বড়বাড়ি শফিকুর রহামান শফিকের বাড়িতে ভাড়াটিয়া মেসে থাকতেন মৌলভীবাজার সরকারী মহিলা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জাহানারা আক্তার জুলি, মৌলভীবাজার সরকারী কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুইটি রাণী দেব ও বিউটি রাণী দেব।
দীর্ঘদিন থেকে কলেজে আসা যাওয়ার পথে পথরোধ করে প্রেম প্রস্তাব, নানা অশ্লীল কথা ও অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তাদের উত্ত্যক্ত করত ওই এলাকার নাভেদ (১৮), সায়েম (২৪), মুন্না (২২) ও লোকমান (২৪)।
গত সোমবার ১৩ মে বিকেলে সুইটি রাণী দেবী কলেজের ইনকোর্স পরীক্ষা দিয়ে বাসায় ফেরার পথে বাসায় ঘরে প্রবেশের পূর্বে উঠানে বসে থাকা নাভেদ আহমদ তার সহযোগী সায়েম, মুন্না ও লোকমান তাকে উদ্দেশ্য করে নানা অশ্লীল কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলতে থাকে।
এসময় সুইটি বাসায় থাকা তার অন্য দুই সহপাঠী জুলি ও বিউটিকে ঘটনাটি বলে। তারা তিন জন ঘর থেকে বের হয়ে তারা প্রতিবাদ জানালে নাভেদ ও তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে জুলি আক্তারের চুলের মুটি ধরে মাটিতে ফেলে তার শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গে হাত বুলিয়ে যৌন নিপিড়ন করে।
এ সময় জুলির সহপাঠী সুইটি ও বিউটি প্রতিবাদ জানালে সায়েম, লোকমান ও মুন্নাসহ আরো ২-৩ জন তাদের দু’জনকে কিল ঘুষি ও লাথি মেরে তাদেও লিলা-ফুলা জখম করে। এরপর তারা ঘটনাটি মুঠোফেনে সুইটি ও বিউটির খালাত ভাই কাশিনাথ আলা উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক সুমন কান্তি দেবকে জানালে তিনি তার কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বাড়ির মালিক ও নাভেদ আহমদের চাচা শফিকুর রহমানের কাছে বিচার প্রার্থী হন। এই খবর শোনে নাভেদ আহমদসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা যৌন হয়রানীর শিকার ওই তিন জন মেয়ে শিক্ষার্থীসহ উপস্থিত সকলকে গালিগালাজ করে হেনেস্তা করে এবং তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে এনিয়ে মামলা মোকদ্দমা ও বাড়াবাড়ি করলে সবাইকে প্রাণে মারার ভয়ভীতি দেয়। এই ঘটনায় আহত সবাইকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
এবিষয়ে শিক্ষক সুমন কান্তি দেবনাথ বাদী হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ মামলা রুজু করেন।
মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, সোমবার রাতে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধীত) ২০০৩ এর ১০/৩০ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং-১৭। আজ তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’