বঙ্গবন্ধু বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ পুরস্কার পাচ্ছেন বড়লেখার বিদ্যুৎ চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক, 
 তিন ক্যাটাগরিতে তিন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন-২০১৯’ পুরস্কারের জন্য চূড়ান্ত মনোনীত করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকায় রয়েছেন মৌলভীবাজারের বড়লেখার পাখিবাড়ি এবং পাখিবাড়ি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি বিদ্যুৎ কান্তি দাস।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মিহির কুমার দে।
এ বছর ক্যাটাগরি (ক) ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, খ্যাতিমান গবেষক, বিজ্ঞানী, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবাদী ব্যক্তি ও গণমাধ্যমকর্মী বা ব্যক্তিত্ব’ পুরস্কার পাচ্ছেন বন্যপ্রাণীর মা-খ্যাত সদ্যপ্রয়াত তানিয়া খান (মরণোত্তর)।
ক্যাটাগরি (খ) ‘বন্যপ্রাণী বিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণা’ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক বেনজির আহমেদ।
এবং ক্যাটাগরি (গ) ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নিবেদিত প্রতিষ্ঠান’ পুরস্কার পাচ্ছেন মৌলভীবাজারের বড়লেখার পাখিবাড়ি এবং পাখিবাড়ি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি বিদ্যুৎ কান্তি দাস।
নীতিমালা অনুযায়ী পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দুই ভরি (২৩.৩২ গ্রাম) ওজনের স্বর্ণের বাজারমূল্যের সমপরিমাণ নগদ অর্থ, ৫০ হাজার টাকার চেক ও সনদপত্র দেওয়া হবে।
বিরল, বিপদাপন্ন, বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ ও বন্যপ্রাণী প্রজাতি সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১০ সালে প্রথম এ জাতীয় পুরস্কার চালু করে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
বিদ্যুৎ কান্তি দাস :
ক্যাটাগরি (গ) ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নিবেদিত প্রতিষ্ঠান’ পুরস্কার পাচ্ছেন মৌলভীবাজারের বড়লেখার হাল্লা গ্রামের পাখিবাড়ি এবং পাখিবাড়ি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ও তালিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস। মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওরের পূর্ব পাশে হাল্লা গ্রামে এই পাখিবাড়ির অবস্থান।
বিগত ২০ বছর ধরে প্রায় এক একর আয়তনের হাল­া পাখিবাড়ির গাছে গাছে পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে উঠেছে। হরেক জাতের পাখিদের মধ্যে উলে­খযোগ্য নিশীবক, সাদাবক, পানকৌড়ি, জলকুড়া, সরালিসহ আরও বিভিন্ন প্রজাতির বাস। কয়েক বছর ধরেই প্রায় হাজার পাঁচেক পাখির বাস এই বাড়িতে।
প্রতিবছর দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে যখন পরিযায়ী পাখি আসে, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে অসংখ্য পাখি হাওরের বিভিন্ন বিল ও জলাশয় থেকে এসে আশ্রয় নেয় বাড়ির গাছগাছালিতে। প্রতি বছর অনেক আর্থিক ক্ষতি হওয়া সত্তে¡ও দেশীয় প্রজাতির নানা ধরনের পাখিসহ পরিযায়ী পাখি সংরক্ষণে কমিটির সদস্যগণ একান্ত সচেষ্ট।
হাল্লা গ্রামে পাখিবাড়ির নিজস্ব জমিতে কমিটির সদস্যরা নানা প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্তে¡ও দেশীয় প্রজাতির নানা ধরনের পাখিসহ পরিযায়ী পাখির এই আবাসস্থল সংরক্ষণে কাজ করে আসছে।
জনসচেতনতা সৃষ্টিতে অবদান হিসেবে দেশীয় ও পরিযায়ী পাখির আবাসস্থল সংরক্ষণে বিভিন্ন সময় এলাকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে এই কমিটি এবং বিদ্যুৎ কান্তি দাস।
শেয়ার করুন