- গত ১১ জুন মঙ্গলবার ২০১৯ তারিখে জাতীয় দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার শেষের পাতায় ‘পেশায় তিনি দিন মজুর সম্পদ কোটি টাকার’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি আমার দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। উক্ত সংবাদে আমাকে জড়িয়ে ঢাহা মিথ্যা,কাল্পনিক,বানোয়াট তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে পরিবেশন করে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও পরিবারের মানহানি করা হয়েছে।
উক্ত ‘সংবাদে প্রতিবেদক উল্লেখ করেন ‘নাম মাসুদ মিয়া ওরফে মাসুদ। পদবী ডে লেবার অর্থাৎ দৈনিক মজুরিতে কাজ করা একজন অস্থায়ী শ্রমিক। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশেনের আওতাধীন শ্রীমঙ্গল মেঘনা ডিপোতে ১৫ বছর ধরে কর্মরত তিনি। অফিসের ফাইল এগিয়ে দেওয়া কিংবা অফিস স্টাফদের চা তৈরী করে দেওয়াই তার মূল কাজ। স্থানীয় এক ঠিকাদারের মাধ্যমে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে মেঘনা ডিপোতে কাজে নিয়োগ পেলেও তিনি কাজ করছেন গাড়িতে তেল মবিল মেপে দেওয়ার ওজনদারের কাজ। আর এই মাপে নয়ছয় করেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ,কোটি পতি বনে যাওয়ার!।- মাসুদের সম্পদের তালিকায় রয়েছে শ্রীমঙ্গল শহরতলীর সবচেয়ে দামি,শ্যামলী আবাসিক এলাকায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুবিশাল তিনতলা অট্টালিকা,যার ছাদে রয়েছে চোখ জুড়ানো মিনি পার্ক’। সংবাদের এই অংশে প্রতিবেদক তার মনগড়া উদ্ভট তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে পরিবেশন করেন। প্রকৃত সত্য হচ্ছে,আমি স্থানীয় হানিফ ব্রার্দাস ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মেঘনা ডিপোতে দৈনিক মজুরী ভিত্তিতে শ্রমিকের কাজ দীর্ঘ ১২ বছর যাবত করে আসছি। আমি কোম্পানীর অফিসের যাবতীয় চিঠি পত্র কুরিয়ার সার্ভিসে নিয়ে যাওয়া ও ব্যাংকিং ডিডি পে অর্ডার কাজ করে থাকি। অথচ সংবাদে প্রতিবেদক উল্লেখ করেন‘দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে মেঘনা ডিপোতে কাজে নিয়োগ পেলেও তিনি কাজ করছেন গাড়িতে তেল মবিল মেপে দেওয়ার ওজনদারের কাজ। আর এই মাপে নয়ছয় করেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ,কোটি পতি বনে যাওয়ার!’। এ অংশটুকু সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রতিবেদক বলছেন,‘আমি নাকি গাড়িতে তেল মবিল মেপে দেওয়ার ওজনদারের কাজ করি। আর এই মাপে নয়ছয় করেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ,কোটি পতি বনে যাওয়ার!’। সংবাদের এই অংশটি বনোয়াট,কাল্পনিক আর মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রকৃত সত্য হচ্ছে,এই ডিপোতে গাড়িতে তেল মবিল মেপে দেওয়ার কোনও কাজই আমার নাই। যেহেতু মেঘনা ডিপোর তেল মেপে দেওয়ার কাজ করেন উনাদের পার্মানেন্ট স্টাফ। আর এই কোম্পানীর মবিল হল সব প্যাকেটজাত লুব্রিকেন্ট। এখানে মেপে দেওয়া কোনও কাজ নেই। অথচ প্রতিবেদক আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন তেল মবিল মেপে নয়ছয় করেই কোটি পতি বনে যাওয়ার। যা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই না।
সংবাদে প্রতিবেদক উল্লেখ করেন,‘মাসুদের সম্পদের তালিকায় রয়েছে শ্রীমঙ্গল শহরতলীর সবচেয়ে দামি,শ্যামলী আবাসিক এলাকায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুবিশাল তিনতলা অট্টালিকা,যার ছাদে রয়েছে চোখ জুড়ানো মিনি পার্ক’। এ প্রসঙ্গে আমার বক্তব্য সুষ্পষ্ট‘আজ থেকে প্রায় ৮ বছর আগে শহরতলীর বিরাহিমপুর এলাকায় আমার নামের তিন শতকের একটি তৈরী বাসা ১১ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে শহরের শ্যামলী আবাসিক এলাকায় ৬ লক্ষ টাকা দিয়ে তিনশতক ১০ পয়েন্ট জমি ক্রয় করি। এর পর বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স শ্রীমঙ্গল অফিসের নামে বাসা মর্গেজ দিয়ে ২০ লক্ষ টাকা লোন নিয়ে তাদের ইঞ্জিনিয়ারের মাধ্যমে আড়াই শতকের মধ্যে তিনতলা বাসা নির্মাণ করি। যা ১৮ বছরের কিস্তিতে নিয়মিত পরিশোধ করা হচ্ছে। আমি থাকি দুই তলায়। আর দুইজন ভাড়াটিয়া থাকেন নীচ তলা আর তিন তলায়। এর মধ্যে তিন তলার ভাড়াটিয়া তার রুমে একটি এসি লাগান। এর ব্যতীত বাসায় আর কোনো রুমে এসি লাগানো নেই। সংবাদে উল্লেখ করা হয়,‘ছাদে রয়েছে চোখ জুড়ানো মিনি পার্ক!’। এটিও সম্পূর্ণ বানোয়াট তথ্য। ছাদে কিছুই নাই। অল্প এই জায়গার মধ্যে কাপড় শুকানোরই সুব্যবস্থা নেই। মিনি পার্ক আসলো আবার কোথা থেকে। প্রতিবেদকই এই অবান্তর তথ্য কোথায় পেলেন তা আমার বোধগম্য নয়।
সংবাদে আরও উল্লেখ করা হয়,‘জানা যায় কয়েক বছর আগেও তার অবস্থা ছিল করুন!। মাসুদ এক সময় সাইকেলে খবরের কাগজ বিক্রি করতেন! তার মা ও স্ত্রী ঝিয়ের কাজ করতেন মানুষের বাড়ী। কিন্তু মেঘনা ডিপোতে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে যোগ দিয়েই কপাল খুলে যায় তার!। বাড়ি গাড়ি ছাড়াও তার নামে বেনামে রয়েছে অঢল সম্পদ!’। সংবাদটির এই অংশ টুকুও সবৈর্ব্য মিথ্যা বানোয়াট কল্পকাহিনী বটে। আমার বাবা মরহুম আবুল হাশেম মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শ্রমিকের সর্দার ছিলেন। আমরা চার ভাইবোন ছিলাম। সবাই লেখা পড়া করতাম। ঘরের কাজই মা সামলাতে পারছিলেন না। আবার অন্যের বাসায় ঝিয়ের কাজ করলেন কিভাবে সেটাই আমার প্রশ্ন। আমিও জীবনে কখনও খবরের কাগজ বিক্রি করিনি। করে থাকলে শ্রীমঙ্গল শহরের ইত্যাদি ও মৌ পত্রিকা বিতান এর মালিকগন জানার কথা। কারণ উনারই তো পেপারের বিক্রি করার এজেন্ট। তাহলে প্রতিবেদক এই মিথ্যাচারের বেসাতি কেনো আমার পরিবারের বিরুদ্ধে করলেন আমার সম্মানহানি করলে তা ভেবে পাচ্ছি না।
প্রতিবেদক সংবাদে উল্লেখ করেন,‘মেঘনা ডিপোতে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে যোগ দিয়েই কপাল খুলে যায় তার!। বাড়ি গাড়ি ছাড়াও তার নামে বেনামে রয়েছে অঢল সম্পদ!’ প্রতিবেদক এই আজগুবি তথ্য কোথায় পেলেন তা আমার জানা নেই। তিনি আমার গাড়ী কোথায় পেলেন নামে বেনামে অঢেল সম্পদ রয়েছে-এই তথ্যাদি কোথায় পেলেন সেটা উনাকেই প্রমাণ করতে হবে। কারণ আমার নামে স্থানীয় সিটি ব্যাংকে গৃহঋণের একটি একাউন্টে হিসাব রয়েছে। এর বাইরে ৫০০ টাকা করে ন্যাশনাল ব্যাংকে আমার নামে ৮ বছর মেয়াদী সঞ্চয়ী হিসাব রয়েছে। এর বাইরে আমার এবং স্ত্রীর নামে কোনও একাউন্ট নেই। যদি থাকে তাহলে সরকারী সংস্থা খুঁজে বের করবে। আর আমার স্ত্রী তার মামার বাসায় থেকে লেখা পড়া করে বড় হয়েছে। আর প্রতিবেদক বললেন আমার স্ত্রী মানুষের বাসায় ঝিয়ের কাজ করতো। এইসব মিথ্যাচার তথ্য দিয়ে সমাজে বিভ্রান্তি ও আমার পরিবারের মানসম্মান হানি করছেন তিনি।
প্রতিবেদক সংবাদে আমার বক্তব্যে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন।‘তিনি সংবাদে উল্লেখ করেন,‘ কোনো রকম চলি ভাই। সব বুঝেনই তো। তিনি বলেন ব্যাংকে আমার ঋণ রয়েছে! এক পর্যায়ে মোটা অংকের টাকা অফার দিয়ে রিপোর্ট না করার জন্য অনুরোধ করেন এবং প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা করতে চান তিনি! সময়ের আলো প্রতিবেদকের সঙ্গে সরাসরি দেখা করেই রিপোর্ট বন্ধ করার জন্য মোট অংকের টাকা দেওয়ার চেষ্ঠা করেন! প্রতিবেদকে টাকা দেওয়ার সেই মুর্হতের ভিডিও চিত্র সময়ের আলো প্রতিনিধির কাছে সংরক্ষিত আছে।” এই বিষয়টিও তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ভিন্নভাবে সংবাদে উপস্থাপন করেছেন। প্রকৃত সত্য হচ্ছে- সময়ের আলো প্রতিনিধি উনি আমাকে নিজ থেকেই ফোন দিয়ে বলেন আমাকে ঢাকা থেকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আমি সহ আরও ৫ জনের বিরদ্ধে নাকি অভিযোগ আছে রিপোর্ট করার জন্য। আমার রিপোর্ট নাকি উনার বিবেচনায় আছে। এর পর উনার সাথে নতুনবাজারের একটি লেবুর দোকানে দেখা করি। উনি আমার বিরুদ্ধে লেখা একটি প্রতিবেদন পড়ে শোনান। এর আগে তিনি মেঘনা ডিপোর ম্যানেজার (অপস) এবং সিলেটের সেলস অফিসার কে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে বলে উনাদেরকে জানান। তখন প্রতিবেদককে আমি বলি আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা। মিথ্যা বলার পরে তিনি আমাকে বলেন আপনারটা আমার বিবেচনায় আছে,ঐসময় আমার অফিসার দু’জনকে তিনি নিজ থেকেই ফোনে জানান মাসুদ ভাই আমার কাছে আসছে,উনি আমার পরিচিত। আপনারা চিন্তা করবেন না। কোনো রিপোর্ট লিখা হবে না। তখন আমি হাত জোর করে বলি আমাকে বিবেচনায় রাখা থেকে সরাই দেন। মিথ্যা রিপোর্ট কইরা আমার ক্ষতি কইরেন না। আমার বাচ্চা কাচ্চা হাইজ্যাক হইয়া যাইবো। তখন প্রতিবেদক বলেন রিপোর্ট লেখলে তো আপনাকে আর ফোন দিতাম না। এই কথাগুলি সে তার পকেটে রাখা মোবাইলফোনে ভিডিও ধারণ করেন। এ কথা বলেই আমি চলে আসি।’ অথচ প্রতিবেদক তার লিখা সংবাদে উল্লেখ করেন‘আমি নাকি রিপোর্ট বন্ধ করার জন্য মোটা অংকের টাকা দেওয়ার চেষ্ঠা করি। সেই মুহুর্তের ভিডিও চিত্র সময়ের আলো প্রতিনিধির কাছে সংরক্ষিত আছে।’ এ বিষয়ে আমার বক্তব্য হচ্ছে- ওই সংরক্ষিত ভিডিওতে যদি আমি রিপোর্ট বন্ধ করার জন্য প্রতিবেদককে টাকা দেয়ার চেষ্ঠা করে থাকি তাহলে এর যে কোন দায়ভার আমি বহন করতে রাজী আছি।নতবা আমি এবং আমার স্ত্রী ও মায়ের উপর ঝিয়ের কাজ করার মতো কথা সংবাদে উল্লেখ করে মানহানির জন্য দেশের প্রচলিত আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হইবো।”
- মো.মাসুদ আহমেদ
শ্যামলী আ/এ