আগামী ১লা জুলাই বার্চমাউন্ট প্লাজাতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বছরের একটি আলোচিত ও জনপ্রিয় আয়োজন “৫ম বাংলাদেশ পথমেলা”। এই আয়োজনটি আলোকিত করতে আসছেন বাংলা সংগীত জগতের দুই নক্ষত্র ব্ল্যাক ডায়মন্ড বেবি নাজনীন ও ভার্সেটাইল আগুন।
গুণী কণ্ঠশিল্পী বেবি নাজনীন শুধু বাংলাদেশেই নয়, তার খ্যাতি উপমহাদেশ ছাড়িয়ে এখন সারা বিশ্বে। সরকারি এবং বেসরকারিভাবে বাংলাদেশের গানে যিনি প্রতিনিধিত্ব করেছেন বিশ্বের অসংখ্য দেশে। অর্জন করেছেন একাধিক জাতীয় পুরস্কারসহ দেশে-বিদেশের বহু সন্মাননা। বাংলাদেশের আধুনিক সংগীতে তিনিই একমাত্র সংগীতশিল্পী যার ৫০টির ও বেশি একক অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে এরই মধ্যে। স্বকীয় সংগীত মহীমায় ‘উপাধী’ অর্জনের বিষয়টিও ঘটেছে কেবল তারই ক্ষেত্রে। যে কারণে ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’ বললেই যে কেউ বলবেন- বেবী নাজনীনের কথা। ‘উত্তর বঙ্গের দোয়েল’ নামেও তাকে জানেন সঙ্গীতপ্রিয় এবং সংগীতবোদ্ধারা।
‘এলো মেলো বাতাসে উড়িয়েছি শাড়ীর আচঁল…
ঐ রংধনু থেকে কিছু কিছু রং এনে দাওনা…
কাল সারারাত ছিলো স্বপনেরও রাত…
দুচোখে ঘুম আসেনা…
আমার ঘুম ভাঙ্গাইয়া গেলো রে মরার কোকিলে…
মানুষ নিষ্পাপ পৃথিবীতে আসে…
লোকে বলে আমার ঘরে নাকি চাঁদ উঠেছে…
কই গেলা নিঠুর বন্ধুরে সারাবাংলা খুঁজি তোমারে…
ও বন্ধু তুমি কই কই রে এ প্রাণও বুঝি যায় রে…’
কালজয়ী এমন অনেক গানই তাকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী করে তুলেছে সঙ্গীতের ভূবনে। খান আসিফুর রহমান আগুন যিনি আগুন হিসেবে পরিচিত, তিনি একাধারে একজন কণ্ঠশিল্পী ও অভিনেতা। কেয়ামত থেকে কেয়ামত চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার মাধ্যমে তার সঙ্গীতজীবন শুরু হয়। পরবর্তীতে তিনি চলচ্চিত্র ও নাটকে অভিনয় করেন। ‘এখনো অনেক রাত’ চলচ্চিত্রে গানে কণ্ঠ দেওয়ার জন্য তিনি বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন।
আগুনের সঙ্গীত জীবন শুরু হয় ১৯৮৮ সালে ‘সাডেন’ ব্যান্ডের ভোকাল হিসেবে। সাডেন ব্যান্ড ও আগুনের একক অ্যালবাম ওগো প্রেয়সীর গানগুলোর মধ্যে “বৈশাখী মেলা”, “উত্তাল সমুদ্র” ও “ভালোবাসি” শ্রোতাপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি ১৯৯২ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত কেয়ামত থেকে কেয়ামত চলচ্চিত্রের গান গাওয়ার মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রের গানে অভিষেক হয়। ১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রটিতে তার গাওয়া গানগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি সত্য সাহা, আনোয়ার পারভেজ, আলাউদ্দিন আলী, আলী হোসেন, আবু তাহের, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলদের মতো প্রথিতযশা সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালকদের সুরকৃত গানে কণ্ঠ দেন।
১৯৯৭ সালে তিনি এখনো অনেক রাত চলচ্চিত্রে “ও আমার জন্মভূমি” গানের জন্য বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন। চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার পাশাপাশি তিনি ১৫টি অ্যালবামেও কণ্ঠ দিয়েছেন।
গুণী এই দুই সংগীত তারকাকে নিয়ে জমজমাট আয়োজনের অপেক্ষায় এখন ৫ম বাংলাদেশ পথমেলা। এ বিষয়ে ৫ম বাংলাদেশ পথমেলার কনভেনর তানভীর কোহিনূরের সাথে কথা বললে তিনি জানান, “বাংলাদেশ পথমেলার কনভেনর হিসেবে একটি প্রতিশ্রুতি আপনাদের দিতে পারি, আমাদের গান পাগল বাংলাদেশিদের জন্য পথমেলাতে গানের কমতি হবেনা মোটেও। খোলা আকাশের নিচে আপনাদের প্রিয় শিল্পীদের জনপ্রিয় সব গান শুনাতে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যয়বহুল লাইনারী স্পিকার সিস্টেম আর বিশাল স্টেইজ এবারের মেলার ব্যয়বহুল বাজেটের সিংহভাগেই দখল করেছে। অনেক দিন মনে রাখার মতো একটি অনুষ্ঠান আপনাদের উপহার দিতেই আমাদের এই প্রয়াস। ১লা জুলাই, বার্চমাউন্ট প্লাজাতে আমার প্রিয় কমিউনিটির সাবার সাথে দেখা হবে। তা-ই আশা করছি। সবার জন্য ভালবাসা।”
টরন্টোবাসীদের ভালোবাসায় বাংলাদেশ পথমেলা পাঁচ বছরে পা দিয়েছে এবং সবার আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছে। সবার উপস্থিতি একান্তভাবে কাম্য।