»এক্সক্লুসিভ»রেল দুর্ঘটনায় নিহত মনোয়ারার সন্তানদের আহাজারিতে মন্ত্রীদ্বয় বাকরূদ্
রেল দুর্ঘটনায় নিহত মনোয়ারার সন্তানদের আহাজারিতে মন্ত্রীদ্বয় বাকরূদ্
জালালাবাদ বার্তা ডট কম ।
প্রকাশিতকাল:
শাকির আহমদ, কুলাউড়া ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচালে রেল দুর্ঘটনায় নিহত মনোয়ারা পারভীনের স্বজনদের সান্তনা দিতে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং বন ও পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন আহমদ তাঁদের বাসায় গেলে সন্তানদের আহাজারিতে কয়েক মিনিট বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন মন্ত্রীদ্বয়। এসময় নিহতের দুই মেয়ে ইশরাত আরা মুন্নী ও রুকশানা পারভীন আর্তচিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘এমন দুর্ঘটনায় আর কোনো সন্তান যেন মা হারা না হয়, আমরা আমাদের মায়ের এমন মৃত্যু চাইনি’। এসময় মন্ত্রীদ্বয় কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে কোন কথা বলেননি। এর কিছুক্ষণ পর রেলমন্ত্রী এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ুমন্ত্রী সদ্য মা হারা সন্তানদের সান্তনা দেন এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে গভীর শোক ও সমবেদনা জানান। পরে সহযোগিতাস্বরূপ ১ লক্ষ টাকা নিহত মনোয়ারা পারভীনের মেয়ের হাতে তুলে দেন। দুর্ঘটনায় বাকি নিহতদের এক লক্ষ ও আহতদের ১০ হাজার টাকা সহযোগিতা প্রদানের কথা জানান রেলমন্ত্রী। এদিকে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ুমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন আহমদ বুধবার ২৬ জুন) দুপুর পৌনে একটার দিকে সিলেট থেকে কুলাউড়ার বরমচালে সংঘটিত উপবন ট্রেন দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শণে আসেন। সেখানে তাঁরা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন এবং সংশ্লিষ্টদের দুর্ঘটনার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ জানতে চান। পরে তাঁরা ঘটনাস্থলের পাশে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সভায় যোগ দেন। সেখানে বরমচালবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে বরমচাল রেল স্টেশনে দুইটি আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রা বিরতি হবে বলে ঘোষণা দেন। সভায় বক্তব্য রাখেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, বন, পরিবেশ ও জলবায়ুমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন আহমদ, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি এম এম শাহীন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমানসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, সাবেক সাংসদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, রেলওয়ে কর্মকর্তা, উপজেলা ও থানা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ রেলপথ ও সেতুর জন্য দুর্ঘটনা হয়েছে কি না সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন – রেল, সড়ক, নৌ ও বিমানে সব জায়গায় ঝুঁকি রয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ তদন্তে দুটি কমিটি কাজ করছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে দুর্ঘটনার মূল কারণ জানা যাবে। তিনি আরও বলেন – জরাজীর্ণ সেতুগুলো দ্রুত সংস্কার করা হবে। তাছাড়া সিলেট-আখাউড়া রেলপথ ডুয়েলগেজ করার জন্য মন্ত্রিপরিষদে বরাদ্দ পেয়েছে সেটা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে এ রেলপথটি আধুনিক ও নিরাপদ হবে। দুর্ঘটনায় রেল কর্মকর্তাদের কারো গাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরে তাঁরা কুলাউড়ায় নিহত মনোয়ারা পারভীনের বাসায় যান। সেখান থেকে জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে অবস্থান করেন এবং বিকেল সোয়া ৪টায় কুলাউড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। এর আগে একইদিন সকাল ১০টার দিকে মন্ত্রীদ্বয় সিলেট ওসমানী হাসপাতাল ও কলেজে ভর্তি ওই দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে যান।