উপবন ট্রেন দূর্ঘটনারপর থেকে ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা কম আতঙ্ক কাটছে না !

  • সাইফুল ইসলাম সিলেট থেকে ফিরে–
    সিলেট ঢাকা ও চট্রগ্রাম রেলপথে বরমচাল উপবন ট্রেন দূর্ঘটনারপর থেকে সব ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা কমেছে।
    ট্রেনযাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক কাটছে না। রেলভ্রমণ এখন ঝুঁকিপূর্ণ রেললাইন ও ব্রিজর কারণেই অনিরাপদ হয়ে উঠছে।
    সরেজমিনে শুক্রবার সকাল ১১টায় আন্তনগর পারাবত ট্রেনযোগে কুলাউড়ার বরমচাল উপবন ট্রেন দূর্ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথে কথা হয় পারাবত ট্রেনের যাত্রীদের সাথে।
    তারা জানান, দূর্ঘটনার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। তবে আতঙ্ক কাটছে না। পারাবত ট্রেনের চ বগির এটেনডেন্স মো.মামুনআহমদ বলেন, আগেরমতো যাত্রী নেই। যাত্রীদের মধ্য বিরাজ করছে।
    তিনি আরো বলেন, দূর্ঘটনার পরদিন যাত্রী একেবারে কম ছিল। অনেক টিকেট করে যায়নি।
  • ট্রেনের যাত্রী সুমন মিয়া জানালেন, আতঙ্ক আছি। তারপরও ট্রেন চড়ে গন্তব্য যেতে হচ্ছে। কুলাউড়ার বরমচাল বড়ছড়া ব্রিজের ওই দুর্ঘটনার পর থেকে আতঙ্ক বেড়েছে যাত্রীদের।
    অনেকেই চরম ঝুঁকিপূর্ণ এই রেল লাইনকে মৃত্যুফাঁদ বলেও অভিমত তাদের।
    কারণ নড়বড়ে ওই রেল লাইন কারণেই একের পর এক দূর্ঘটনা। দীর্ঘদিন থেকে ত্রুটিপূর্ণ এই লাইনটি সংস্কার বা পুনঃনির্মাণ না হওযায় ক্ষোভ সিলেট অঞ্চলের রেল যাত্রীদের।
    সিলেট আখাউড়া রেলপথের ১৭৯ কিলোমিটার মধ্যে অধিকাংশই চরম ঝুঁকিপূর্ণ। ওই পথের রেল লাইন, ফিশপ্লেট, ক্লিপ, হুক, স্লিপার, নাট, বল্টু, সিগন্যালসহ সহযোগী যন্ত্রাংশ ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ইঞ্জিন, জরাজীর্ণ বগি, ঝুঁকিপূর্ণ ও মান্ধাতা আমলের স্টেশন আর শিডিউল বিপর্যয় যেন প্রতিনিয়ত।
    এদিকে,বৃটিশ আমলের নির্মিত ব্রিজ, কালভার্ট আর রেলপথ ও লাইন কোনো মেরামত হয়নি। তাই দিন দিন ঝুঁকি থেকে চরম ঝুঁকির দিকে যাচ্ছে এই অঞ্চলের রেলপথ।
    অপরদিকে,কুলাউড়ার বরমচাল বড়ছড়া ব্রিজের উপর দুর্ঘটনায় কবলিত বগি থেকেই পচা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ওই বগির সঙ্গে রেল সড়কের পশ্চিম পাশে পড়ে থাকা আরো ২টি বগি ও রাস্তার পূর্ব পাশে দাঁড়ানো ১টি বগি এখনো ওখানে ফেলে রাখা হয়েছে।
    দুর্ঘটনার পরদিন ট্রেন লাইন সচল করতে ওই চারটি বগি দুর্ঘটনাস্থলে ফেলে রেখেই লাইন মেরামতের পর সচল করা হয়।
    বরমচাল দূর্ঘটনারস্থলের আশ-পাশের কতুব আলী,ফরিদ মিয়াসহ গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ব্রিজের নিচে পড়ে থাকা বগি থেকে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছাড়াচ্ছে।
    ব্রিজের নিচে পড়ে থাকা ওই বগির যাত্রীরাই দুর্ঘটনার সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। আর ওই বগিরই যাত্রী নিহত হয়েছেন আর আহত হয়েছেন শতাধিক। ওই বগি থেকে দুর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ওই স্থানের খোঁজখবর নিচ্ছেন।
    বড়ছড়ার ব্রিজ দিয়ে পাহাড়ি ঢল নামে। নাব্যহ্রাসের কারণে ছড়াটির পানি নিষ্কাশন আগের মত হয় না। দুর্ঘটনার পর ট্রেনের বগি ব্রিজের নিচে পড়ে থাকায় পানি আটকে আছে।এতে শুক্রবার সিলেটগামী পাহাড়িকা ট্রেন দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে।
    মাইজগাও এলাকার বাসিন্দা ট্রেনে বাউল গায়ক সবুজ মিয়া বলেন, ট্রেনে যাত্রী নাই। দূর্ঘটনার আগে দিনেরবেলা উপবনে ট্রেনে গান গাইছি আর রাতে বেলা দূর্ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে যাত্রী কমে গেছে।
    পারাবত ট্রেনের যাত্রী কুলাউড়ার নায়মা ফেরদৌস মিমি সিলেট এমসি কলেজের মার্ষ্টাস পড়–য়া তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে জানালেন তার ভয়ের কথা। তিনি বলেন,ভয় নিয়ে ট্রেনে যেতে হচ্ছে। কারণ কুলাউড়া হতে বিকল্প রাস্তা থাকলেও তাতে দূভোর্গ একটু বেশি,তাই ট্রেনে নিরাপদ ভ্রমণ হিসেবে চললাম।’
শেয়ার করুন