এনামুল হক টিপু, হ্যামিল্টন, কানাডাঃ
৭ই জুলাই ২০১৯ বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব হ্যামিল্টনের বার্ষিক বনভোজন ২০১৯ হয়ে গেলো চার্লস ডিলেএ পার্ক এরিয়ায়। অপরুপ সৌন্দর্য্যের লীলাভুমি, সবুজ লতা পাতায় ঘেরা, ছায়ানিভিড় গাছ পালা, চতুরদিকে শান্ত জলরাশি বিদ্যমান চার্লস ডিলেএ পার্ক এরিয়ায় আয়োজিত এবারের বনভোজনে সকাল থেকে স্বপরিবারে সবাই আসতে শুরু করেন। হ্যামিল্টন ছাড়াও বার্লিংটন, ওকভিল, সেন্টক্যাথেরিন, টরন্টো থেকে বিপুল সংখ্যক লোকের সমাগম হয়। সংগঠনের কর্মকর্তাগন আগত সবাইকে সমছা, ডিম ও চা দিয়ে স্বাগত জানান। বনভোজনের আহবায়ক তায়েদ হোসেন চৌধুরী ও সদস্য সচিব শহিদ আলম চৌধুরী আগত সবাইকে চা ও পানি বিতরন করতে দেখা যায়। সেই সাথে লিটন, মিটু, মাসুদ ও টিপু বেনার লাগানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। সাঞ্জের আরিফ পিয়াল ব্যস্ত হয়ে উঠেন সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে।বকুল, সামছু, মজুমদার ও খলিল ভাই খাসীর মাংশ রান্নাকরতে শুরু করে দিয়েছেন। আর সাধারন সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেন ব্যস্ত ছিলেন সবার কাজ ঠিক মত হচ্ছে কিনা তদারকিতে।
সভাপতি ইফতেখার জাইগিরদার ইপু ও সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল আলী আগত অতিথিদের স্বাগত জানাচ্ছেন ও কোশলাদি জিজ্ঞেস করছেন। বেলা বাড়ার সাথে শুরু হয় ঝাল মুড়ীর পালা – বকুল, তাহমিদ, আসমা আপা, মজুমদার ও তায়েদ ভাইয়ের তৈরী মজাদার ঝাল মুড়ী সবাইকে আলাদা আনন্দ দান করে। দুপুর আড়াইটায় যোহরের নামাজের পর কবির, খলিল, স্মৃতি, মাসুদ, মোসাদ্দেক ভাই ও টিপু ব্যস্ত হয়ে উঠে খেলাধুলা নিয়ে লাউড স্পিকার হাতে বিভিন্ন খেলার ঘোষনা ও পরিচালনা করতে। সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এলেন আরো অনেক ভাই ও ভাবীরা। শুরু হল শিশুদের বিস্কুট দৌড়, কিশোর–কিশোরী, তরুন–তরুনীদের মারবেল দৌড় প্রতিযোগীতা। তাদের পর শুরু হয় মহিলাদের ব্যতিক্রম ধর্মী খেলা। ফুটবল দিয়ে পেনাল্টি কিকে গোল। শুরুতে দুটি করে শট পাবেন সবাই। অংশ গ্রহনকারী মহিলারা কমরে আঁচল বেধে লেগে গেলেন গোল করতে। গোলকিপার ছাড়া পোষ্ট, প্রথম শটে গোল। কয়েক রাউন্ডের পর পরই নির্ধারিত হয় ১ম, ২য় ও ৩য় বিজয়ী। তার পর শুরু হয় মহিলাদের প্রিয় খেলা মিউজিক্যাল পিলো। সবাই সারিবদ্ধ হয়ে বসে পরলেন গাছের ছায়ায়। মিউজিক থামলেই বাদ পড়েন কেউ না কেউ। তারপর মধ্যাহ্ন ভোজের পালা। পুরুষ ও মহিলারা আলাদা লাইনে সারিবদ্ধ হয়ে খাবার সংগ্রহ করে যে যার গ্রুপ মত বসে পরেন। মধ্যাহ্ন ভোজের পর শুরু হয় গানের পালা। শুরুতে সাঞ্জের আরিফ পিয়াল এর গান সবাইকে মুগ্ধ করে।গাইলেন মিটু ভাই, টরন্টো থেকে আগত শিল্পীরাও। এর ফাক দিয়ে বনভোজনের বিশেষ আকর্ষন রাফেল ড্র এর টিকেট বিক্রিতে মেতে উঠেন দায়িত্ব পাপ্ত ব্যক্তিরা। বিশেষ করে তরুন কিশোরীরা অতি উৎসাহ নিয়ে টিকেট বিক্রি করছে এবং তাদের কাছ থেকে ভালই ফল পাওয়া গেছে। লেপ্টপ, আইপেড, মাউন্টেন বাইক সহ অনেকগুলি আকর্ষনীয় পুরস্কার ছিলো এবারের রাফেল ড্রতে। সঙ্গীত পরিবেশনের সময় শহিদ ও মাসুদ ভাইকে বিশেষ আকর্ষন জাতীয় ফল কাঠাল ভেংগে এবং রঞ্জু ভাইক তরমুজ কেটে সবাইকে পরিবেশন করছে, আর সাথে ছিল বরাবরের মত মিস্টি গোলাব জামন। শেষ পর্যায়ে বনভোজন কমিটির আহবায়ক ও সদস্য সচিব সবার উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। যারা এই বিশাল আয়োজনে সাহায্য ও সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারপর শুরু হয় বিভিন্ন খেলায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরন। রাফেল ড্র এর কার্যক্রম শুরু হয় সব শেষে, পরিচালনা করেন মোসাদ্দেক হোসেন। বরাবরের মতই যারা রাফেল ড্রতে গিফট দিয়েছে তারা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তোলে দেন।সাধারন সম্পাদক বনভোজনের মুল স্পন্সর রিয়েল্টর তাহমিদ আহমেদকে পরিচয় করিয়ে দেন ও বক্তব্য রাখেন।
সব শেষে সভাপতি ইফতেখার জাইগিরদার ইপু বলেন আপনাদের সবার অভুতপুর্ব অংশগ্রহনে সামগ্রিক ভাবে সফল করে তোলার জন্যে সবাইকে আমাদের প্রান ঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আপনাদের সহযোগিতা ও সাহায্য ছাড়া এতো বৃহৎ অনুষ্ঠান এককভাবে আয়োজন সম্ভব হতোনা। আমাদের বনভোজনকে যারা বিভিন্ন ভাবে শ্রম, মেধা, ও আর্থিক অনুদান ও স্পন্সর দিয়ে সফল ও উপভোগ্য করে তুলেছেন তাদের সবার প্রতি অফুরন্ত শুভেচ্ছা ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তিনি সবার প্রতি শুভেচ্ছা, শুভকামনা জানিয়ে বনভোজন ২০১৯ এর সমাপ্তি ঘোষনা করেন। চমৎকার আবহাওয়ায় প্রাকৃতিক মনোরন পরিবেশ, এমন আনন্দঘনসুন্দর পরিপাটি বনভোজন অংশ গ্রহনকারী সকলের প্রশংসায় ধন্য হয়।