চাঁদাবাজির অভিযোগে ওয়ান ইলিভেনের নায়ক জেনারেল মইনের শ্যালক রেজা আহমদ বেনজিরসহ ১৬জন আসামীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি রায়ের অপেক্ষায়

স্টাফ রিপোর্টার॥  চাঁদাবাজির অভিযোগে ওয়ান ইলিভেনের নায়ক জেনারেল মইনের শ্যালক রেজা আহমদ বেনজিরসহ ১৬জন আসামীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি রায়ের অপেক্ষায় আছে।

দায়েরকৃত ২ কোটি টাকার চাঁদাবাজির মামলায় বিজ্ঞ আদালতের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ বাহাউদ্দিন কাজী ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের নির্দেশনা প্রদান করেন। শুনানি হয়ে বর্তমানে রায়ের অপেক্ষা করছে ন বাদীরা।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, জেনারেল মইনের শাসন ২০০৭-২০০৮ সালে তার স্ত্রীর বড় ভাই মৌলভীবাজারস্থ শাহ মোস্তফা রোডের রেজা আহমদ বেনজির অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেন। ২০০৭ সালের ১৯ অক্টোবর রাত অনুমান ৩ ঘটিকার সময় বেনজির আহমদ রেজা উল্লেখিত মামলার আসামীদের নিয়ে শহরের বেরিরপারস্থ মামলার বাদীর বড় ভাই যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি, সাবেক ব্রিটিশ কাউন্সিলর ও সিআইপি এম এ রহিমের নির্মাণাধিন এম.আর টাওয়ার-২ এর জায়গা দখল করেন। এসময় তারা ১৭টি দোকানের ব্যাগ সিমেন্ট, রড লুট করে নিয়ে যান।

তাৎক্ষণিক ভাবে বিষয়টি মৌলভীবাজার মডেল থানাকে জানালে প্রধান আসামী জেনারেল মইনের শ্যালক থাকায় ক্ষমতার দাপটে কোন মামলা নেয়নি পুলিশ।

পরবর্তীতে ২০০৮ সালের ৩০ মে অনুমান রাত ৮টায় মামলার আসামীরা সিআইপ এম এ রহিমের মালিকানাধীন সবুজবাগস্থ এম আর টাওয়ার-১ এর সামনের রাস্তা থেকে তার ভাই মামলার বাদী মুজিবুর রহমানকে অপহরণ করে রেজা আহমদ বেনজীর এর শাহ মোস্তফা রোডস্থ বাসায় একটি রুমের মধ্যে আটকিয়ে রাখে। কিছু সময় পর আসামীরা ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। অন্যতায় বাদীকে প্রাণে হত্যার হুমকি দেয়। হত্যার ভয়ে রফাদফার পর বাদী প্রাণ রক্ষারতে ২ কোটি চাঁদা দিতে রাজি হন। পরে রেজা আহমদ বেনজির নেতৃত্বে মুজিবুর রহমানকে সিলেট এইচ.এস.বি.সি ব্যাংক নিয়ে গেলে তিনি সেখান থেকে ৫০ লক্ষ টাকা তুলে তাদের হাতে দেন। পরবর্তীতে মৌলভীবাজার এসে প্রাইম ব্যাংক মৌলভীবাজার শাখা থেকে পৃথক পৃথক চেকে বিভিন্ন জনের নামে আরও ১ কোটি ৪৭, লক্ষ ৮১ হাজার ২৫০ টাকা দেয়া হয়। সর্বমোট রেজা আহমদ বেনজিরকে ১ কোটি ৯৭ লক্ষ ৮১ হাজার ২শত ৫০টাকা চাঁদা আদায় করেন।

ওয়ান ইলিভেনের তত্বাবধায়ক সরকারের পর ২০০৮ সালে নির্বাচনে গনতান্ত্রিক সরকার ক্ষতায় আসলে মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে একই বিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০০৯ সালের ১৫ অক্টোবর রেজা আহমদ বেনজিরকে প্রধান আসামী সহ মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে আসামী করে ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩৬৪/৩৮৬/৩৭৯/৩৮০/৫০৬/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৬০/২০০৯। মৌলভীবাজার মডেল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহ্ হারুন-অর রশিদ ১৪/০২/২০১০ সালে এজহার ভুক্ত আসামীদের অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

বিজ্ঞ আদালতের বিচারক মোঃ বাহাউদ্দিন কাজী বিগত ২৭/০৪/১৭ তারিখে ১ নং আসামী বেনজির আহমদ রেজা ২। ফয়ছল আহমদ ৩। জাহাঙ্গীর আহমদ ৪। আব্দুর রউফ ৫। আব্দু বারী ৬। ফরিদ আহমদ ৭। সোহেল আহমদ ৮। কাওছার আহমদ ৯। আকলিমুন্নেছা ১০। ফয়জুন্নাহার ১১। জামাল আহমদ ১২। তুহিন আহমদ ১৩। তোফায়েল আহমদ ১৪। নুফিল আহমদ ১৫। সামছুননাহার ১৬। রয়জুন্নাহারের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের  ১৪৩/ ৪৪৭/ ৪৪৮/ ৩২৩/ ৩৬৫/ ৩৮৬/ ৩৭৯/ ৩৮০/ ৫০৬/ ৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়।

অন্যদিকে আসামী পক্ষের আইনজীবি তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিক্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূল বলে আদালতে দাবি করলে আদালত এটা না মঞ্জুর করে।

এ বিষয়ে মামলার বাদী মুজিবুর রহমান এর ভাই সাবেক বৃট্রিশ কাউন্সিলর, শিক্ষানুরাগী, শিল্পপতি এম এ রহিম (সিআইপি) বলেন, “দীর্ঘ ১২ বছর পর হলেও এই মামলা রায়ের অপেক্ষায় আছে। আমরা আশাবাদী আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব মামলাটি নিষ্পক্তি করে আসামীদেরকে সাজা ও চাঁদার টাকা উদ্ধার করা হবে”।

৬ বারের এই সিআইপি আরোও বলেন, “আমরা যারা বিদেশ থেকে অর্থ এনে দেশে বিনিয়োগ করি। তারা নিরাপত্তা চায়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী চাঁদাবাজীকে ০ ট্রলারেন্সে নামিয়ে এনেছেন। আমার প্রবাসীরা শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশে কাজ করতে চাই। আমি আশাবাদি এই রায় ঐতিহাসিক রায় হবে এবং নির্যাতিতরা এই মামলায় বিজয়ী হবে”।

শেয়ার করুন