নোমান মাহফুজ, গোলাপগঞ্জ:
গোলাপপগঞ্জ বিয়ানীবাজারবাসীর প্রাণের দাবি শিকপুরে কুশিয়ারা নদীর ওপর একটি ব্রিজ। গোলাপগঞ্জ বিয়ানীবাজার আমুড়া শিকপুর সড়কে কুশিয়ারা নদীর ওপর দীর্ঘদিন ধরে ফেরী চলাচল বন্ধ থাকায় নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে স্থানীয় মানুষ! তাই তাদের দাবি ছিল একটি ফেরির।
স্থানীয় মানুষের দাবি পূরণে বিগত ২০১১ সালে তৎকালিন এলজি আরডি মন্ত্রী মরহুম সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গোলাপগঞ্জে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঘোষনা দিয়েছিলেন এ সরকারের আমলেই বহরগ্রাম-শিকপুর ফেরীঘাটে একটি বেইলী ব্রীজ নির্মাণ করা হবে।
মহান জাতীয় সংসদের চলতি (১১ সেপ্টেম্বর ১৯) অধিবেশনে ব্রিজ নির্মানের এই দাবিটি জোরালোভাবে উত্থাপন করা হয়েছে। সিলেট-৬ গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গুরুত্বের সাথে সংসদে দাবিটি তোলেন। এ সময় তিনি যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের নিকট দ্রুত ব্রিজ নির্মানের দাবি জানান। ফেরী অথবা সেতুর দাবিতে বিভিন্নসময় মানব বন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
ফেরি ও ব্রিজের অভাবে বর্তমানে কয়েক লক্ষ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কুশিয়ারা নদীর খেয়া পারাপার হচ্ছে। ফেরী চলাচল বন্ধ থাকায় প্রতিনিয়ত তাদের এ চরম ভোগান্তির শিকার হয়ে আসতে হচ্ছে। সবচেয়ে দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও শিক্ষার্থীদের।
দীর্ঘদিন থেকে শুনা যাচ্ছে, কুশিয়ারা নদীর উপর ২শ ৫০ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যয় হবে ৫০ কোটি টাকা। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এর ব্যায়ভার হাতে নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র থেকে জানা যায়। তবে তার কোন হদীস নেই। ২০০৫ সাল থেকে স্থানীয়রা দাবি উত্থাপন করলে সেতুর বদলে ফেরী বরাদ্দ করা হয়। প্রায় ১১ বছর ফেরী চলাচলের পর ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে হঠাৎ করে ফেরী বন্ধ হয়ে যায়। এর পূর্বে ২০১১ সালে গোলাপগঞ্জ এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকে বৃত্তি বিতরনী অনুষ্ঠানে তৎকালিন এলজি আরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঘোষনা দিয়েছিলেন এ সরকারের আমলেই বহরগ্রাম-শিকপুর ফেরীঘাটে একটি বেইলী ব্রীজ নির্মাণ করা হবে। স্থানীয়রা আশায় বুক বেঁধে দিন পার করতে করতে ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে ফেরী বন্ধ চিরতরে হওয়ায় অধিক শোকে পাথর হয়ে যান। এর দু’বছর পর ২০১৮ সালের ঐ আগস্ট মাসে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জাইকার প্রতিনিধি দল দিয়ে সেতু নির্মাণ হচ্ছে বলে ঘোষনা দিলে এলাকা জোড়ে আনন্দের বন্যায় ভাসতে থাকে।
এ ব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, বহরগ্রাম-শিকপুর সেতু এলাকাবাসীর অনেক পুরনো দাবি। বিয়ানীবাজার থেকে শেওলা সেতু দিয়ে জেলা শহর সিলেট যাতায়াত করলে ১৯ এবং চন্দরপুর সেতু দিয়ে ১০ কিলোমিটার পথ বেশি অতিক্রম করতে হয়। এখানে সেতু নির্মাণ করা হলে মানুষের সময়ও বাচবে, অর্থেরও সাশ্রয় হবে।
এদিকে মহান জাতীয় সংসদে ব্রীজ নির্মানের এই দাবিটি জোরালোভাবে উত্থাপন করায় সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদকে গোলাপগঞ্জ উপজেলার সর্বস্থরের মানুষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন অনেকে।