-
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় স্কুলগামী ছাত্রীদের ইভটিজিং করার সময় প্রতিবাদ করায় আকমল হোসেন রুমেল (৪৫) নামক এক ব্যক্তিকে ব্রীজ থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফিলে দেয় দুই বখাটেরা। এতে ওই ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
-
বখাটেরা হল, উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের মুকুন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা রমজান মিয়া ছিলে বেলাল হোসেন রানা (২২) ও একই ইউনিয়নের একিদত্তপুর গ্রামের আজির উদ্দিনের ছেলে জয়নাল আবেদীন রনি (২০)।
-
রানা উপজেলার লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজ ও রনি শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। আহত রুমেল উপজেলার সদর ইউনিয়নের মীরের গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।
-
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ ঘটনায় আহত রুমেলের চাচাতো ভাই দেলোয়ার হোসেন বাদি হয়ে ওই দুইজনের নামোল্লেখ করে কুলাউড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ বখাটে জয়নাল আবেদীন রনিকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে।
-
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো আকমল হোসেন রুমেল স্থানীয় একিদত্তপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়–য়া তাঁর মেয়ে সাবিয়া হোসেন (৭)-কে আনতে যান। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে রুমেল ও তাঁর চাচাতো ভাই আনকার হোসেন তাদের মেয়েদের স্কুল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসার পথে স্থানীয় মীরেরগ্রাম ও মুকুন্দপুর এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে বাড়ুয়া ছড়া ব্রীজের উপর দেখতে পান বখাটে বেলাল হোসেন রানা ও জয়নাল আবেদীন রনিকে। এসময় তারা ব্রীজের উপরে দাঁড়িয়ে স্কুলগামী ছাত্রীদের ইভটিজিং করছিলো। আকমল হোসেন রুমেল ও আনকার হোসেন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদ করলে বখাটে রানা ও রনি তাদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তাঁদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আকমল হোসেনের সাথে ধস্তাধস্তিতে জড়ায় বখাটেরা। পরিস্থিতি বুঝে উঠার আগেই বখাটেরা রুমেলকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্রীজের উপর থেকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় ২৫ফুট নিচে ফেলে দেয়। এতে গুরুতর আহত আকমলের চিৎকার শুনে তাকে বাঁচাতে গেলে তাঁর ভাতিজা কুলাউড়া সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রাহাত হোসেন রাজের ওপরও হামলা চালায় রনি ও রানা। পরে স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। আকমল হোসেনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রুমেলের কোমরের হাড় ভেঙ্গে গেছে এবং বাম হাতের কব্জিতে জখম হয়।
-
শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কবির মিয়া জানান, রনি স্কুলের অনিয়মিত ছাত্র। ঘটনার দিন সে স্কুলে আসেনি। স্কুলের পাশের একটি দোকানে সে বসেছিল। স্কুলের এ্যাসেম্বলীর সময় তাকে বাইরে বসতে দেখে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় বই-খাতা নিয়ে আসেনি। এরপর আমি বিদ্যালয়ে চলে আসি। পরে খবর পাই সে ব্রীজের উপর রুমেল নামক ব্যক্তির উপর তার সহযোগীদের নিয়ে হামলা চালায়। এর আগে প্রায়শঃ সে স্কুল ছাত্রীদের সাথে খারাপ আচরন করতো।
-
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য, পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক বলেন, আহত আকমল হোসেনের কোমরে আঘাতজনিত কারণে দুই পা কিছুটা অসার মনে হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, আরেক আহত কলেজ ছাত্র রাজের ডান হাতের কাধের জয়েন্টের হাড় সরে গেছে।
-
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইয়ারদৌস হাসান বলেন, এ ঘটনায় আকমল হোসেনের ভাই দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে দুজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ব্রীজ থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফিলে দেয় দুই বখাটে
শেয়ার করুন